‘এত চেষ্টা করছি, কিন্তু ওজন কমছে না। আমাকে দিয়ে আসলে হবে না’—নানা চেষ্টা সত্ত্বেও ওজন না কমাতে পেরে এমন হতাশায় নিমজ্জিত হন অনেকে। মনে রাখবেন, প্রতিটি বিষয়ের পেছনেই বিজ্ঞানভিত্তিক কারণ থাকে। জানা যাক কেন এমন হয়।
আমাদের দেহে বিপাকক্রিয়ার মাধ্যমে ক্যালরি পোড়ে, যার ফলে ওজন কমে। সবার দেহের বিপাকহার সমান নয়। জিনগত কারণেই কারও কারও বিপাকহার কম থাকে। এটি আপনার হাতে নেই। আবার বয়সের সঙ্গে সঙ্গেও বিপাকহার কমে। জীবনের প্রতি দশকে ২ থেকে ৮ শতাংশ বিপাকহার কমে। বয়স নামের সংখ্যাটিকেও আপনি চাইলেই বদলাতে পারবেন না। এ ছাড়া আরও কিছু কারণে বিপাকহার কম হতে পারে:
যাঁদের শরীরে চর্বির মাত্রা বেশি থাকে, তাঁদের বিপাকহার কম থাকে।
যাঁদের শরীরে সুগঠিত পেশি কম থাকে, তাঁদের বিপাকহারও কম থাকে।
একেবারেই কম খেতে থাকলে বিপাকহার কমে যায়।
তবে চাইলে আপনি বিপাকহার বাড়াতে পারেন। বিপাকহার বাড়াতে শরীরচর্চার গতি বাড়াতে পারেন। এমনভাবে ব্যায়াম করতে পারেন, যাতে প্রচুর ঘাম হয়। ভারোত্তোলনের ব্যায়ামও করতে পারেন।
ঘুম কম হলে ওজন কমানো মুশকিল। কম ঘুমালেও বিপাকহার কমে। তা ছাড়া খাবারদাবার নিয়ন্ত্রণ করাও মুশকিল হয়ে পড়ে। আর শরীর নিস্তেজ বোধ করার ফলে ব্যায়ামও করা হয়ে ওঠে না ঠিকঠাক।
ঘুমের সময় বিপাকহার কমে যায়। তাই খাওয়ার পরপরই ঘুমিয়ে গেলে আপনি ওজন কমাতে আশানুরূপ সাফল্য পাবেন না। ঘুমের অন্তত তিন ঘণ্টা আগেই খাওয়াদাওয়ার পালা সেরে ফেলা প্রয়োজন।
সকালে না খেয়ে থাকলে কিন্তু কোনো লাভ নেই। বরং এতে সারা দিনে অস্বাস্থ্যকর, উচ্চ ক্যালরিসম্পন্ন খাবার খাওয়ার প্রবণতা বাড়ে। শেষমেশ ওজনটা বাড়ে।
কিছু রোগের কারণে ওজন কমাতে মুশকিলে পড়তে পারেন:
থাইরয়েডের রোগ।
পলিসিস্টিক ওভারি।
অন্যান্য হরমোনের সমস্যা
স্লিপ অ্যাপনিয়া (যে রোগে ঘুমের মধ্যে শ্বাস বাধাগ্রস্ত হয়)।
মানসিক চাপে থাকলে অতিরিক্ত ক্যালরিসম্পন্ন খাবার খেয়ে ফেলতে পারেন আপনি।
কিছু ওষুধের কারণেও কিন্তু ওজন কমানোতে সমস্যা হতে পারে। জন্মনিয়ন্ত্রণ বড়ি এসবের মধ্যে অন্যতম। এ ছাড়া খিঁচুনি, উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস, অ্যালার্জি এবং মানসিক সমস্যায় ব্যবহৃত কিছু ওষুধ সেবনের কারণেও ওজন বাড়ার প্রবণতা সৃষ্টি হতে পারে।
ফলে ওজন বাড়তে পারে। তাই ওজন কমাতে গিয়ে সমস্যায় পড়লে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
সূত্র: ওয়েবএমডি