যোগব্যায়াম

যে যোগব্যায়াম হাতের গঠন সুন্দর করবে

নানা কারণে অনেকের হাতের মাংস বেড়ে সৌন্দর্য নষ্ট হয়ে যায়। ওজন কমানোর পরও হাতের মাংসপেশির গঠন ঠিক হতে চায় না। তারা যোগাসনে মনোযোগ দিতে পারেন। কয়েকটি আসন হাতের মাংসপেশি সহজেই ঠিক করে দিতে পারে। এখানে থাকছে তেমন কয়েকটি আসনের খোঁজ।

পূর্বোত্তনাসন

নিয়মিত যোগব্যায়ামে হাত হবে সুগঠিত। মডেল: বাপ্পা শান্তনু
ছবি: খালেদ সরকার

যেভাবে করবেন: মেরুদণ্ড সোজা করে দুই পা টান টান করে বসুন (দণ্ডাসন)। দুই হাত দেহের দুই পাশে এমনভাবে রাখুন, যেন হাত ভূমির ওপর লম্বভাবে থাকে এবং কনুইতে কোনো ভাঁজ না পড়ে। হাতের আঙুল সামনের দিকেও রাখতে পারেন, পেছনের দিকে মুখ করিয়েও রাখতে পারেন। শ্বাস টেনে নিন এবং কোমরকে ওপরের দিকে এমনভাবে তুলে ধরুন, যেন পা থেকে কাঁধ পর্যন্ত একটা সরলরেখা তৈরি হয়। পায়ের পাতা টান টান রাখবেন। আসনে থাকা অবস্থায় স্বাভাবিক শ্বাস–প্রশ্বাস থাকবে। আসন থেকে নামার সময় শ্বাস ছাড়তে ছাড়তে নামুন। যত সময় আসন করবেন, তত সময় বিশ্রাম নেবেন।

সময়কাল: আপনার সামর্থ্য ও চাহিদা অনুযায়ী করবেন। প্রথমে কমপক্ষে ১৫ সেকেন্ড দিয়ে শুরু করুন এবং ৩ বার করুন। আস্তে আস্তে সময় বাড়িয়ে ৩০–৪০ সেকেন্ড এই আসনে থাকুন। ৪–৬ বার করবেন।

উপকারিতা: হাতের মাংসপেশির অতিরিক্ত চর্বি কমিয়ে হাতের গঠন সুন্দর করে। হাতের মাংসপেশিতে রক্তসঞ্চালন বাড়ায়। হাতের শক্তি বৃদ্ধি করে।

উত্থিত পদ্মাসন

উত্থিত পদ্মাসন

যেভাবে করবেন: পদ্মাসনে বসুন। দুই হাতের তালু বা মুষ্টি করে শরীরের দুই পাশে রাখুন। হাত ঊরুর মধ্যবর্তী স্থান বরাবর মাটিতে রাখবেন, না হলে শরীর ওপরে ওঠানো সম্ভব হয় না। শ্বাস টেনে নিয়ে শ্বাস ছাড়তে ছাড়তে মাটিতে চাপ প্রয়োগ করে পুরো শরীরকে শূন্যে ভাসিয়ে দিন। আসনে থাকা অবস্থায় স্বাভাবিক শ্বাস–প্রশ্বাস চলবে। আসন থেকে নামার সময়ও শ্বাস ছাড়তে ছাড়তে নামুন।

সময়কাল: প্রথমে ৫ সেকেন্ড থাকার চেষ্টা করুন। প্রতিদিন আস্তে আস্তে সময় বাড়াবেন। ভালো ফলের জন্য ৩০ সেকেন্ড করে ৪ বার করুন।

উপকারিতা: হাতের মাংসপেশিতে বলবৃদ্ধির পাশাপাশি অতিরিক্ত চর্বি কমায়। মনোযোগ বৃদ্ধি করে। কাঁধের মাংসপেশির গঠনও সুন্দর করে।

বকাসন

বকাসন

যেভাবে করবেন: মলাশনে বসুন (মলত্যাগের সময় সাধারণত আমরা যেভাবে টয়লেটে বসি)। দুটো হাত হাঁটুর বাইরের দিক থেকে ভেতরের দিকে নিয়ে এসে কাঁধ সমান দূরত্ব রেখে মাটিতে রাখুন। হাতের আঙুলগুলো পরস্পর থেকে ফাঁক করে রাখবেন। প্রথম অবস্থায় হাত সোজা থাকলেও কনুই দুটো ভেঙে একটু বাইরের দিকে বাঁকিয়ে দিন। যাতে হাঁটুর ভেতরের অংশ ওখানে বাঁধানো যায়। এবার দুই হাঁটুর ভেতরের অংশ দুই কনুইয়ে বাঁধিয়ে দুই পায়ের পাতা শূন্যে তুলে দিন। দুটো পায়ের বৃদ্ধাঙ্গুল একসঙ্গে স্পর্শ করে রাখলে ভারসাম্য রাখতে সুবিধা হবে। প্রথম অবস্থায় মুখ বরাবর মাটিতে বালিশ দিয়ে রাখবেন, যাতে সামনে পড়লেও বালিশের কারণে আঘাত থেকে রক্ষা পান। যখন ভারসাম্য চলে আসবে, তখন আর কোনো সাপোর্ট লাগবে না।

সময়কাল: ৫ সেকেন্ড দিয়ে শুরু করুন। বেশি উপকার পাওয়ার জন্য ৩০–৬০ সেকেন্ড আসনে স্থির থাকবেন। এভাবে ৫ বার করবেন।

উপকারিতা: বাহুসহ হাতের আঙুলের শক্তি অনেক পরিমাণে বৃদ্ধি করে। মনোযোগ বৃদ্ধি পায়। শরীরের ভারসাম্য রাখার ক্ষমতা বাড়ে। হাতের মাংসপেশির গঠন সুন্দর হয়।