বিয়ের টুকটুকে লাল বেনারসি শাড়িটি সযত্নে আলমারিতে তুলে রেখেছিলেন ফাইরুজ (ছদ্মনাম)। ছয় মাস যেতে না যেতেই শাড়িটি হাতে নিয়ে খেয়াল করলেন, শাড়ির রং বদলে গেছে। ঠিক যেন আর লাল নেই, গোলাপি গোলাপি। এমনটি হয়তো আপনার ক্ষেত্রেও ঘটেছে। এত সাধের দামি বেনারসি শাড়ির রং বদলে যাওয়ায় মনটাও হয়তো খারাপ হয়েছে। কিন্তু এটি জেনে একটু হলেও হয়তো স্বস্তি পাবেন যে, রং বদলে যাওয়া মানেই এই নয় যে আপনার শাড়িটি নকল।
অনেক দিন এক ভাঁজে রেখে দিলে রং ছেড়ে দেয় বেনারসি। এ জন্যই লাল শাড়ি গোলাপি দেখায়, বললেন ‘বেনারসি শাড়ি কুঠি’র মুমতাজ আশরাফি। মিরপুরের ‘তানহা বেনারসি কর্নার’-এর শাড়ি বিক্রেতা রাহাত শুভ বলেন, বেনারসি শাড়ি যেহেতু রঙিন চকচকে জরি সুতায় বোনা হয়, সেহেতু এটি খুব উজ্জ্বল রঙের হয়। এই উজ্জ্বল রং নষ্ট হয়ে যাওয়ার শঙ্কা খুব বেশি। তাই শাড়ির রং ঠিক রাখতে চাই সঠিক যত্ন।
চলুন জেনে নেওয়া যাক, বেনারসি শাড়ির রং ঠিক রাখার কিছু উপায়।
সঠিক নিয়মে রোদে দেওয়া
বেনারসি শাড়ির বিক্রেতারা বলেন, রং সুন্দর রাখতে শাড়ি রোদে দেওয়া অত্যন্ত জরুরি। কিন্তু খুব কড়া রোদ বেনারসি শাড়ির জন্য ক্ষতিকর। এতে শাড়ির রং সম্পূর্ণ ঝলসে যেতে পারে। এ জন্য দু-তিন মাস পরপর ভাঁজ সম্পূর্ণ খুলে দিনের প্রথম ভাগের রোদে কিছুক্ষণের জন্য রাখলে শাড়ির রং সুন্দর থাকবে।
এক ভাঁজে বেশি দিন নয়
অনেক দিন একভাবে রেখে দিলে বেনারসি শাড়ি ভাঁজে ভাঁজে রং ওঠে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। তাই অন্তত মাসখানেক পরপর শাড়ির ভাঁজ বদলে দেওয়া প্রয়োজন, বলছিলেন ধানমন্ডির ‘সপুরা সিল্ক’-এর শাড়ি বিক্রেতা মানিক। তিনি জানান, শাড়ির ভাঁজে ভাঁজে সাদা কাগজ রাখা ভালো। এতে কাপড়ে কাপড়ে ঘষা খেয়ে রং ওঠার আশঙ্কা থাকে না।
পলিশ করতে হবে
একবার পরার পর বেনারসি শাড়ি পলিশ করিয়ে নেওয়ার পরামর্শ দিলেন মুমতাজ আশরাফি। তিনি বলেন, এটি একধরনের কেমিক্যাল ওয়াশ। রোলে পেঁচিয়ে করা হয়। শাড়ি তুলে রাখার আগে পলিশ করিয়ে নিলে রং নষ্ট হওয়ার ভয় থাকে না। যেখান থেকে শাড়ি কিনেছেন, সেখানে পলিশ করানোই ভালো। বেনারসি শাড়ি পলিশ করাতে খরচ হতে পারে ৫০০ টাকা থেকে ১ হাজার টাকা।
নিজেই ইস্তিরি করুন
বেনারসি শাড়ি খুব ভারী ইস্তিরি দিয়ে আয়রন না করার পরামর্শ দিলেন মুমতাজ আশরাফি। তিনি বলেন, বেশি তাপে শাড়ির রং নষ্ট হয়ে যেতে পারে। তাই পরার আগে নিজেই হালকা তাপে ইস্তিরি করে নিন।