দীর্ঘায়িত বর্ষা আর বারবার বৃষ্টির সঙ্গে বাড়ছে ডেঙ্গু জ্বরের প্রকোপ। আর এখন তো বাংলাদেশে সারা বছরই ডেঙ্গু থাকে। তবে এ সময়কে বলে একেবারে ডেঙ্গুর ভরা মৌসুম। প্রতিদিনই হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছেন ডেঙ্গু রোগী। মারাও যাচ্ছেন। বাংলাদেশে ডেঙ্গু যেহেতু একটি ভয়াবহ রূপ নিয়েছে, তাই চিকিৎসা নিয়েও জনমনে নানা রকম বিভ্রান্তি আছে। চিকিৎসকদের পরামর্শের বাইরে গিয়েও অনেকে নানা বিশ্বাস থেকে ভুলভাল টোটকা চিকিৎসা নিয়ে থাকেন। এখানে ডেঙ্গুর চিকিৎসা–সংক্রান্ত চারটি তথ্য তুলে ধরা হলো—
অনেক রোগীই শিরায় প্লাটিলেট নেওয়ার জন্য অস্থির হয়ে পড়েন। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ফারাহ দোলা বলেন, ‘এটা অনেকটাই মানসিক তৃপ্তি। কারণ, ডেঙ্গু রোগে রক্ত বা প্লাটিলেট দিলে তেমন কোনো উপকার পাওয়া যায় না। মারাত্মক রক্তক্ষরণ হলে কখনো কখনো রক্ত দেওয়ার দরকার পড়লেও প্লাটিলেটের তেমন কোনো কার্যকর ভূমিকা পাওয়া যায়নি। অযাচিত প্লাটিলেট সঞ্চালনায় বরং জটিলতা বাড়তে পারে।’
অনেকে গায়ের বদলে পায়ে মাখার কথাও বলে থাকেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এ ধরনের অনেক ভিডিও চোখে পড়ে। তাই অনেকের মনেই প্রশ্ন, নারকেল তেল কি মশা তাড়াতে উপকারী? এ বিষয়ে এখনো কোনো গবেষণা হয়েছে বলে শোনা যায় না। এটারও কোনো বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই।
ডেঙ্গু ভাইরাসের চারটি ভেরিয়েন্ট আছে। এর মধ্যে একটিতে একবার আক্রান্ত হওয়ার পর শরীরে সেটির অ্যান্টিবডি তৈরি হলেও অন্যগুলোয় আক্রান্ত হওয়ার শঙ্কা থেকেই যায়। একই ব্যক্তির একাধিকবার ডেঙ্গু হওয়ার প্রমাণ আছে; বরং দ্বিতীয়বার আক্রান্ত হলে রোগী বেশি ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে থাকেন।
অনেকের ধারণা, ডেঙ্গু যে মশার কামড়ে হয়, সেই অ্যাডিস মশা শুধু নোংরা পরিবেশে জন্মায়। এটাও ঠিক না। ঝকঝকে পরিচ্ছন্ন পানিতেও হতে পারে অ্যাডিস মশা। ঘরের মধ্যে ফুলদানির পানিতেও অ্যাডিস মশা ডিম পাড়তে পারে। তাই এটা যে শুধু নোংরা জায়গা হবে, তেমনটা নয়। এমনটা হলে সিঙ্গাপুরের মতো ঝকঝকে দেশেও ডেঙ্গু চোখে পড়ত না।