ভালো থাকুন

শিশুর চঞ্চলতা কি এডিএইচডি

সুস্থ–স্বাভাবিক শিশু খানিকটা চঞ্চল হবেই। সুস্থ শিশু মানেই হাসিখুশি ও দুরন্তপনা। তবে অতিচঞ্চল শিশুর সমস্যাকে বলা হয় অ্যাটেনশন ডেফিসিট হাইপার অ্যাকটিভিটি ডিজঅর্ডার (এডিএইচডি)। বাংলায় এ সমস্যাকে বলে অতিচঞ্চল অমনোযোগিতা। এটি শিশুর একধরনের স্নায়ুবিকাশজনিত সমস্যা। বাবা-মা কিংবা স্কুলের শিক্ষক সবচেয়ে আগে এ সমস্যাগুলো চিহ্নিত করতে পারেন। সাধারণত তিন–চার বছর বয়সে শিশুর এই লক্ষণগুলো প্রকাশ পায়।

স্বাভাবিক চঞ্চল শিশুকেও অনেকে অতিচঞ্চল মনে করেন। কিন্তু প্রকৃত সত্য হচ্ছে, চঞ্চলতা মানেই এডিএইচডি নয়। শিশুমাত্রই কিছুটা দুষ্টুমি করবে, বড়দের মতো মনোযোগ ও ধৈর্য তাদের মধ্যে আশা করা ঠিক নয়।

স্বাভাবিক চঞ্চল শিশুকেও অনেকে অতিচঞ্চল মনে করেন। কিন্তু প্রকৃত সত্য হচ্ছে, চঞ্চলতা মানেই এডিএইচডি নয়।

কখন বলব অতিচঞ্চলতা

যখন শিশুর চঞ্চলতার কারণে সে নিজে ক্ষতিগ্রস্ত হয় (পড়ে যাওয়া, আঘাত পাওয়া ইত্যাদি), অন্যের ক্ষতির কারণ হয়, প্রায়ই এমন আচরণ করে (জিনিসপত্র ভাঙা, অযথা ছোটাছুটি করে অন্যের কাজে বাধা দেওয়া ইত্যাদি) কিংবা শিশুর সামাজিক বিকাশ বাধাগ্রস্ত হয় (যেমন চঞ্চলতার কারণে কেউ তার সঙ্গে মেশে না, খেলে না এবং তাকে এড়িয়ে চলে), তখন সেই চঞ্চলতাকে অতিচঞ্চলতা বলে।


যা দেখে বোঝা যায় শিশুটি অতিচঞ্চল

■ কোনো বিষয়ের প্রতি বেশিক্ষণ মনোযোগ ধরে রাখতে না পারা।

■ সারাক্ষণ ছোটাছুটি করা, চিন্তাভাবনা না করে হঠাৎ কিছু করে ফেলা।

■ স্থির হয়ে বসে থাকতে না পারা।

■ বই-কলম প্রায়ই হারিয়ে ফেলা।

■ লাফিয়ে উঁচুতে উঠে যাওয়া।

■ প্রশ্ন শোনার আগে জবাব দেওয়া।

■ পড়ালেখা এমনকি খেলাধুলায় মনোযোগ ধরে রাখতে না পারা।

■ বড়দের কাজে বা কথার মধ্যে বাধা দেওয়া।

■ একসঙ্গে অনেক কিছু করার চেষ্টা করা, তবে কোনোটাই শেষ করতে না পারা।

অতিচঞ্চলতার এই লক্ষণগুলো যদি সাত বছরের কম বয়সী শিশুর মধ্যে কমপক্ষে ছয় মাস ধরে দেখা যায় এবং এ কারণে যদি তার
পড়ালেখা বাধাগ্রস্ত হতে থাকে, তখন সেটিকে এডিএইচডি বলা হয়।

করণীয়

■ যদি শিশুর মধ্যে অতিচঞ্চলতার লক্ষণ থাকে, তাহলে একজন মনোরোগ চিকিৎসকের সাহায্য নিন।

■ শিশুর জন্য একটি রুটিন তৈরি করুন। বাড়ির সবাই সঠিক নিয়ম মেনে চলুন। যেমন নিদি৴ষ্ট সময়ে ঘুমানো, সঠিক সময়ে খাবার খাওয়া ও খেলার সময়ে খেলা ইত্যাদি।

■ শিশুকে কোনো নির্দেশ দিলে সেটি তাকে বুঝিয়ে বলবেন। রূঢ় আচরণ করবেন না।

■ শিশুর ভালো কাজের প্রশংসা করুন, কখনো তাকে পুরস্কৃত করুন।

■ শিশুর খাদ্যতালিকায় কৃত্রিম রং ও মিষ্টির পরিমাণ কমিয়ে তাজা ফলমূল যুক্ত করুন।


আগামীকাল পড়ুন: ডায়াবেটিস রোগীর মানসিক সুস্থতা