মাথাব্যথা মানেই মাথার অসুখ নয়

আমাদের অনেকের ধারণা, প্রচণ্ড মাথাব্যথা মানেই মাথার বাজে কোনো অসুখ। কিন্তু ধারণাটি ঠিক নয়। মাথাব্যথার অনেক কারণের মধ্যে উল্লেখযোগ্যগুলো কয়েকটি বিষয় জেনে নেওয়া যাক।

  • গভীর রাত পর্যন্ত জেগে থাকা, সঠিক সময়ে না খাওয়া ও অতিরিক্ত দুশ্চিন্তা করা।

  • পারিবারিক অশান্তি ও মানসিক কষ্ট।

  • সাইনোসাইটিস (ঠান্ডাজনিত অসুখ)। এই অসুখে নাকের ভেতরে শ্লেষ্মাগুলো জমে ব্যথা হয়।

  • অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিস ও উচ্চ রক্তচাপ থেকে অনেকের এই সমস্যা হতে পারে। অনেকের আবার মাথাব্যথার সঙ্গে মাথা ঘোরানোর মতো সমস্যাও দেখা যায়।

  • মাথার কোনো অসুখ; যেমন মাইগ্রেন, টিউমার, সিস্ট থাকলে ব্যথা হয়। মাথায় জোর আঘাত লেগে কোনো স্নায়ু ছিঁড়ে গেলে মাথাব্যথাসহ প্যারালাইসিস পর্যন্ত হতে পারে।

অতিরিক্ত ও নিয়মিত মাথাব্যথা কখনোই অবহেলা করা উচিত নয়
আমাদের দেশের আর্থসামাজিক প্রেক্ষাপটে পুরুষদের তুলনায় নারীরা বঞ্চিত হয় বেশি। তাই হতাশাজনিত কারণে তাদের মাথাব্যথা হয় বেশি। নারী-পুরুষ উভয়েরই দুশ্চিন্তা ও হতাশাজনিত কারণে মাথাব্যথা হতে পারে
  • চোখের সমস্যায়ও মাথাব্যথা হয়। নতুন চশমা নেওয়ার পরেও চোখ এবং মাথাব্যথা হতে পারে। পরে চশমা ব্যবহারে অভ্যস্ত হয়ে গেলে সেটা সেরে যায়।

  • হার্টের সমস্যায়ও মাথাব্যথা হয়। তবে সবার ক্ষেত্রে এটি প্রযোজ্য নয়। খুবই কম ক্ষেত্রে এই সমস্যা দেখা যায়। হার্টের বিভিন্ন ধরনের সমস্যা রয়েছে। এর মধ্যে শিরা-উপশিরায় চর্বি জমে রক্তনালি সরু বা বন্ধ হয়ে যাওয়াটা অন্যতম। এই সমস্যায় হৃৎপিণ্ড সঠিকভাবে কাজ করতে পারে না। মস্তিষ্কে সুষ্ঠুভাবে রক্ত সরবরাহ করতে না পারার জন্য মস্তিষ্কে অক্সিজেন কমে যায়। এ অবস্থায় অনেকেরই মাথাব্যথা করে।

  • হরমোনের তারতম্য ও জটিলতার জন্য অনেকের মাথাব্যথা করে। মেয়েদের ঋতুস্রাবজনিত কারণেও মাথাব্যথা হয়।

  • চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া কয়েক বছর ধরে রক্তচাপ, ডায়াবেটিস ও জন্মনিয়ন্ত্রণক ওষুধ খেলে মাথাব্যথা হয়। তবে সবার যে হবেই, এমনটি নয়।

  • নাকের হাড় বাঁকা (ডেভিয়েটেড ন্যাজাল সেপটাম) থাকলে নাকের ছিদ্র দিয়ে সমানভাবে অক্সিজেন ঢুকতে পারে না। প্রায়ই ঠান্ডা লেগে যায়। এমন অবস্থায়ও অনেকের মাথাব্যথা হয়।

  • অ্যান্টিবায়োটিক, হরমোনের ওষুধ যেটা যেভাবে খাওয়ার কথা, সেটা সেই নিয়মমতো না খেলে অনেকের মাথাব্যথা হয়। যেকোনো ওষুধ চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী নির্দিষ্ট সময়েই খাওয়া উচিত।

  • আবার ধূমপায়ী ও মাদকসেবীরা সিগারেট, মাদকদ্রব্য না পেলে মাথাব্যথাসহ নানা ধরনের কষ্টে ভোগেন। চা, পান, জর্দা, তামাক, কফি বা যেকোনো নেশায় মাথাব্যথার উপসর্গ হয় নেশার বস্তুটি না পেলে। সব ধরনের মাদকই পরিহার্য। পান, জর্দা, গুলের মতো নেশাও দেহের জন্য ভালো নয়।

  • ক্যানসার রোগীদের সাধারণত মাথাব্যথা হয়। কারণ, তারা দৈহিকভাবে দুর্বল হয়ে যায়।

  • গরমের সময়ে গরমের জন্যও মাথাব্যথা হতে পারে।

নারীদের মাথাব্যথার অন্যতম প্রধান কারণ হলো মাইগ্রেন। আমাদের দেশের আর্থসামাজিক প্রেক্ষাপটে পুরুষদের তুলনায় নারীরা বঞ্চিত হয় বেশি। তাই হতাশাজনিত কারণে তাদের মাথাব্যথা হয় বেশি। নারী-পুরুষ উভয়েরই দুশ্চিন্তা ও হতাশাজনিত কারণে মাথাব্যথা হতে পারে।

অতিরিক্ত ও নিয়মিত মাথাব্যথা কখনোই অবহেলা করা উচিত নয়। অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।