ভালো থাকুন

সোরিয়াসিস নিয়ন্ত্রণে রাখার উপায়

সোরিয়াসিস ত্বকের দীর্ঘমেয়াদি সমস্যা। তবে শীতকালে এ রোগের তীব্রতা বাড়ে। এতে ত্বকের কোষগুলোর জীবনচক্র দ্রুত শেষ হতে থাকে। ফলে ত্বকের ওপর বাড়তি কোষের একটি বোঝা জমে ওঠে। ত্বকের স্থানে স্থানে খসখসে লাল বা সাদাটে হতে পারে। আবার ফেটেও যায়। ত্বক মাছের আঁশের মতো খসখসে হয়ে পড়ে। এটি একটি অটোইমিউন প্রদাহ। সোরিয়াসিস এর নানা কারণ থাকতে পারে। যেমন বংশগত, ইমিউন সিস্টেমের দুর্বলতা ইত্যাদি।

সোরিয়াসিস কেবল ত্বক নয়, আক্রমণ করতে পারে শরীরের অন্য অঙ্গপ্রত্যঙ্গেও। সাধারণত কনুই, হাঁটু, মাথা, হাত ও পায়ের নখ আক্রান্ত হয়। কোনো কোনো ক্ষেত্রে মাথার ত্বক আক্রান্ত হতে পারে এবং হাতের নখের রং নষ্ট ও গর্ত হয়ে যায়। কিছু কিছু বিষয় এর প্রকোপ বাড়ায়। যেমন ব্যাকটেরিয়া, ভাইরাস বা ছত্রাকজনিত সংক্রমণ (ইনফেকশন), টনসিলাইটিস বা মুখগহ্বরের সংক্রমণ, ত্বকে আঘাত, কাটাছেঁড়া, রোদে পোড়া ইত্যাদি। আবার কিছু কিছু ওষুধেও বাড়তে পারে সোরিয়াসিস, যেমন উচ্চ রক্তচাপের ওষুধ, ম্যালেরিয়ার ওষুধ, লিথিয়াম, কটিকোস্টেরাইড ইত্যাদি। ধূমপান ও মদ্যপান এবং শারীরিক ও মানসিক আঘাত-অসুস্থতায় সোরিয়াসিসের প্রকোপ বাড়তে পারে। ট্যাটু বা ভ্যাকসিনের কারণেও এই রোগ বাড়তে পারে। এসব পরিস্থিতিতে সোরিয়াসিস পুরো শরীরে ছড়িয়ে ইরাইথ্রোডার্মার মতো মারাত্মক অবস্থার সৃষ্টি হতে পারে।

রোগের প্রকোপ যাতে না বাড়ে, সে জন্য বেশি গোসল, সাবান ব্যবহার থেকে বিরত থাকতে হবে।

চিকিৎসা: সোরিয়াসিস এমন একটি রোগ, যা পুরোপুরি সেরে যায় না। কিন্তু এ রোগ নিয়ন্ত্রণে রেখে স্বাভাবিক জীবন যাপন করা সম্ভব। আক্রান্ত স্থানের ওপর বিভিন্ন ধরনের মলম ও ক্রিম লাগাতে বলা হয়। খাওয়ার কিছু ওষুধ এই রোগ নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে। তবে অবশ্যই এসব ওষুধ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে খেতে হবে।

রোগীর ঘরোয়া যত্ন: রোগের প্রকোপ যাতে না বাড়ে, সে জন্য বেশি গোসল, সাবান ব্যবহার থেকে বিরত থাকতে হবে। তৈলাক্ত জিনিস ঘন ঘন ব্যবহার করা যেতে পারে। নারকেল তেল, অলিভ অয়েল বা ভেসলিন ব্যবহার করা যায়। এগুলো ব্যবহার করলে এই রোগ খুব বাড়বে না। তা ছাড়া আলট্রাভায়োলেট রশ্মি দিয়েও চিকিৎসা করা হয়। এ রোগের কারণে প্রায়ই মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েন রোগীরা। তাই কাউন্সেলিংয়ের প্রয়োজন পড়ে।

যে খাবার সোরিয়াসিস বাড়ায়: লাল মাংস (গরু, খাসি, ফার্মের মুরগি, হাঁস), দুগ্ধজাতীয় খাবার, রিফাইনড সুগার ইত্যাদি সোরিয়াসিসের প্রকোপ বাড়াতে পারে। ধূমপান ও মদ্যপানের কারণেও এ রোগ বাড়তে পারে। সোরিয়াসিস ছোঁয়াচে রোগ নয়। তবে পরিবারে সোরিয়াসিসের ইতিহাস থাকলে ঝুঁকি থাকে।

সরাসরি সূর্যালোক ও শুষ্ক ত্বক সোরিয়াসিস রোগীর জন্য ক্ষতিকর। তাই সরাসরি রোদে অনেকক্ষণ থাকা যাবে না। ত্বক আর্দ্র রাখতে হবে। রোগ যত পুরোনো হয়, ততই পরিস্থিতি জটিল হতে থাকে। তাই দ্রুত রোগ শনাক্তকরণ ও চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।


আগামীকাল পড়ুন:

খাবারের পিরামিড দেখে খাদ্যাভ্যাস