ছোটবেলা থেকেই অনেক শিশুর মধ্যে গড়ে ওঠে মিথ্যা বলার স্বভাব। কিন্তু নিষ্পাপ শিশুর মনে কীভাবে গড়ে ওঠে এই স্বভাব? এ থেকে পরিত্রাণের উপায়ই–বা কী?
ভয় থেকে
শিশুদের মধ্যে মিথ্যা বলার প্রবণতা শুরু হয় মা-বাবার প্রতি ভয় থেকে। অতিরিক্ত শাসন বা বকাঝকা করলে অনেক সময়ই নিজেকে বাঁচানোর জন্য শিশুরা সত্য আড়াল করা শুরু করে।
মা–বাবার কাছ থেকে
শিশুরা অনুকরণপ্রিয়। আশেপাশের সবার কাছ থেকে নিয়মিতই খুঁটিনাটি বিষয় শিখতে থাকে। যে কারণে মা–বাবাকে থাকতে হবে সদা সতর্ক, ভুলেও শিশুর সামনে মিথ্যা বলা যাবে না। খারাপ কাজ করা থেকে বিরত থাকতে হবে। মা–বাবাই যদি মিথ্যা বলেন, শিশু তো তাহলে শিখবেই।
আনন্দ থেকে
অনেক শিশুই মিথ্যা বলার মধ্যে আনন্দ খুঁজে পায়। অভিভাবকদের কাছ থেকে লুকিয়ে কোনো কাজ করার অনুভূতি তাদের অভিভূত করে।
নির্ভরতার জায়গা তৈরি করুন
বাসার ভেতরে ও বাইরে এমন একটি পরিবেশ তৈরি করুন, সন্তান যেখানে নির্ভয়ে নিজের মনের ভাব প্রকাশ করতে পারে। ভুলত্রুটি নিয়েই জীবন। ভুল করে ক্ষমা চাওয়া ভয়ের কোনো বিষয় না। বরং ভুল থেকেই মানুষ শিক্ষা লাভ করে। শিশুর বিশ্বাস অর্জনের চেষ্টা করুন। এতে করে শিশু নিজে থেকেই মিথ্যা বলা কমিয়ে দেবে।
যোগাযোগ বাড়ান
ছোটবেলা থেকেই শিশুকে নিজের আবেগ এবং অনুভূতি ব্যক্ত করা শেখান। নৈতিক মূল্যবোধ, পরস্পরের প্রতি সম্মান—এই বিষয়গুলো শিশুর মনে ছোটবেলাতেই গেঁথে দিন। এতে করে শিশুরা নিজেদের ভুল যেমন সহজে বুঝতে পারবে, সেই ভুল থেকে উত্তরণের পথও নিজেরাই বের করে নিতে পারবে।
নিজেই হোন আদর্শ
শিশুরা প্রতিনিয়ত আশেপাশের মানুষজনকে পর্যবেক্ষণ করে, আর সেটাই শেখে। তাই শিশুর কাছে নিজেকে একজন আদর্শ মানুষ হিসেবে গড়ে তোলার চেষ্টা করুন। আপনাকে দেখে শিশুরাও আদর্শ মানুষ হতে চাইবে।
শিশুদের সঙ্গে যোগাযোগের সবচেয়ে বড় অন্তরায় ধৈর্য্যের অভাব। একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ যত দ্রুত সবটা বুঝে নিতে পারে, শিশুদের পক্ষে সেটা সম্ভব হয় না। যে কারণে শিশুদের সঙ্গে কথা বলার সময় হতে হবে ধৈর্য্যশীল। ক্ষুদ্র থেকে ক্ষুদ্রতর বিষয়ে তাকে বোঝাতে হলেও সময় নিন, ধৈর্য্য ধরে শুরু থেকে শেষপর্যন্ত তাকে বোঝান।
অনেকসময় শিশুদের সঙ্গে সঠিক যোগাযোগের অভাব থেকেও শিশুর মনে ভয়ের সঞ্চার হতে পারে। সেখান থেকে তৈরি হতে পারে মিথ্যা বলার প্রবণতা।
শিশুরা কেন মিথ্যা কথা বলে তাঁর কারণ খুঁজে বের করা বেশ জটিল একটি বিষয়। কিন্তু সন্তানের পিতা-মাতা হিসেবে এই জটিল থেকে জটিলতর বিষয়কেও খুব সাবধানতার সঙ্গে সামাল দিতে হয়। এই জটিল বিষয়কে সহজ করে দিতে পারে শিশুর সঙ্গে মা-বাবার বন্ধুত্বপূর্ণ সহজ–সুন্দর সম্পর্ক।
সূত্র: হিন্দুস্তান টাইমস