অনেকে স্ট্রোককে হৃদ্রোগ মনে করেন। কিন্তু এটা আসলে মস্তিষ্কের রোগ। যেসব অসংক্রামক রোগের কারণে সারা বিশ্বে বয়স্ক মানুষের মৃত্যু হয়, তার মধ্যে অন্যতম স্ট্রোক।
লক্ষণ
হঠাৎ করে মুখ বেঁকে যাওয়া, এক দিকের হাত ও পা অবশ হয়ে যাওয়া, কথা জড়িয়ে যাওয়া, চেতনা কমে আসা, মাথা ঘোরানো, শরীরের ভারসাম্য রক্ষা করতে না পারা, হঠাৎ এক চোখে না দেখা, এলোমেলো কথা বলা স্ট্রোকের সাধারণ লক্ষণ হতে পারে। অনেক কারণেই স্ট্রোক হতে পারে। যেসব বিষয় স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়ায়, সেগুলো হলো ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা বেশি থাকা, ধূমপান অথবা অন্য যেকোনো নেশাজাতীয় দ্রব্যে আসক্তি ইত্যাদি।
যেভাবে শনাক্ত করা হয়
স্ট্রোকের লক্ষণ দেখা দিলে দ্রুত কাছের কোনো হাসপাতালে নিতে হবে। সেখানে প্রথমে মাথার সিটি স্ক্যান অথবা এমআরআই করতে হবে।
চিকিৎসা
নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে স্ট্রোকের রোগীকে হাসপাতালে নেওয়া গেলে থ্রোম্বোলাইসিস চিকিৎসার মাধ্যমে উন্নত সেবা প্রদান করা সম্ভব। এসব চিকিৎসা দ্রুত করা গেলে রোগী পুরোপুরি সুস্থ হয়ে ওঠেন। আমাদের দেশে অনেক সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে থ্রোম্বোলাইসিস সেবা আছে।
স্ট্রোকের চিকিৎসার সঙ্গে সঙ্গে এর কারণ ও জটিলতার চিকিৎসাও করতে হবে। ডায়াবেটিস ও উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে। ধূমপান অথবা অন্য কোনো নেশায় আসক্ত থাকলে তা ছাড়তে হবে। হৃদ্রোগ, থাইরয়েড সমস্যা, কিডনি রোগ অথবা রক্তে অতিরিক্ত কোলেস্টেরল থাকলে প্রয়োজনীয় ওষুধ খেতে হবে। স্ট্রোকের কারণে পক্ষাঘাতগ্রস্ত হলে ফিজিওথেরাপির বিশেষ ভূমিকা রয়েছে।
প্রতিরোধের উপায়
পরিমিত খাদ্য গ্রহণ, নিয়মিত ব্যায়াম ও দুশ্চিন্তামুক্ত জীবনযাপন স্ট্রোক প্রতিরোধের অন্যতম উপায়। ডায়াবেটিস অথবা উচ্চ রক্তচাপ থাকলে তা নিয়ন্ত্রণে রাখুন।
আগামীকাল পড়ুন: স্থূলতা ও মনের স্বাস্থ্য
ডা. নাজমুল হক মুন্না, সহকারী অধ্যাপক (নিউরোলজি) মুগদা মেডিকেল কলেজ, ঢাকা