শিশুদের সঠিক বৃদ্ধি ও বিকাশের জন্য তাদের খাবার অবশ্যই সুষম ও পুষ্টিকর হতে হবে। না হলে দেখা দিতে পারে নানা ধরনের জটিলতা। এর মধ্যে স্থূলতা একটি। বয়সের তুলনায় মুটিয়ে যাওয়ার প্রবণতা শিশুদেরও ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপসহ নানা রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়। কাজেই সব শিশুর খাবারের ক্ষেত্রেই যত্নবান হতে হবে। বিশেষ করে স্থূল শিশুদের খাবারের ব্যাপারে সতর্ক হতে হবে এখনই। তার খাদ্যতালিকা থেকে ছেঁটে ফেলতে হবে সব অস্বাস্থ্যকর খাবার। সেই জায়গায় যোগ করতে হবে স্বাস্থ্যকর সব খাবার।
শস্যজাতীয় খাবারে জোর দিন
শিশুদের খাদ্যতালিকায় পর্যাপ্ত শস্যজাতীয় ও আঁশযুক্ত খাবার যেমন লাল আটার রুটি, লাল চাল, যব–ভুট্টার তৈরি খাবার, পপকর্ন বা খই, বাদামি পাস্তা, হোলগ্রেইন নুডল বা পাস্তা ইত্যাদি রাখতে হবে।
প্রোটিন চাই যথেষ্ট
শিশুদের খাবার থেকে আমিষ বা প্রোটিন বাদ দেওয়া যাবে না। না হলে তাদের বৃদ্ধি বাধাগ্রস্ত হবে। মাছ, চর্বিহীন মাংস, ডিম, ডাল, ছোলা, শিমের বিচি, মিষ্টিকুমড়ার বিচি, ননিহীন দুধ, টক দই, বাদাম, মটরশুঁটি ইত্যাদি নিয়মিত দিতে হবে। তবে লবণ ও তেলযুক্ত বাদাম, ভাজা মাছ–মাংস না দেওয়াই ভালো।
প্রচুর শাকসবজি দিন
তাজা শাকসবজি, বিশেষ করে গাজর, টমেটো, লাউ, ব্রকলি, পেঁপে, করলা, সবুজ ও লালশাক নিয়মিত দিতে হবে। সবজির তৈরি বিভিন্ন রেসিপি তৈরি করে খাওয়ানো যায়।
ফলমূল
শিশুকে নাশতা হিসেবে অস্বাস্থ্যকর ও ভাজাপোড়া বা তৈলাক্ত খাবার না দিয়ে তাজা ফলমূল দিন।
লক্ষ করুন
স্থূল শিশুদের বিরিয়ানি, পোলাও, ফাস্ট ফুড, পিৎজা, চিপস, চকলেট, ক্যান্ডি, জুস ইত্যাদি যত কম দেওয়া যায়, ততো ভালো। প্রক্রিয়াজাত খাবার বর্জন করুন।
বাড়িতে তৈরি বার্গার, স্যান্ডউইচ, স্যুপ, কম তেলের বাদামি নুডল দিতে পারেন। ব্রাউন ব্রেড ব্যবহার করলে ভালো।
কোমল পানীয় বা কেনা জুসের পরিবর্তে বাড়িতে তৈরি ফলের রস দিন।
অস্বাস্থ্যকর ফ্যাটের পরিবর্তে স্বাস্থ্যকর চর্বি যেমন পিনাট বাটার, সামুদ্রিক মাছ ইত্যাদি দিতে পারেন।
শিশু চকলেট খেতে চাইলে ডার্ক চকলেট দিতে পারেন।
শিশুদের দুধ ও অন্যান্য পানীয়তে বাড়তি চিনি দেবেন না।
লেখক: পুষ্টি বিশেষজ্ঞ, ইবনে সিনা কনসালটেশন সেন্টার, বাড্ডা