শিশুদের অনেকে বিদ্যালয়ে না যেতে নানা বাহানা দেখায়। আবার কেউ কেউ বিদ্যালয় নিয়ে সত্যি সত্যি দুশ্চিন্তাগ্রস্ত থাকে। একে বলা হয় স্কুলভীতি বা বিদ্যালয়ভীতি।
স্কুলভীতিতে ভোগা শিশুরা বিদ্যালয় নিয়ে তাদের দুশ্চিন্তার কথা সরাসরি জানায় না। তবে বিদ্যালয় যাওয়ার কথা উঠলেই তাদের মধ্যে নানা রকম শারীরিক উপসর্গ দেখা দেয়। যেমন বমিভাব, মাথাব্যথা, ভালো না লাগা অথবা ঘন ঘন শ্বাস নেওয়া ইত্যাদি।
শিশুর এসব উপসর্গ শুধু বিদ্যালয় খোলা থাকার দিনগুলোতেই বেশি দেখা যায়। বিশেষ করে সকালবেলা বিদ্যালয়ে যাওয়ার সময় এসব উপসর্গ বেশি রকমের থাকে। দুপুর গড়িয়ে বিকেল হতে হতে তা লোপ পায়।
মা ও ঘর থেকে বিচ্ছিন্ন থাকার ভয়।
স্কুলের সত্যি কোনো ‘ভীতিকর’ পরিবেশ থাকা।
কখনো এই দুটি বিষয় একসঙ্গেও জড়িত থাকতে পারে।
মা-বাবা ও পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন থাকার কারণে তৈরি স্কুলভীতি সাধারণভাবে ১১ বছরের কম বয়সী শিশুদের মধ্যে বেশি দেখা যায়। এই ভীতি কখনো শিশুর অসুখ, পরিবারে ঘটে যাওয়া কোনো মৃত্যুভীতি থেকেও সঞ্চারিত হতে পারে।
শিশু হয়তো ঘরে এমন একজনের সঙ্গে সময় কাটায়, তার কাছ থেকে দূরে কোথাও গিয়ে, এমনকি বিদ্যালয়ে গিয়েও বিচ্ছিন্ন হয়ে থাকার বিষয়টি সে মেনে নিতে পারে না।
প্রথম কথা, শিশুর স্কুলভীতি কাটানোর বিষয়ে শিশুর মা-বাবাকে সচেতন হতে হবে।
শিশুর কোনো মানসিক দুশ্চিন্তা থাকলে তার কারণ খুঁজে বের করে যথাযথ প্রতিবিধান করতে হবে।
বাসায় না থেকে স্কুলে যাওয়া, স্কুল থেকে ফিরে আসা এবং স্কুলের পরিবেশ নিয়ে প্রশংসাসূচক কথাবার্তা শোনাতে হবে।
স্কুলে শিশু দৈহিক বা মানসিক নির্যাতনের বা বুলিংয়ের শিকার হচ্ছে কি না, তা খতিয়ে দেখতে হবে।
এ কাজে শিশু, শিশুর পরিবার, শিক্ষক-শিক্ষিকা ও সাইকোলজিস্টের যৌথ ব্যবস্থাপনা প্রয়োজন।
অধ্যাপক ডা. প্রণব কুমার চৌধুরী, সাবেক বিভাগীয় প্রধান, শিশুস্বাস্থ্য বিভাগ, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল