গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা অনেকেরই আছে। সাধারণত বুকজ্বলা, অতিরিক্ত ঢেকুর ওঠা, পেটব্যথা, পেটজ্বলা, পেটফাঁপা, পেটে অতিরিক্ত গ্যাস, বদহজম, কোষ্ঠকাঠিন্য ইত্যাদি উপসর্গকে গ্যাস্ট্রিক বলে। সময়মতো না খাওয়া, বাইরের খাবার খাওয়া, অতিরিক্ত তেল–মসলাযুক্ত খাবার খাওয়া, অতিরিক্ত খাবার খাওয়া, ধূমপান, মদপান, কম ঘুমানোর মতো অভ্যাসের কারণে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা হয়।
এন্ডোস্কপি করলে পাকস্থলী বা ক্ষুদ্রান্ত্রের অগ্রভাগে ক্ষত পাওয়া গেলে তাকে পেপটিক আলসার বলা হয়। এর নির্দিষ্ট চিকিৎসা আছে। আবার কোনো ক্ষত বা আলসার না থেকে কেবল গ্যাস্ট্রাইটিস (প্রদাহ) থাকতে পারে। অনেক সময় হেলিকোব্যাকটার পাইলোরি নামের সংক্রমণ থেকে প্রদাহ বা ক্ষত হয়। এরও চিকিৎসা আছে। এর বাইরে একটি বড়সংখ্যক রোগীর কোনো ক্ষত বা প্রদাহ নেই। তাঁদের যা হয়, তা হলো নন–আলসার ডিসপেপসিয়া। মানে হজমের রস ওপরে উঠে এসে অস্বস্তি সৃষ্টি করে।
গ্যাস্ট্রিকের সঠিক চিকিৎসা না করে অনেকে মাসের পর মাস এন্টাসিড সিরাপ, ওমিপ্রাজল গোত্রের ওষুধ, ডমপেরিডোন গোত্রের ওষুধ সেবন করেন। গ্যাস্ট্রিক সমস্যা সমাধানে এসব ওষুধের বেশির ভাগেরই কোনো প্রয়োজন নেই। শুধু খাওয়াদাওয়া ও জীবনযাপনের নিয়ম মেনে চললেই সুস্থ থাকতে পারবেন। যাঁদের বয়স বেশি, তাঁদের উচিত চিকিৎসকের কাছে গিয়ে রোগ নির্ণয় করে ব্যবস্থা নেওযা।
দীর্ঘ মেয়াদে গ্যাস্ট্রিকের ওষুধ খাওয়ার কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াও আছে। এতে টাইফয়েডের মতো কিছু সংক্রমণ হতে পারে। এ ছাড়া রক্তশূন্যতা ও হাড়ক্ষয় রোগ হতে পারে। কিডনি রোগীদের অ্যান্টাসিড–জাতীয় ওষুধে মারাত্মক সমস্যা হতে পারে। দীর্ঘ মেয়াদে এসব ওষুধ খেলে পাকস্থলীর পিএইচ পরিবর্তিত হয়ে যায়, এমনকি পাকস্থলীর ক্যানসারও হতে পারে।
রেজিস্টার্ড চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া কোনো ওষুধই খাওয়া উচিত নয়। চিকিৎসক এক মাস বা দুই মাসের জন্য লিখে দিলে তা সারা বছর খাওয়া যাবে না।
পেটের সমস্যা যদি দীর্ঘ হয়, তাহলে চিকিৎসকের কাছে গিয়ে সঠিক রোগ নির্ণয় করে চিকিৎসা নিতে হবে। খাবার ও জীবনযাপনের সঠিক নিয়ম মেনে চলতে হবে। যেমন সঠিক সময়ে খাবার খাওয়া, বাইরের খাবার যথাসম্ভব এড়িয়ে চলা, অতিরিক্ত তেল–মসলাযুক্ত খাবার পরিহার করা, বাসি খাবার না খাওয়া, পরিমিত পরিমাণে খাওয়া, ধূমপান ও মদপান না করা এবং অধিক রাত না জাগা।