প্রচণ্ড গরমে বেশি ঘাম হয়। এতে ত্বকের ঘর্মগ্রন্থি ও নালি ফেটে যায়; ত্বকের নিচে ঘাম জমতে থাকে। এতে করে ফোসকা হয়, যা লালচে হয়, চুলকায়। এটাই ঘামাচি। অনেক সময় ঘাম ও ধুলা–ময়লা জমে ঘর্মনালির মুখ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় সংক্রমণ বা ইনফেকশন হয়। এতে কষ্ট বাড়ে। ঘাম ও ধুলা–ময়লার কারণে ব্যাকটেরিয়া ও ছত্রাকজনিত রোগও দেখা দেয় এ সময়।
যে শিশু বেশি ঘামে ও ঘাম গায়ে শুকিয়ে যায়, তার ঠান্ডা লাগার প্রবণতা বেশি। তাই ঘামে জামা ভিজে গেলে সঙ্গে সঙ্গে তা খুলে দিতে হবে। পাতলা সুতি কাপড় দিয়ে শরীর মুছে দিতে হবে।
গরমে প্রতিদিন শিশুকে গোসল করাতে হবে। তবে স্কুল বা বাইরে থেকে ঘেমে ফিরলে সঙ্গে সঙ্গে গোসল করানো যাবে না। ঘাম মুছে একটু জিরিয়ে নেওয়ার পর স্বাভাবিক তাপমাত্রার পানি দিয়ে গোসল করাতে হবে।
গোসলের সময় শিশুকে প্রতিদিন সাবান দিয়ে পরিষ্কার করে দিন।
গরমে শিশুদের চুলের গোড়াও খুব ঘামে। বাতাসে শুকাবে এই অপেক্ষা না করে যত দ্রুত সম্ভব চুলের গোড়া ভালো করে মুছে দিতে হবে।
ঘামাচি বেশি চুলকানো কিংবা নখ দিয়ে স্পর্শ না করাই ভালো। ঠান্ডা পানিতে নরম কাপড় ভিজিয়ে আক্রান্ত স্থানে মুছে দিলে ঘামাচি অনেকটাই কমে যায়।
ঘামাচিরোধক পাউডার বা ট্যালকম পাউডার ব্যবহার করা যায়। তবে পাউডার দেওয়ার আগে গা ভালো করে মুছে দিতে হবে। মোটা করে পাউডারের প্রলেপ দিয়ে রাখা উচিত নয়। এতে ত্বকের রোমকূপগুলো বন্ধ হয়ে যায়। এতে আরও বেশি ঘামাচি ওঠে।
এ সময় খুব ছোট শিশুকে ডায়াপার না পরানোই ভালো। ভেজা ডায়াপার শিশুর বিরক্তি ও অস্বস্তির কারণ হতে পারে। এ থেকে ত্বকে র্যাশও হতে পারে।
গরমে শিশুকে ন্যাড়া করে দেওয়া যায়। এতে মাথায় ঘামাচি, খুশকিসহ চর্মরোগ হওয়ার আশঙ্কা কমে যায়।
শিশুকে বেশি বেশি পানি পান করাতে হবে। ঘামের সঙ্গে যথেষ্ট পরিমাণে সোডিয়াম এবং যৎসামান্য পটাশিয়াম ও বাইকার্বোনেট শরীর থেকে বেরিয়ে যায়। তাই ফল, ফলের রস, শরবত, খাওয়ার স্যালাইনও খাওয়াতে পারেন।
তরমুজ, বেল, পেঁপে, কাঁচা আম, বাঙ্গি প্রভৃতি মৌসুমি ফল খেতে শিশুকে আগ্রহী করে তুলুন। সরাসরি খেতে না চাইলে শরবত বা জুস করে খাওয়াতে পারেন।
ভাজাপোড়া, বেশি তৈলাক্ত ও মসলাযুক্ত খাবার ও কেনা খাবার থেকে শিশুকে দূরে রাখতে হবে।
এসময়যতটাসম্ভবশিশুকেপ্রচণ্ডরোদেখেলাধুলাথেকেবিরতরাখতেহবে।
ডা. মো. জাহেদ পারভেজ, সহকারী অধ্যাপক চর্ম ও যৌনরোগ বিভাগ, শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল