বয়োবৃদ্ধি ও মেনোপজ ছাড়াও হাড়ক্ষয়ের আরও কিছু কারণ ও ঝুঁকি আছে। যেমন পর্যাপ্ত পরিমাণ শারীরিক পরিশ্রম না করা। পর্যাপ্ত পরিমাণ ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন ডি গ্রহণ না করা। অপুষ্টি ও অতি কম ওজন। অতিরিক্ত ধূমপান বা অ্যালকোহল গ্রহণ।
বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে হাড়ের ক্ষয়ের মাত্রা বাড়তে থাকে। পুরুষের তুলনায় নারীরা এ ক্ষয়জনিত সমস্যায় বেশি আক্রান্ত হন। হাড়ের ঘনত্ব বাড়া-কমা একটি জীবনব্যাপী চলমান প্রক্রিয়া। ১৬ থেকে ১৮ বছর বয়সের পর হাড়ের দৈর্ঘ্য বৃদ্ধি বন্ধ হয়ে যায়। কিন্তু ২০ বছর বয়স পর্যন্ত হাড়ের ভেতরের গঠন ও ক্ষয় একই গতিতে চলতে থাকে। ৪০ বছর পার হলে গঠনের তুলনায় ক্ষয়ের মাত্রা একটু একটু করে বাড়তে থাকে। বিশেষ করে নারীদের মেনোপজ বা ঋতুস্রাব বন্ধের পর শরীরে ইস্ট্রোজেন নামক হরমোন কমে যায়। ফলে হাড়ের ক্ষয়ের মাত্রা হঠাৎ খুব বেড়ে যায়।
বয়োবৃদ্ধি ও মেনোপজ ছাড়াও হাড়ক্ষয়ের আরও কিছু কারণ ও ঝুঁকি আছে। যেমন পর্যাপ্ত পরিমাণ শারীরিক পরিশ্রম না করা। পর্যাপ্ত পরিমাণ ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন ডি গ্রহণ না করা। অপুষ্টি ও অতি কম ওজন। অতিরিক্ত ধূমপান বা অ্যালকোহল গ্রহণ। তা ছাড়া কিছু কিছু রোগ হাড়ক্ষয়ের ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়। যেমন বাতরোগ, হাইপোগোনাডিজম, থাইরয়েড বা প্যারাথাইরয়েড হরমোনের সমস্যা; যেসব রোগে খাবার শোষণ ব্যাহত হয় যেমন সিলিয়াক ডিজিজ, ক্রনস ডিজিজ। দীর্ঘ মেয়াদে কেউ যদি শয্যাশায়ী থাকেন। কিছু ওষুধও হাড়ের ক্ষয় বাড়িয়ে দেয়। যেমন স্টেরয়েড, খিঁচুনিবিরোধী ওষুধ, ক্যানসার চিকিৎসায় ব্যবহৃত ওষুধ।
যেহেতু বয়স বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে হাড়ক্ষয় একটি প্রাকৃতিক প্রক্রিয়া, তাই প্রাথমিক পর্যায়ে তেমন কোনো লক্ষণ থাকে না। কিন্তু হাড়ের ভেতরের উপাদান বা ঘনত্ব অধিক পরিমাণ কমে গেলে বিভিন্ন উপসর্গ দেখা যায়। যেমন সারা শরীরে ব্যথা, সামান্য আঘাতে হাড় ভেঙে যাওয়া, মেরুদণ্ডে ফ্র্যাকচারের কারণে পিটে বা কোমরে ব্যথা।
রোগীর উপসর্গ পর্যবেক্ষণ, বয়স, পূর্ববর্তী অন্যান্য রোগ ও ওষুধের ইতিহাস থেকে ঝুঁকি নির্ণয় করা যায়। ঝুঁকিযুক্ত রোগীর বোন মিনারেল ডেনসিটি পরীক্ষার মাধ্যমে হাড়ের ঘনত্ব নির্ণয় করা যায়।
সুষম খাদ্যাভ্যাস অনুসরণ করা। বিশেষ করে শৈশব থেকে ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন ডি–সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া। যেমন ননিতোলা দুধ, কম স্নেহজাতীয় দই, কডলিভার অয়েল ইত্যাদি। নিয়মিত শরীরচর্চা ও ব্যায়াম করা উচিত। ধূমপান ও মদ্যপান ত্যাগ করুন। পতন বা পড়ে যাওয়া রোধ করুন। ৫০-ঊর্ধ্ব প্রত্যেক নারীর হাড়ের ঘনত্ব নির্ণয় করতে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
এ চিকিৎসায় বিভিন্ন ধরনের ওষুধ ব্যবহৃত হয়। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য বিসফোনেট থেরাপি, হরমোনের সমস্যা থাকলে হরমোন রিপ্লেসমেন্ট থেরাপি, ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন ডি সাপ্লিমেন্ট ইত্যাদি। চিকিৎসা না করলে অল্প আঘাতেই হাড়ে ফাটল ধরে বা হাড় ভেঙে যায়। কারণ, ঘনত্ব কমে হাড় দুর্বল ও ভঙ্গুর হয়ে যায়।
আগামীকাল পড়ুন: গরমে চোখের যত্নে করণীয়