খাওয়ার পর হাঁটাহাঁটির এসব নিয়ম মানছেন তো?

শরীরের রক্ত সঞ্চালন ঠিক রাখতে হাঁটাহাঁটির মতো ভালো ব্যায়াম কমই আছে। কিন্তু হাঁটারও আছে কিছু নিয়মকানুন, আছে নির্দিষ্ট সময়। সকালের মৃদু রোদে হাঁটার উপকার ভরদুপুরের প্রখর রোদে হেঁটে পাওয়া যাবে না। গবেষণায় দেখা গেছে, খাওয়ার পর সামান্য হাঁটাহাঁটির বেশ কিছু উপকার আছে। বিশেষ করে যাঁদের উচ্চরক্তচাপ বা হজমে সমস্যা আছে, তাদের জন্য বেশ নিরাপদ ও উপকারী। তবে পুরোটাই নির্ভর করে সময় ও হাঁটার ধরনের ওপর। তাই প্রথমে খাওয়ার পরের হাঁটাহাঁটির উপকারিতাগুলো জেনে নিন, পরে থাকছে সতর্কতা।

হজমে সাহায্য করে

খাওয়ার পরপর সামান্য হাঁটাচলা হজমে বেশ সাহায্য করে। হাঁটাচলার কারণে শরীরের রক্ত সঞ্চালনের মাত্রা বেড়ে যায়, ফলে খাবার দ্রুত হজম হয়। এ ছাড়া খাওয়ার পর বসে থাকলে কিংবা ঘুমালে অনেক ক্ষেত্রেই পাকস্থলির গ্যাস্ট্রিক রস ধীরগতিতে কাজ করে। ফলে হজমও খুব ধীরগতিতে হয়।

নিয়মিত হাঁটাহাঁটি করার সবচেয়ে বড় সুবিধা হলো, শরীরের রক্ত সঞ্চালন ঠিক থাকে

হৃদ্‌রোগের ঝুঁকি কমায়

নিয়মিত হাঁটাহাঁটি করার সবচেয়ে বড় সুবিধা হলো, শরীরের রক্ত সঞ্চালন ঠিক থাকে। খাবারের পর বিশ্রাম নিলে শরীরের রক্ত সঞ্চালনের গতি কমে যায়। তখন সামান্য হাঁটাহাঁটি শরীরের রক্তপ্রবাহের গতি ঠিক রাখতে সহায়তা করে। যা হৃদয়কে সুস্থ রাখে।

রক্তে চিনির মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে

খাওয়ার ঠিক পরপর ডায়াবেটিক রোগীদের রক্তে শর্করার মাত্রা কিছুটা বৃদ্ধি পায়। সামান্য হাঁটাহাঁটি এই মাত্রা নিয়ন্ত্রণে আনতে সাহায্য করে। তবে ডায়াবেটিক রোগীদের এই ব্যায়াম করার আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।

তাৎক্ষণিক ঘুম কাটাতে সহায়তা করে

ভারী খাবার খাওয়ার পর শরীরে ক্লান্তি ভর করা স্বাভাবিক। খাবার হজম করতে গিয়ে শরীরের তাপমাত্রা কিছুটা কমে যায়। ফলে ক্লান্তিবোধ থেকে ঘুম আসে। তবে সামান্য হাঁটাহাঁটি করলে শরীরের রক্ত চলাচল ত্বরান্বিত হয়, যা ঘুম কাটাতে সহায়তা করে।

ভালো ঘুম হয়

রাতে খাওয়ার পর কিছুক্ষণ হাঁটাহাঁটি করলে তা খাবার হজমে সাহায্য করে। ফলে রাতে বিছানায় যাওয়ার পর আর পাকস্থলিতে হজমপ্রক্তিয়া চলতে থাকে না। দ্রুত ঘুম আসে। এ ছাড়া শরীরে রক্ত সঞ্চালন বাড়লে তা মানসিক চাপ কমাতে সাহায্য করে, যা ভালো ঘুমের সহায়ক।

সতর্কতা

খাওয়ার পর হাঁটা বলতে কিন্তু খেয়ে উঠেই হাঁটাহাঁটি শুরু করা নয়। বরং কিছু সময় বিশ্রাম নিয়ে এরপর হাঁটা। দুপুর কিংবা রাতের খাবারের প্রায় ১০ থেকে ২০ মিনিট পর হাঁটা শুরু করা উচিত। এতে পাকস্থলি নিজের কাজ শুরু করতে পারে। এরপরই সামান্য ব্যায়াম হিসেবে হাঁটাহাঁটির কথা চিন্তা করা যেতে পারে। নইলে এই সামান্য হাঁটাহাঁটি থেকে শুরু হতে পারে পেটের পীড়া।

চেষ্টা করবেন সামান্য গতিতে হাঁটাচলা করার। দ্রুতগতিতে হাঁটাচলা করলে তা পাকস্থলির ওপর চাপ তৈরি করতে পারে। যা স্বাভাবিক হজমপ্রক্রিয়াকে ব্যাহত করবে।

হুট করেই এই নিয়মে অভ্যস্ত হতে যাবেন না। প্রথম প্রথম হাঁটতে কষ্ট হলেও সময়ের সঙ্গে সঙ্গে শরীর মানিয়ে নিতে শুরু করবে। তবে শরীরের ওপর চাপ দিয়ে কখনোই হাঁটাচলা করতে যাবেন না। শরীরের অবস্থা বুঝে অভ্যাসের সঙ্গে নিজেকে মানিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করুন।

তথ্যসূত্র: হেলথলাইন