শীতকালে হাঁপানি রোগীর আকস্মিক টান ওঠা স্বাভাবিক। বিশেষ করে হঠাৎ ঠান্ডা আবহাওয়ায়, ধুলাবালু লাগলে, ঘর ঝাড়পোছ করলে বা ফুলের পরাগরেণুর সংস্পর্শে রোগীর টান ওঠে। ভাইরাস সংক্রমণ, সর্দিকাশিও এ সমস্যার জন্য দায়ী।
অ্যাজমা বা হাঁপানি থাকলে আকস্মিক শ্বাসকষ্ট বেড়ে যাওয়ার এই সমস্যাকে বলে অ্যাকিউট এক্সাজারবেশন। এ সময় রোগীর শ্বাস দ্রুত হয়ে পড়ে, বুকে বাঁশির মতো শব্দ হতে থাকে। শ্বাসকষ্ট হয়, বাতাস নিতে কষ্ট বোধ করেন রোগী। পাঁজরের পেশি দেবে যেতে থাকে প্রতি শ্বাসের সময়। দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে অক্সিজেনের অভাবে ঠোঁট, নখ, জিবের ডগা নীল হতে থাকে।
হঠাৎ শ্বাসকষ্ট বেড়ে গেলে বাড়িতে প্রথমে চিকিৎসা শুরু করতে হবে। এ সময় কী করণীয় জেনে নিই—
রোগীকে সোজা হয়ে বসতে বলুন এবং আশ্বস্ত করুন যে আতঙ্কের কিছু নেই।
সালবিউটামল বা সালবিউটামল ও ইপরাট্রোপিয়ামযুক্ত ইনহেলার স্পেসারের সাহায্যে ধীরে ধীরে পাঁচটি চাপ নিন। স্পেসার না থাকলে কাগজের ঠোঙা ব্যবহার করতে পারেন।
স্পেসারের মধ্যে প্রতিবার এক চাপ দিয়ে তা থেকে পাঁচবার শ্বাস নিতে হবে। এভাবে পাঁচবার চাপ দিন। বয়স্ক ও শিশুদের ক্ষেত্রে খেয়াল করুন, শ্বাস বড় করে ওষুধ ঠিকমতো টেনে নেওয়া হচ্ছে কি না, খেয়ে ফেললে কাজ হবে না।
পাঁচ মিনিট অপেক্ষা করুন। বিশ্রাম নিন। তারপরও শ্বাসকষ্ট না কমলে আবার পাঁচ চাপ নিন। এভাবে মোট পাঁচবার (মোট ২৫ চাপ) নেওয়া যেতে পারে।
এরপরও শ্বাসকষ্ট বা হাঁপানি না কমলে রোগীকে কাছাকাছি হাসপাতালে নিতে হবে বা নেবুলাইজার যন্ত্রের সাহায্য লাগবে। অনেকেই বাড়িতে নেবুলাইজার ব্যবহার করেন। নেবুলাইজারে সাধারণত তিন মিলিলিটার নরমাল স্যালাইনের সঙ্গে আধা মিলিলিটার ব্রংকোডাইলেটর সলিউশন মেশাতে হয়। তারপর নেবুলাইজার চালু করে অক্সিজেন মাস্কের সাহায্যে রোগীকে দেওয়া হয়।
নেবুলাইজার না থাকলে এবং ইনহেলারে শ্বাসকষ্ট না কমলে হাসপাতালে পৌঁছার আগপর্যন্ত পাঁচ চাপ করে ইনহেলার নিতে থাকবেন।
শুরুতেই জিব, নখ বা আঙুল নীল হয়ে এলে, শ্বাসকষ্টের জন্য কথা পর্যন্ত না বলতে পারলে বা চেতনা হারিয়ে যেতে থাকলে দ্রুত হাসপাতালে নেওয়াই ভালো। এ ক্ষেত্রে নেবুলাইজার ছাড়াও অক্সিজেনের প্রয়োজন হয়।