নিয়মিত ও নির্দিষ্ট সময় পরপর খাবার খান। বেশি খিদে লাগতে দেবেন না। পরিমিত পরিমাণে স্বাস্থ্যকর নাশতা, ফলমূল, দুধ খাবেন।
অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার পর অনেকেরই নানা ধরনের খাবারের প্রতি তীব্র আসক্তি তৈরি হয়। যিনি আগে মিষ্টি পছন্দ করতেন না, তাঁকে এ সময় দেখা যায় মিষ্টিজাতীয় খাবার খেয়ে সাবাড় করে ফেলতে। কেউ ঝাল-মসলাদার খাবারে আসক্ত হন, কেউবা ফাস্ট ফুডের জন্য পাগল হয়ে ওঠেন। কেউ আবার সারা দিন টক খেতে থাকেন। গর্ভাবস্থায় হঠাৎ নির্দিষ্ট কিছু খাবারের প্রতি এই মারাত্মক আসক্তিকে বলে ফুড ক্র্যাভিং।
ক্র্যাভিং কেন হয়
■ গর্ভাবস্থায় কোনো খাবারে এভাবে অস্বাভাবিক আসক্তি বা আচরণগত এই পরিবর্তনের সুস্পষ্ট কোনো কারণ এখনো জানা যায়নি। তবে এ সময় শরীরে বিভিন্ন হরমোনের আধিক্য দেখা দেয়। এই হরমোনের প্রভাবে মায়ের খাদ্যাভ্যাসে ব্যাপক পরিবর্তন হয় এবং গর্ভস্থ শিশুর বেড়ে ওঠার জন্য খাবারের চাহিদা বেড়ে যায়।
■ নিউরোপেপ্টাইড ওয়াই নামে এক ধরনের অ্যামাইনো অ্যাসিড মস্তিস্কের হাইপোথ্যালামাস থেকে নিঃসৃত হয়ে ক্ষুধা, তৃপ্তি বা রুচির সংকেতে গোলমাল করে ফেলে। গবেষণায় দেখা গেছে, গর্ভাবস্থায় নিউরোপেপ্টাইড ওয়াইয়ের নিঃসরণ অনেক বেড়ে যায়।
■ অনিদ্রা বা রাতে ঘুম কম হওয়াকেও এই ফুড ক্র্যাভিংয়ের কারণ হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
কখন হয়
■ গর্ভাবস্থার প্রথম তিন মাসের শেষ দিক থেকে শুরু।
■ গর্ভাবস্থার চার–ছয় মাস পর্যন্ত সময়ে ফুড ক্র্যাভিং সবচেয়ে বেশি হয়।
■ শেষের দিকে আবার কমতে থাকে।
অস্বাস্থ্যকর খাবার এড়াতে যা করবেন
■ নিয়মিত ও নির্দিষ্ট সময় পরপর খাবার খান। বেশি খিদে লাগতে দেবেন না।
■ পরিমিত পরিমাণে স্বাস্থ্যকর নাশতা, ফলমূল, দুধ খাবেন। আঁশযুক্ত খাবার খেলে তৃপ্তি অনেকক্ষণ থাকে।
■ খুব ক্ষুধার্ত অবস্থায় ফাস্ট ফুড বা খাবারের দোকানে খেতে যাবেন না।
■ রাতে পর্যাপ্ত ঘুমানোর চেষ্টা করুন।
■ মনকে নিয়ন্ত্রণ করুন।
ডা. শামীমা ইয়াসমিন, সহকারী রেজিস্ট্রার, মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল।