নারীদের পিরিয়ডের বিভিন্ন সমস্যায় যোগাভ্যাস খুব ভালো ফল দেয়। অনেকেরই অনিয়মিত পিরিয়ডের সমস্যা দেখা দেয়। কারও দীর্ঘদিন পরপর, কারও আবার ঘনঘন পিরিয়ড হওয়ার মতো ঘটনা ঘটে। এ ছাড়া অতিরিক্ত রক্তস্রাব, পিরিয়ডের সময়ে অতিরিক্ত ব্যথা ইত্যাদি সমস্যা থেকে সহজে মুক্তি পাওয়া সম্ভব যোগব্যায়ামের মাধ্যমে। এখানে থাকছে তেমনই কয়েকটি যোগাসন।
যেভাবে করবেন: মাটিতে বা ম্যাটের ওপর উপুড় হয়ে শুয়ে পড়ুন। পা দুটোকে হাঁটু থেকে মুড়ে পায়ের গোড়ালি নিতম্বের ওপরে রাখুন। দুই হাত দিয়ে দুই পায়ের গোড়ালি ধরুন। শ্বাস ভেতরে টেনে হাঁটু এবং ঊরু দুটো ওপরের দিকে তুলুন, হাত টান টান থাকবে। পেছনের অংশ ওঠার পরে পেটের ওপরের অংশ-বুক, গ্রীবা এবং মাথা ওপরের দিকে ওঠান। নাভি ও পেটের আশপাশের অংশ মাটির সঙ্গেই লেগে থাকবে, বাকি অংশ ওপরের দিকে উঠে থাকা উচিত। শরীরের আকৃতি টান টান হয়ে থাকা ধনুকের মতো হয়ে পড়বে। আসন থেকে ফেরার সময় শ্বাস ছাড়তে ছাড়তে ধীরে ধীরে আগের অবস্থায় ফিরে আসুন।
সময়কাল
প্রথম দিকে ১৫ সেকেন্ড দিয়ে শুরু করুন। সামর্থ্য বাড়লে ৩০-৬০ সেকেন্ড করবেন। এভাবে ৪-৬ বার করুন।
উপকারিতা
নারীদের মাসিক বিকৃতিতে ফলপ্রসূ। কিডনি পুষ্ট করে তোলে। কোমর যন্ত্রণায় লাভদায়ক।
যেভাবে করবেন
সোজা হয়ে শুয়ে দুই হাঁটু মুড়ে পা দুটোকে নিতম্বের কাছে রাখুন। হাত দিয়ে পায়ের গোড়ালির ওপরের অংশ ধরুন। শ্বাস টেনে কোমর এবং নিতম্বকে ওপরের দিকে ওঠান। কাঁধ, মাথা এবং গোড়ালি মাটির ওপরেই থাকবে। ফিরে আসার সময় শ্বাস ছাড়তে ছাড়তে ধীরে ধীরে কোমর মাটির সঙ্গে ঠেকান।
সময়কাল
৩০-৬০ সেকেন্ড থাকুন। ৪-৬ বার আসনটি করুন।
উপকারিতা
গর্ভাশয়ের জন্য এ আসন অত্যন্ত ভালো। বন্ধ্যত্ব, মাসিক বিকৃতি, শ্বেত প্রদাহ দূর করে।
যেভাবে করবেন
দুই পা টান টান করে বসে বাঁ পা মুড়ে গোড়ালি নিতম্বের কাছে রাখুন অথবা গোড়ালির ওপরও বসতে পারেন। ডান পা বাঁ পায়ের ওপরে এমনভাবে রাখুন, যাতে দুটো হাঁটু পরস্পরকে স্পর্শ করে বা একই লাইনে থাকে। শ্বাস নিতে নিতে ডান হাতকে ওপরে তুলে শ্বাস ছাড়তে ছাড়তে পিঠের দিকে মুড়ুন এবং একই সঙ্গে বাঁ হাতকে পিঠের পেছনের দিক থেকে এনে ডান হাত ধরুন। ঘাড় এবং কোমর যেন সোজা থাকে। একদিক থেকে প্রায় এক মিনিট করার পর অন্যদিকে অর্থাৎ হাত–পায়ের অবস্থান পরিবর্তন করে নিন। এভাবে মোট তিন সেট করুন।
উপকারিতা
স্ত্রীরোগে এ আসন উপকারী। সন্ধিবাত এবং গেঁটে বাতও দূর করে।
মনে রাখবেন
যোগাসনের মাধ্যমে প্রাকৃতিকভাবে রোগমুক্তির জন্য ধৈর্য ধরে আসন চর্চা করতে হবে। শ্বাস-প্রশ্বাসের নিয়ম মেনে প্রতিদিন অনুশীলন করা জরুরি। আসনে থাকা অবস্থায় শরীরের যেখানে চাপ লাগবে, সেখানে মনোযোগ দেবেন। যোগাভ্যাস খালি পেটে করবেন। যতক্ষণ আসন করবেন, ততক্ষণ বিশ্রাম নেবেন। রোগমুক্তির জন্য তিন থেকে ছয় মাস বা তার বেশি সময়ও লাগতে পারে। যেহেতু যোগাসনের উপকারিতা ছাড়া অপকারিতা নেই, তাই নিয়ম মেনে প্রতিদিন নির্দিষ্ট সময়েই যোগাভ্যাস করুন।