বিশ্বজুড়ে অকালমৃত্যুর অন্যতম কারণ হলো হৃদ্রোগ। চলমান জীবনকে হঠাৎ থামিয়ে দেয় এই রোগ। রোগটি এমন সন্তর্পণে জীবনে প্রবেশ করে যে টেরও পাওয়া যায় না। কিন্তু আপনিই এই হার্টকে সুস্থ রাখতে পারেন। ভালো থাকা আসলে আপনারই হাতে।
হার্টকে সুস্থ ও সজীব রাখতে চারটি অভ্যাস আপনাকে জিতিয়ে দিতে পারে, এমনটাই বলছেন গবেষকেরা।
নিজেকে জানুন
ব্যস্ত দিনগুলোতে নিজেকে জানার সুযোগ হয় না আমাদের। কিন্তু এই অজ্ঞতার ফাঁকফোকর দিয়েই ঢুকে পড়ে রোগবালাই। বেশির ভাগ হৃদ্রোগ নীরব ঘাতক। কিন্তু ঝুঁকিগুলো জানা থাকলে সতর্ক হওয়া যায়। তাই নিজেকে জানুন। নিজের রক্তচাপ মাঝেমধ্যে মাপুন। আপনার রক্তে শর্করা, চর্বির পরিমাণ কেমন তা বছরে একবার অন্তত জানার চেষ্টা করুন। এমনকি ওজন বাড়ছে না কমছে, উচ্চতা অনুযায়ী ওজন ঠিক আছে কি না, খেয়াল করুন। লক্ষ করুন আপনার পরিবারে মা-বাবা, আপন ভাইবোনদেরও হৃদ্রোগ দেখা দিয়েছে কি না।
খাদ্যাভ্যাসে খেয়াল রাখুন
কেবল নিজেকে নয়, পরিবারের সবাইকে নিয়ে সুস্থ থাকা জরুরি। তাই বাড়ির খাদ্যাভ্যাসে অন্তত পাঁচ পদের তাজা ফলমূল-শাকসবজি রাখুন প্রতিদিন। প্রক্রিয়াজাত ও প্যাকেটজাত খাবার যথাসম্ভব এড়িয়ে চলুন। লবণ খাওয়া কমান। চিনিযুক্ত পানীয়ও ধীরে ধীরে কমিয়ে দিন, পিপাসা মেটাতে ঘরে-বাইরে সাধারণ পানিই বেছে নিন।
বাদ দিন মন্দ অভ্যাস
ধূমপানকে চিরতরে না বলে দিন। হার্ট সুস্থ রাখতে এটা সবচেয়ে জোরালো পদক্ষেপ। সিগারেট ছেড়ে দেওয়ার দুই বছর পর হৃদ্রোগের ঝুঁকি অনেকটাই কমে যায়। আর ১৫ বছর পর আপনার ঝুঁকি একজন অধূমপায়ীর সমান হয়ে যায়। পরোক্ষ ধূমপান আপনার সন্তান ও পরিবারের সদস্যদের ঝুঁকি বাড়িয়ে দিচ্ছে এটাও খেয়াল করবেন।
বেরিয়ে পড়ুন
সচল থাকুন। প্রতিদিন আধা ঘণ্টা বা সপ্তাহে অন্তত ১৫০ মিনিট মাঝারি মানের ব্যায়াম; যেমন: হাঁটা, সাইকেল চালনা, সাঁতার ইত্যাদি হৃদ্রোগের ঝুঁকি অনেকটাই কমিয়ে দেবে। দৈনন্দিন জীবনে ক্রিয়াশীলতা বাড়ান। যেমন: গাড়ি বাদ দিয়ে হাঁটুন, লিফট ছেড়ে সিঁড়ি ব্যবহার করুন, ঘরের কাজ করুন, বাগানে কাজ করুন, সন্তানদের নিয়ে খেলাধুলা করুন।
ডা. শরদিন্দু শেখর রায়
হৃদ্রোগ বিশেষজ্ঞ, জাতীয় হৃদ্রোগ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল