এ বছর রোজা একেবারে বৈশাখ মাসে শুরু হলো। গ্রীষ্মের তেজও এ বছর যেন বেশি। তাই এবার রমজানে রোজাদারদের পানিশূন্যতা, লবণশূন্যতা ও বদহজম যেন না হয়, সেদিকে নজর দিতে হবে বেশি।
পানি আর পানীয়
ইফতার থেকে সাহ্রি পর্যন্ত দুই থেকে আড়াই লিটার পানি পান করে ফেলতে হবে। ইফতারে রোজা ভাঙার সময় আমরা শরবত পছন্দ করি। লেবু, তোকমা, তেঁতুল, টকদই, দুধ, বেল, কাঁচা আম, ইসবগুলের ভুসি ইত্যাদি উপকরণ দিয়ে শরবত তৈরি করা যায়। ডায়াবেটিসের রোগীরা চিনি না দিয়ে বিকল্প চিনি ব্যবহার করতে পারেন বা ডাবের পানি পান করতে পারেন।
পানিশূন্যতা রোধে খাবার
ইফতারে ভেজানো চিড়া দিয়ে দই-কলা, শসার রায়তা, নানা রকমের ফল পানিশূন্যতা রোধ করবে। দুধ-মুড়ি, নরম খিচুড়িও ভালো খাবার। ঐতিহ্যবাহী ইফতারি যেমন পেঁয়াজি, বেগুনি, কাটলেট, চপ, কাবাব, জিলাপি, তেহারি ইত্যাদি যেমন ক্যালরিবহুল, তেমনি এই গরমে অস্বস্তিকর হতে পারে। তেল কমানোর জন্য কাঁচা ছোলা বা সেদ্ধ ছোলার সঙ্গে শসা, পেঁয়াজ, টমেটো, আদা কুচি, পুদিনা মিশিয়ে সালাদের মতো করে খেতে পারেন। চটপটিও তেলবিহীন। ইফতারের প্লেটে একটি বা দুটি তেলে ভাজা খাবার রাখুন, তবে তেল যেন বহু ব্যবহৃত না হয়।
চাই ফলমূল
রমজানে শাকসবজি তেমন খাওয়ার সুযোগ হয় না। তাই তাজা ফল বেশি খাওয়া ভালো। এতে কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হয়, আঁশের চাহিদা মেটে, মেলে প্রচুর পটাশিয়াম, খনিজ, ভিটামিন। খেজুরে উচ্চ মাত্রার আয়রন, শর্করা, ক্যালসিয়াম আছে, কিন্তু এতে ক্যালরিও অনেক। বড়জোর দুটি খেজুর রাখুন প্লেটে।
একটি আদর্শ ইফতারের প্লেট
এক গ্লাস শরবত বা ডাবের পানি। হালকা তেলে ভাজা বা সেদ্ধ বা কাঁচা ছোলা আধা কাপ, মুড়ি মাখানো হলে পৌনে এক কাপ, দুটি খেজুর, পেঁয়াজি/আলুর চপ/পাকোড়া/কাবাব—যেকোনো দুটি আইটেম থেকে দুটি করে। যেদিন হালিম থাকবে সেদিন বেসন বা ডালের তৈরি খাবার বাদ দিন। ফল নিন ইচ্ছামতো (মাল্টা, পেয়ারা, চাঁপা কলা, তরমুজ, বাঙ্গি, আনারস)। শসার রায়তা/টকদই দুই চা-চামচ থাকতে পারে।
প্রধান পুষ্টিবিদ, বারডেম হাসপাতাল