ওজন কমাতে গিয়ে আমরা প্রথম যে ভুলটি করি তা হলো, পর্যাপ্ত পরিমাণে পুষ্টিকর খাবার না খাওয়া। মেদ কমানোর জন্য আমাদের দৈনন্দিন খাবার গ্রহণের পরিমাণ কমিয়ে ফেলতে হয়। তাই কম খেলেও খাবারটা হওয়া চাই যথেষ্ট পুষ্টিকর। পাতে যেন সবজিজাতীয় খাবার বেশি বেশি থাকে, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।
কোনো কাজ করতে নেমে দ্রুত সেটির ফলাফল আশা করা বোকামি। একইভাবে ওজন কমানোর সময় দ্রুতই দৃশ্যমান পরিবর্তন দেখতে চাওয়া আরও বড় বোকামি। সময় নিন এবং অপেক্ষা করুন। দ্রুত না হলেও ধীরে ধীরে আপনার শরীরে দৃশ্যমান পরিবর্তন দেখতে পাবেন।
একই ধরনের ব্যায়াম নিয়মিত করতে করতে আমরা অভ্যস্ত হয়ে পড়ি। ফলে কোনো নতুন ব্যায়াম শেখা আমাদের পক্ষে কষ্টকর হয়ে ওঠে। কিন্তু শরীরের মেদ দ্রুত কমাতে একই ধরনের ব্যায়াম বারবার না করে বিভিন্ন ধরনের ব্যায়াম নিয়মিত করা গুরুত্বপূর্ণ।
শরীরের ওজন কমানোর জন্য খাদ্যতালিকায় আমিষের পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ করতে হয়। কিন্তু অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায়, আমিষ একেবারেই কম খাওয়ায় স্বাস্থ্যহানি ঘটে। আবার আমিষজাতীয় খাবার বেশি খেলেও হিতে বিপরীত হয়। তাই প্রতিদিন কতটুকু আমিষজাতীয় খাবার খাওয়া দরকার আর কতটুকু নয়—এই দুইয়ের মধ্যে সমন্বয় করে ফেলুন।
অতিরিক্ত কোনো কিছুই ভালো নয়। নিয়মিত শরীরচর্চা যেমন উপকারী, তেমন অতিরিক্ত ব্যায়াম শরীরের জন্য ক্ষতিকর। তাই পরিমিত ব্যায়াম করতে হবে। টানা শরীরচর্চা না করে মধ্যে পর্যাপ্ত বিরতি নিন। এতে আপনার মাংসপেশি সুস্থ থাকবে।
পরিবারের সদস্য, বন্ধুবান্ধব কিংবা সহকর্মীর কাছ থেকে যেকোনো উপলক্ষে খাবারের আমন্ত্রণ পাওয়া আনন্দের বিষয়। কিন্তু ওজন কমানোর সময় আমরা বেশির ভাগই এসব আমন্ত্রণে অংশ নিই না। অনেকে মনে করি, বাইরের খাবার খেলেই শরীরের ওজন বেড়ে যাবে। আদতে তা ভুল। তবে এ ক্ষেত্রেও পরিমিতিবোধ জরুরি।
ওজন কমানোর সময় আমাদের নিয়মিত ব্যায়াম করতে হয়। নিয়মিত ব্যায়ামের ফলে শরীর সহজেই ক্লান্ত হয়ে পড়ে। তাই এ সময় প্রয়োজন পর্যাপ্ত ঘুম। কিন্তু পর্যাপ্ত না ঘুমিয়ে আমরা শরীরকে আরও বিপদের মুখে ঠেলে দিই।
আমাদের আরও একটি ক্ষতিকর বদভ্যাস হলো, পেটে খিদে নিয়ে থাকা। ওজন কমানোর সময় বেশির ভাগ মানুষ খিদে লাগলেও না খেয়ে থাকেন। এটা শরীরের জন্য ভীষণ ক্ষতিকর। তাই কাজের ফাঁকে খিদে পেলে হালকা খাবার খেয়ে নেওয়াই ভালো।
আমরা প্রত্যেকেই আলাদা। এমনকি যমজ ভাই-বোনের মধ্যেও শারীরিক অবস্থার পুরোপুরি মিল পাওয়া যায় না। তাই একজনের খাদ্যাভ্যাস অন্যজনের সঙ্গে মিলবে না, এটাই স্বাভাবিক। যেহেতু আমাদের খাদ্যাভ্যাস আলাদা, তাই অন্যকে অনুসরণ করে নিজের ওজন কমাতে যাওয়া বোকামি। অন্য কারোর কথা না শুনে শুরুতেই একজন চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
ট্রেড মিলে ৩০ মিনিট টানা দৌড়ালেন, ফলে খিদে লেগে গেল। সঙ্গে সঙ্গে কিছু খেয়ে নিলেন, এমনটা আমরা প্রায় অনেকেই করি। আদতে শরীরচর্চাকে আমরা খাবার খাওয়ার অজুহাত হিসেবে দাঁড় করাই। এটাও ভুল ধারণা। এতে হিতে বিপরীত হয়।
সূত্র: রিডার্স ডাইজেস্ট