>
পুরুষদের মধ্যে ধূমপানের অভ্যাস বেশি বলে তাঁদের ঝুঁকি নারীদের তুলনায় চারগুণ বেশি।প্রাথমিক পর্যায়েই রোগ শনাক্তে প্রস্রাবের সঙ্গে রক্তপাত বা তলপেটের যেকোনো সমস্যায় দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
জুলাই মাস মূত্রথলির ক্যানসার–সচেতনতার মাস। নারী-পুরুষ যে কারও মূত্রথলির ক্যানসার হতে পারে। তবে পুরুষদের মধ্যে ধূমপানের অভ্যাস বেশি বলে তাঁদের ঝুঁকি নারীদের তুলনায় চারগুণ বেশি। কাপড়ে ব্যবহৃত রঞ্জক পদার্থ, অ্যাসবেস্টস, কিছু ক্যানসারের ওষুধ এবং বিলহারজিয়াস্টিসস নামে এক ধরনের পরজীবীর সংক্রমণেও মূত্রথলির ক্যানসার হতে পারে।
পেটের ওপর দিকে একটু পেছনে দুই দিকে দুটি কিডনি বা বৃক্ক থাকে। এখানে রক্ত শোধন করে প্রস্রাব তৈরি হয় এবং রক্তের দূষিত পদার্থ প্রস্রাবের সঙ্গে মিশে মূত্রনালির মাধ্যমে তলপেটে মূত্রথলিতে গিয়ে জমা হয়। এই প্রস্রাবের থলিতে সংক্রমণ খুব পরিচিত সমস্যা। কিন্তু অনেকেই জানেন না যে মূত্রথলিতে ক্যানসারও হতে পারে। প্রস্রাবের রাস্তা দিয়ে সহজেই কোনো জীবাণু কিংবা ভাইরাস মূত্রথলিতে প্রবেশ করতে পারে।
প্রস্রাবের সঙ্গে রক্ত গেলে (রক্তপাত ব্যথাহীন হতে পারে, আবার ব্যথা থাকতে পারে) সতর্ক হতে হবে। তবে জমাট রক্ত বের হলে প্রায় নিশ্চিতভাবে ধরে নেওয়া যায় যে টিউমার হয়েছে। এ ছাড়া তলপেটে ব্যথা, প্রস্রাব করতে কষ্ট পাওয়া এবং প্রস্রাব না ধরাও উপসর্গ হিসেবে দেখা দিতে পারে। নিশ্চিত হতে কিছু রক্ত পরীক্ষা, প্রস্রাবের পরীক্ষার সঙ্গে আলট্রাসনোগ্রাফি, সিস্টোস্কোপ বায়োপসি, এমআরআই ইত্যাদি করতে হতে পারে। রোগের একেবারে শুরুতে ধরা পড়লে সিস্টোস্কোপির মাধ্যমে টিউমার পুরোপুরি সরিয়ে ফেলে নিরাময় সম্ভব। তবে ক্যানসার গভীরে ছড়িয়ে পড়লে প্রথমে কেমোথেরাপি, পরে রেডিওথেরাপি দিতে হবে। তারপরও ক্যানসার নিয়ন্ত্রণ করা না গেলে অপারেশন করে মূত্রথলি ফেলে দিয়ে প্রস্রাব জমা করার জন্য আলাদা ব্যাগ লাগিয়ে দেওয়া যায় অথবা কৃত্রিম মূত্রথলি তৈরি করে দেওয়ার ব্যবস্থাও রয়েছে। তবে তা যেকোনো রোগীর জন্য কষ্টকর। সুতরাং প্রাথমিক পর্যায়েই রোগ শনাক্তে প্রস্রাবের সঙ্গে রক্তপাত বা তলপেটের যেকোনো সমস্যায় দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
অধ্যাপক ডা. শেখ গোলাম মোস্তফা, পরিচালক (অব.), জাতীয় ক্যানসার গবেষণা ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল, এবং অধ্যাপক, এনাম মেডিকেল কলেজ, ঢাকা