ভালো থাকুন

নবজাতককে বুকের দুধ যেভাবে খাওয়াবেন 

মা আরামদায়ক অবস্থায় পিঠে হেলান দিয়ে বসবেন অথবা একদিকে কাত হয়ে শুয়ে দুধ খাওয়াতে পারেন।

শিশুর জন্মের প্রথম দু–তিন দিন বুকে দুধ কম আসতে পারে। শিশুর স্বাস্থ্য সুরক্ষায় জন্মের পর প্রথম দুই থেকে তিন দিন মায়ের বুকে ঘন আঠালো হলদে রঙের শালদুধ তৈরি হয়। পরিমাণে অল্প হলেও এটি অতি উচ্চ মাত্রার পুষ্টিগুণ ও রোগ প্রতিরোধক্ষমতাসম্পন্ন এবং শিশুর পরিপূর্ণ প্রয়োজন মেটাতে সক্ষম। বলা হয়ে থাকে, জন্মের প্রথম কয়েক দিন প্রতিবার দুধ খাওয়ানোর সময় পাঁচ থেকে সাত মিলি শালদুধই শিশুর জন্য যথেষ্ট।

করণীয়

দুধের প্রবাহ শুরুর জন্য শিশুকে বারবার মায়ের বুকে দিতে হবে। শিশুকে জন্মের পরপরই মায়ের বুকে দিতে হবে। বুকে লাগানোর পর নবজাতক মাকে স্পর্শে, গন্ধে চিনবে ও দুধ টানবে। এতে তাড়াতাড়ি প্রবাহ বাড়বে এবং দুধ জমে মা ব্যথা পাবেন না।

মা ও শিশুর পুষ্টি নিশ্চিত করতে মাকে সব ধরনের পুষ্টিকর খাবার দেওয়া জরুরি। সত্যিকার অর্থে, প্রত্যেক মায়ের শিশুকে পেট ভরে বুকের দুধ পান করানোর ক্ষমতা আছে, এমনকি যমজ হলেও।

কীভাবে বুঝবেন দুধ পাচ্ছে

কান্নাকাটি করা সত্ত্বেও যদি শিশু দিনে ছয় থেকে আটবার মোটামুটি পরিমাণে প্রস্রাব করে, দিনে এক-দুবার পায়খানা করে, হাসিখুশি থাকে এবং ওজন প্রতিদিন প্রতি কেজিতে কমপক্ষে ১০ গ্রাম করে বাড়তে থাকে, তাহলে ধরে নিতে হবে, শিশু যথেষ্ট পরিমাণে দুধ পাচ্ছে।

উল্লেখ্য, পেটে ব্যথা হলে, প্রস্রাব-পায়খানা করার আগে ঘুম পেলে বা ভাঙলে অথবা নোংরা অবস্থায় পড়ে থাকলে শিশু কান্নাকাটি করে। মনোযোগ আকর্ষণের জন্যও নবজাতক কাঁদে।

বুকের দুধ খাওয়ানোর নিয়ম

● মা আরামদায়ক অবস্থায় পিঠে হেলান দিয়ে বসবেন অথবা একদিকে কাত হয়ে শুয়ে দুধ খাওয়াতে পারেন।

● মা যদি বসে খাওয়ান, তাহলে শিশুকে পরিপূর্ণভাবে ধরে রাখতে হবে, কোলের ওপর ফেলে শুধু মাথাটি হাতের তালুতে নিয়ে খাওয়াবেন না। মায়ের পেটের সঙ্গে শিশুর পেটের ত্বক স্পর্শ করবে। মা শিশুর দিকে ঝুঁকে যাবেন না; বরং শিশুকে নিজের বুকের কাছে তুলে ধরবেন।

● মায়ের স্তনের বোঁটাসহ কালো অংশটি যেন পূর্ণভাবে শিশুর মুখের ভেতর ঢুকে যায়, সেটি নিশ্চিত করবেন। এ সময় শিশুর থুতনি ও নাক মায়ের দুধের সঙ্গে লেগে থাকবে।

●দুধ খাওয়ানোর সময় একটি স্তনে অন্তত ১০ মিনিট ধরবেন। দুধ খাওয়াতে বসার আগে বেশি করে পানি খাবেন। চিন্তামুক্ত থাকার চেষ্টা করবেন।

অধ্যাপক শাহীন আক্তার, নবজাতক, শিশু ও কিশোর রোগবিশেষজ্ঞ, আলোক হাসপাতাল লিমিটেড, মিরপুর, ঢাকা