মেট গালায় আলিয়া ভাট ও ইশা আম্বানিসহ ৫ ভারতীয় নারীর জমকালো সাজ

এ বছর মেট গালার জমকালো আয়োজনে দ্যুতি ছড়িয়েছেন পাঁচ ভারতীয় নারী। ছিলেন আলিয়া ভাট, ইশা আম্বানিসহ আরও তিনজন। তাঁদের চোখধাঁধানো সাজপোশাকে ভারতীয় সত্তার বহিঃপ্রকাশের সঙ্গে ছিল আভিজাত্য। দেখে নিন যুক্তরাষ্ট্রের মেট্রোপলিটন মিউজিয়াম অব আর্টে আয়োজিত মেট গালা সন্ধ্যায় ভারতীয় নারীদের একঝলক—

স্নিগ্ধ শাড়িতে আলিয়া ভাট

ডিজাইনার সব্যসাচীর নকশায় মোড়া আলিয়া ভাট

যেন একদম ভারতীয় রাজকন্যা। দ্বিতীয়বারের মতো মেট গালায় হাজির হলেন বলিউড অভিনেত্রী আলিয়া ভাট। গায়ে জড়িয়েছিলেন হালকা সবুজ-নীলাভ রঙের নেট কাপড়ের শাড়িতে ফুল-পাতার মোটিফের চোখজুড়ানো শাড়ি। পুরোটাই সুতা, পাথর আর কারদানার এমব্লিশমেন্টের কারুকাজ। নাটকীয়তা ছিল শাড়ির লম্বা আঁচলে। ভারতীয় ফ্যাশন ডিজাইনার সব্যসাচী মুখোপাধ্যায়ের ‘বেঙ্গল রয়্যাল কালেকশন’-এর এই শাড়ি ১৬৩ জন মিলে ১ হাজার ৯৬৫ ঘণ্টা ধরে তৈরি করেছেন। পিঠখোলা ব্লাউজের পেছনে ছিল মোটা ফিতা। গয়নাও ছিল দেখার মতো। খোঁপা করা চুলে পরেছিলেন সব্যসাচীরই নকশা করা পাথরের ওভারব্যান্ড ও টায়রা। কানে ছিল ম্যাচিং দুল। তবে হাত ও গলা ছিল একেবারেই খালি।

ইশা আম্বানির শাড়ি ধাঁচের গাউন

রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিজের পরিচালক আম্বানি-কন্যা ইশা আম্বানির মেট গালার পোশাক

ঝলমলে সোনালি রঙে যেন ভারতীয় আভিজাত্যের সর্বোচ্চটাই প্রকাশ করেছেন রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিজের পরিচালক আম্বানি-কন্যা ইশা আম্বানি। তাঁর পোশাকটি হঠাৎ দেখলে মনে হবে, ভিন্নভাবে পরা শাড়ি; আবার কিছুক্ষণ তাকিয়ে থাকলে মনে হবে, আধুনিক গাউন। আধুনিক বটে, কিন্তু গাউন না বলে একে ফ্যাশন–সচেতনেরা বলছেন—শাড়ি-গাউন। ভারতীয় ডিজাইনার রাহুল মিশ্রর এই পোশাকের কারুকাজের পুরোটা জুড়েই চুমকি, সুতার নকশি এবং জারদৌসির কাজ। পোশাকটির লম্বা আঁচল যেন বাহারি ফুলের বাগান, যেখানে খেলা করছে মৌমাছি আর প্রজাপতি। এই পোশাক তৈরি করতে সময় লেগেছে ১০ হাজার ঘণ্টার বেশি। নজর কেড়েছে তাঁর গয়নাও। হাতে পদ্ম ব্রেসলেট, তোতাপাখির কানের দুল এবং গলায় একটি ফুলের জিজাইনের চোকার। আধখোলা চুল আর পোশাকের রঙের সঙ্গে মিলিয়ে নিয়েছিলেন সোনালি মেকআপ।

প্রজাপতি পোশাকে মোনা প্যাটেল

ধূসর বডিকন পোশাকের মূল আবহ ছিল ‘মেকানিক্যাল প্রজাপতি’

এ বছর প্রথমবারের মতো মেট গালায় উপস্থিত হয়েছিলেন ভারতের অন্যতম ফ্যাশন উদ্যোক্তা মোনা প্যাটেল। ধূসর বডিকন পোশাকের মূল আবহ ছিল ‘মেকানিক্যাল প্রজাপতি’। ল রোচের স্টাইল করা এই সাজের মূল আকর্ষণ ছিল ছোট ছোট প্রজাপতির পাখার মতো হাতা। টেনে খোপা বাঁধা চুল আর নিউট্রাল মেকআপ। কানে ছিল একজোড়া সাদা হীরার কানের দুল। গুজরাটের বাসিন্দা মোনা প্যাটেল ২০০৩ সালে ফ্যাশন উদ্যোক্তা হিসেবে কাজ শুরু করলেও খুব কম সময়ে হয়েছেন মিলিয়নিয়ার। আজকাল তিনি স্থায়ীভাবে বাস করছেন যুক্তরাষ্ট্রে।

নাতাশা পুনামওয়ালার জাল জড়ানো পোশাক

ডিজাইনার জন গ্যালিয়ানোর ডিজাইনে নাতাশা

পশ্চিমা ধাঁচের সাদা পোশাক পরেছিলেন নাতাশা। মাথায় সাদা হ্যাট থেকে পায়ের জুতা—সবকিছুতেই ছিল কালো সুতার জাল। ভারতীয় ব্যবসায়ী নাতাশা পুনামওয়ালা এ বছরের মেট গালার জন্য বেছে নিয়েছিলেন ডিজাইনার জন গ্যালিয়ানোর ডিজাইন করা পোশাক। হাতে, গলায় ও কানে পরেছিলেন সাদা হীরার গয়না।

দুই শ ক্যারেটের হীরার গয়নায় সুধা রেড্ডি

ভারতীয় বিলিয়নিয়ার সুধা রেড্ডি পরেছিলেন ২০০ কোটি টাকার বেশি মূল্যের গয়না

ভারতীয় ব্যবসায়ী ও বিলিয়নিয়ার সুধা রেড্ডি মেট গালায় পরেছিলেন সোনালি রঙের ঝলমলে গাউন। তবে পোশাক ছাপিয়ে গয়নাতেই বাজিমাত করেছেন তিনি। গায়ে জড়িয়েছিলেন ২০০ ক্যারেটের হীরা। গলায় পরেছিলেন আমরে এতেরনো ব্র্যান্ডের ১৮০ ক্যারেটের একটি সাদা হীরার হার, যাতে বাসনো ছিল ২৫ ক্যারেটের একটি ও ২০ ক্যারেটের ৪টি হৃদয়াকৃতির হীরা। আঙুলে পরেছিলেন ২৩ ও ২০ ক্যারেটের ২টি হীরার আংটি। সব মিলিয়ে রেড্ডি পরেছিলেন ২০০ কোটি টাকার বেশি মূল্যের গয়না।