শিশুকে বুকের দুধ খাওয়ান

শুধু মায়ের বুকের দুধই শিশুকে নানা ধরনের রোগজীবাণুর আক্রমণ থেকে সুরক্ষা দিতে পারে। টানা ছয় মাস বুকের দুধ খাওয়ালে শিশুর রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বেশি হয়। তাই এ বছর মাতৃদুগ্ধ সপ্তাহের (১ আগস্ট থেকে সাত দিন) প্রতিপাদ্য হচ্ছে কর্মজীবী মায়েরা কীভাবে বুকের দুধ খাওয়াবেন। বেশির ভাগ কর্মক্ষেত্রে দিবাযত্ন কেন্দ্র বা ব্রেস্ট ফিডিং সেন্টার নেই।

বুকের দুধ খাওয়ানোর নিয়ম

শিশুকে বুকের দুধ খাওয়ানোর দিনগুলোতে মাকে বেশি বেশি খেতে হবে। বিশেষ করে তরল খাবার, প্রোটিন, ক্যালসিয়ামযুক্ত খাবার, রসাল ফল, ডাল, ডিম (প্রতিদিন), লাউ, শসা ইত্যাদি। সম্ভব হলে প্রতিদিন আধা লিটার দুধ খান।

  • প্রতিবার শিশুকে দুধ খাওয়ানোর আগে মাকে অন্তত দুই গ্লাস পানি খেতে হবে।

  • প্রসবের পরপর যে হলুদ রঙের দুধ আসে, তা শালদুধ। এটি অবশ্যই শিশুকে খাওয়াতে হবে। এতে রোগ প্রতিরোধ উপাদান ও ভিটামিন
    ‘এ’ থাকে।

  • শিশুকে একই বিছানায় রাখতে হবে।

  • কর্মক্ষেত্রে যাওয়ার আগে কিছুক্ষণ শিশুকে দুধ দিতে হবে। এরপর পাম্পের সাহায্যে বের করে রেখে যেতে হবে। এই দুধ সাধারণত ঘরের তাপমাত্রায় ৬ ঘণ্টা ও হিমায়িত অবস্থায় ২৪ ঘণ্টা পর্যন্ত ভালো থাকে। হিমায়িত দুধ একটি পাত্রে গরম পানির ওপর রেখে তাপমাত্রা কিছুটা স্বাভাবিক করে শিশুকে খাওয়াতে হবে। বুকের দুধ কোনোভাবেই জ্বাল দেওয়া বা ফোটানো যাবে না।

বুকের দুধের উপকারিতা

মায়ের দুধ শিশুকে বদহজম ও অন্ত্রের সমস্যা থেকে রক্ষা করে। এই দুধ তাড়াতাড়ি হজম হয় এবং এতে কৌষ্ঠকাঠিন্য হয় না।

  • শিশুর নাক, গলার ঝিল্লির ওপর আস্তরণ তৈরি করে, যা হাঁপানি ও কানের সংক্রমণ থেকে রক্ষা করে।

  • সমীক্ষায় দেখা গেছে, যে শিশুরা জন্ম থেকে মায়ের দুধ খায়, ভবিষ্যতে তাদের মোটা হওয়ার সম্ভাবনা কম।

  • শৈশবে লিউকেমিয়া হওয়া থেকে মায়ের দুধ রক্ষা করে। পরিণত বয়সে ডায়াবেটিস টাইপ-১ ও উচ্চ রক্তচাপ হওয়ার আশঙ্কাও কম থাকে।

  • মায়ের দুধে শিশুর বুদ্ধি বাড়ে। এতে এমন সব ফ্যাটি অ্যাসিড থাকে, যা শিশুর মগজের বৃদ্ধি ঘটাতে সহায়তা করে।

  • শিশুকে বুকের দুধ খাওয়ালে পরবর্তী সময়ে মায়ের স্তনে ও ডিম্বাশয়ে ক্যানসারের ঝুঁকি কমে।

  • বুকের দুধ খেলে শিশুর ডায়রিয়া হয় না বললেই চলে।

হাসিনা আকতার, ক্লিনিক্যাল নিউট্রিশনিস্ট,ল্যাবএইড লিমিটেড (ডায়াগনস্টিক), চট্টগ্রাম