কুশল সংবাদ

মুখে যেন গন্ধ না হয়

ঝকঝকে সাদা দাঁত সঙ্গে ভারী সুন্দর হাসি, হাল ফ্যাশনের পোশাক, বাচনভঙ্গিতে আভিজাত্য—সবকিছুই ভেস্তে যায় যখন কথা বলার সময় মুখ থেকে গন্ধ বের হয়। এই মুখে গন্ধ কখনো রোগের কারণে হয়, আবার কখনো মুখ কিংবা দাঁত অপরিষ্কার থাকলে হয়। কারণ জানা থাকলে প্রতিকারটা সহজ হয়ে যায়। জেনে নেওয়া যাক, কেন এই বিব্রতকর পরিস্থিতি হয়।
মুখ কিংবা দাঁত সুস্থ আছে, তারপরও মুখে গন্ধ হতে পারে। সাইনাসে সংক্রমণ মুখে বাজে গন্ধ হওয়ার অন্যতম কারণ। এ ছাড়া টনসিলে সংক্রমণ ঘটলেও মুখে কটু গন্ধ হতে পারে। তাই মুখে গন্ধ হলে সাইনাস কিংবা টনসিলে সমস্যা আছে কি না, বিশেষজ্ঞকে দেখিয়ে নিন।
খাবার পরে মুখ খুব ভালো করে পরিষ্কার না করলে মুখে দুর্গন্ধ সৃষ্টিকারী ব্যাকটেরিয়া জন্মায়। জিবের নিচে অক্সিজেন ছাড়া বেঁচে থাকা এ ব্যাকটেরিয়া সালফার কম্পাউন্ড উৎপাদন করে। এটি মুখে পচা ডিমের মতো গন্ধ ছড়ায়। তাই প্রতিবার খাবার পরেই ভালো করে কুলিকুচি করতে হবে। সকালে খাবার পর আর রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে ব্রাশ করে নিন।
পানি কম খেলে মুখে লালার পরিমাণও কমে যায়। লালা সাধারণত মুখের ভেতর ব্যাকটেরিয়া জমতে দেয় না। আর শুকনো মুখে ব্যাকটেরিয়া দ্রুত বিস্তার হয়। যাঁরা পানি কম খান, তাঁদের মুখে দুর্গন্ধ হওয়ার প্রবণতাও বেশি থাকে। প্রতিদিন বেশি করে পানি পান করুন। মুখে লালার পরিমাণ একেবারেই কম হলে বিশেষজ্ঞ দেখাতে হবে।
যাঁদের মুখ দিয়ে শ্বাস নেওয়ার অভ্যাস কিংবা শারীরিক সমস্যার কারণে মুখ দিয়ে শ্বাস নিতে হয়, তাঁদেরও মুখ শুকিয়ে যায় দ্রুত। এঁদের মুখেও গন্ধ হওয়ার হার বেশি। মুখ দিয়ে শ্বাস নেওয়ার বদভ্যাস থাকলে ছেড়ে দিন। আর শারীরিক সমস্যা থাকলে চিকিৎসা করিয়ে নিতে হবে।
অ্যাসিডিটির সমস্যা প্রকট হলেও মুখে গন্ধ তৈরি হয়। টকজাতীয় ঢেকুরের সঙ্গে তা মুখে বাজে গন্ধ ছড়িয়ে দেয়। তাই যাঁরা এসিডিটির সমস্যায় ভুগছেন, তাঁরা চিকিৎসকের পরামর্শে নিয়মিত ওষুধ খান। এই এসিডিটির সমস্যা প্রকট হলে দাঁতও ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
মুখ, দাঁত, নাক ছাড়াও দেহের অন্য অঙ্গের সমস্যায়ও মুখে কিংবা নিশ্বাসে দুর্গন্ধ হতে পারে। ডায়াবেটিসে রক্তে চিনির পরিমাণ বেড়ে গেলে নিশ্বাসে দুর্গন্ধ পাওয়া যেতে পারে। কিডনির অসুখে মুখ থেকে অ্যামোনিয়ার ঝাঁজালো গন্ধ বের হতে পারে। লিভারের সংক্রমণে নিশ্বাসে পচা ডিমের গন্ধ বের হয় কখনো। তাই মুখে যাঁদের বাজে গন্ধ থাকে সব সময়, এটিকে অবহেলা না করে বিশেষজ্ঞকে খুলে বলুন।
লেখক: দন্ত চিকিৎসক