ইনহেলার ঠিকভাবে ব্যবহার করছেন তো

ইনহেলার ব্যবহারের সঠিক নিয়ম মেনে চললে শ্বাসনালির এসব রোগ খুব ভালোভাবে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব
ছবি: প্রথম আলো

ইনহেলার শ্বাসনালির রোগে একটি প্রচলিত চিকিৎসা। অ্যাজমা, সিওপিডির মতো ফুসফুসের সমস্যায় এটি বেশ কার্যকর। ইনহেলারের মাধ্যমে সাধারণত সালবুটামল, স্টেরয়েডজাতীয় ওষুধ দেওয়া হয়, যা শ্বাসনালির সমস্যার প্রতিকার ও প্রতিরোধে বেশ কার্যকর। কিন্তু দেখা যায়, অনেক রোগী ইনহেলার নিতে চান না বা নিতে রাজি হলেও বেশি দিন ব্যবহার করেন না। এর অন্যতম কারণ হলো ইনহেলার ব্যবহারের সঠিক নিয়ম না জানা এবং এ নিয়ে অস্বস্তিতে ভোগা।

ইনহেলার ব্যবহারের নিয়ম

একজন চিকিৎসক যখন কোনো রোগীকে ইনহেলার প্রেসক্রাইব করেন, তখন অবশ্যই তাঁকে ইনহেলার ব্যবহারের নিয়ম শিখিয়ে দেওয়া উচিত। অনেক রোগী ইনহেলার ব্যবহারের কয়েক দিন পর ফলোআপে অভিযোগ করেন যে এটা ব্যবহার করে কোনো উন্নতি হয়নি। তখন তাঁকে ইনহেলার কীভাবে নিয়েছেন, দেখাতে বললে যেটা দেখায়, তাতে বোঝা যায় ঠিক নিয়মটি তিনি জানেন না।

নিচের পদ্ধতিগুলো ধাপে ধাপে মনে রাখলে ইনহেলার সহজে ব্যবহার করা যায়।

১. নেওয়ার আগে ইনহেলারটিকে একটু ঝাঁকিয়ে নিতে হবে।

২. একটি বড় শ্বাস নিয়ে শ্বাসটি ছেড়ে দিতে হবে।

৩. ইনহেলারের মাউথপিসের কভারটি খুলে মাউথপিসটি মুখের সঙ্গে লাগাতে হবে।

৪. ওপরে ক্যানিস্টারে চাপ দিলে গ্যাসটি মুখের ভেতর চলে আসবে। শুধু একবার চাপ দিতে হবে, বারবার চাপ দেওয়ার প্রয়োজন নেই।

সঠিক ইনহেলার প্রয়োগের কয়েকটি পদ্ধতি

৫. ভেতরের গ্যাসটি নিয়ে একটি লম্বা শ্বাস ভেতরের দিকে নিতে হবে।

৬. শ্বাস নিয়ে ৫ থেকে ১০ সেকেন্ড ধরে রাখতে হবে।

৭. এরপর শ্বাস ছেড়ে দিতে হবে।

৮. কিছুক্ষণ পরে একই নিয়মে আরেক চাপ নিতে হবে।

ইনহেলার নেওয়ার কিছুক্ষণ পরে কুলি করা ভালো, বিশেষ করে স্টেরয়েড ইনহেলারের ক্ষেত্রে অবশ্যই করতে হবে।

স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় নিতে না পারলে স্পেসার যন্ত্রের মাধ্যমেও খুব সহজে ইনহেলার নেওয়া যায়। এ ছাড়া ক্যাপসুল ওষুধ ক্রাশ করে সেটার গ্যাস শ্বাস দিয়ে নেওয়ারও ব্যবস্থা আছে। রোগীর সামগ্রিক অবস্থা বিবেচনা করে চিকিৎসক ইনহেলার পদ্ধতি নির্বাচন করবেন।

ইনহেলার ব্যবহারের সঠিক নিয়ম মেনে চললে শ্বাসনালির এসব রোগ খুব ভালোভাবে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। বিশেষ করে শীতকালে যেহেতু এ সমস্যাগুলোর প্রকোপ বেড়ে যায়, তাই এ ব্যাপারে সতর্ক থাকা উচিত।

ডা. সাইফ হোসেন খান, মেডিসিন কনসালট্যান্ট, পপুলার ডায়াগনস্টিক সেন্টার, ধানমন্ডি।