সকালের নাশতা হিসেবে ডিমসেদ্ধ, ডিমপোচ বা ডিমভাজি বেশ জনপ্রিয়। ভাতের সঙ্গেও তরকারি হিসেবে খাওয়া হয় ডিম। সন্ধ্যায় বাহারি নাশতার আয়োজনেও নানানভাবে যোগ হয় ডিম। রোজকার পুষ্টির চাহিদা মেটাতে ডিম দারুণ এক খাবার। বাজারে লাল আর সাদা দুই রঙের ডিম পাওয়া যায়। মুরগির ডিম ছাড়াও বাজারে পাওয়া যায় হাঁস এবং কোয়েল পাখির ডিম। এগুলোর মধ্যে কোনটি বেশি ভালো, পুষ্টিমানে একটি অন্যটির বিকল্প হবে কি না, এটা নিয়ে অনেকেই দ্বিধান্বিত থাকেন।
রাজধানীর গভর্নমেন্ট কলেজ অব অ্যাপ্লায়েড হিউম্যান সায়েন্সের খাদ্য ও পুষ্টিবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক শম্পা শারমিন খান জানালেন, লাল ডিম বা সাদা ডিমের পুষ্টিগুণে কোনো তফাত নেই। কোন প্রজাতির পাখির ডিম খাওয়া হচ্ছে, সেটির সঙ্গেও পুষ্টি উপাদানের আলাদা কোনো সম্পর্ক নেই। তবে আকারভেদে পুষ্টি উপাদানের পরিমাণের তারতম্য হয়।
বিষয়টাকে আরেকটু বিস্তারিত ব্যাখ্যা করলেন এই বিশেষজ্ঞ। ডিম থেকে যে স্নেহ পদার্থ পাওয়া যায়, সেটি মানবদেহের জন্য উপকারী। আর প্রাণিজ আমিষেরও অনবদ্য এক উৎস ডিম। প্রয়োজনীয় অন্যান্য পুষ্টি উপাদানও ডিম থেকে পাই আমরা। তবে যে প্রজাতির পাখির ডিমই গ্রহণ করা হোক না কেন, তা থেকে এই পুষ্টি উপাদানের সব কটিই পাওয়া যাবে। অবশ্য হাঁসের ডিম আকারে একটু বড় বলে তা থেকে পুষ্টি উপাদান পাওয়া যাবে একটু বেশি। তবে আপনি চাইলে হাঁস কিংবা মুরগি যেকোনোটির ডিমই রোজ খেতে পারেন।
আবার কোয়েল পাখির ডিম আকারে বেশ ছোট। তাই তাতে পুষ্টি উপাদানগুলোর পরিমাণও অনেকটাই কম। মুরগির একটি ডিম থেকে যে পুষ্টি উপাদান পাওয়া যায়, তা কেবল কোয়েল পাখির ডিম থেকে পেতে হলে আপনাকে কোয়েল পাখির ডিম খেতে হবে দুটি। অর্থাৎ, কোয়েল পাখির ডিম খেলেও আপনি পুষ্টি উপাদান পাচ্ছেন সবই, কেবল পরিমাণটা একটু বাড়িয়ে নিতে হচ্ছে।
ডিম থেকে বাড়তি পুষ্টি পাওয়ার আলাদা ব্যবস্থাও রয়েছে। খামারের পাখিদের ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড এবং ওমেগা সিক্স ফ্যাটি অ্যাসিডসমৃদ্ধ খাবার খাওয়ানো হলে তাদের ডিম থেকে এসব প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদান পাওয়া যায়। তাই যেসব ডিমের প্যাকেটে ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড, ওমেগা সিক্স ফ্যাটি অ্যাসিডের কথা উল্লেখ করা থাকে, সেগুলো বেছে নিতে পারেন। এগুলো মানবদেহের জন্য অত্যাবশ্যকীয় ফ্যাটি অ্যাসিড।