জিজি হাদিদ ও বেলা হাদিদ—মডেলদের দুনিয়ায় দুই বোনই জগৎখ্যাত। শুরু থেকেই দুজন ফিলিস্তিনে ইসরায়েলি হামলার তীব্র সমালোচনা করে এসেছেন। এবার তাঁরা ফিলিস্তিনে মানবিক কাজ করছে—এ রকম চারটি আন্তর্জাতিক সংস্থাকে ১০ লাখ ডলার বা প্রায় ১১ কোটি ৭৩ লাখ টাকা দেওয়ার আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দিয়েছেন।
ডেলাইনসহ একাধিক আন্তর্জাতিক সংস্থা বলছে, এই টাকা শিগগিরই ফিলিস্তিনি শিশু ও পরিবারদের পুনর্বাসন, স্বাস্থ্য, চিকিৎসা, মৌলিক চাহিদা নিয়ে কাজ করে, এ রকম চারটি প্রতিষ্ঠানের অ্যাকাউন্টে যোগ হবে। সংস্থাগুলো হলো—হিল প্যালেস্টাইন, প্যালেস্টাইন চিলড্রেনস রিলিফ ফান্ড (পিসিআরএফ), ওয়ার্ল্ড সেন্ট্রাল কিচেন (ডব্লিউসিকে) ও ইউনাইটেড নেশনস রিলিফ অ্যান্ড ওয়ার্কস এজেন্সি (ইউএনআরডব্লিউএ)। ১০ লাখ ডলার সমানভাবে প্রতিষ্ঠানগুলোকে ভাগ করে দেওয়া হবে।
সুপারমডেল বেলা হাদিদ ও জিজি হাদিদের বাবা মোহামেদ হাদিদ ফিলিস্তিনি বংশোদ্ভূত মার্কিন ব্যবসায়ী। বেলা আর জিজি দুজনেই ‘গর্বিত ফিলিস্তিনি’ হিসেবে নিজেদের পরিচয় দেন।
সম্প্রতি ৭৭তম কান চলচ্চিত্র উৎসবের শেষ দিন ফিলিস্তিনের স্বাধীনতার প্রতীক হিসেবে ‘স্কার্ফ কেফিয়াহ’ দিয়ে তৈরি একটি পোশাকে ভূমধ্যসাগরপাড়ে দেখা দেন বেলা। এভাবেই ফিলিস্তিনের পক্ষে নিজের শক্ত অবস্থান জানান দেন তিনি। এই পোশাক পরেই একটি প্ল্যাকার্ড হাতে নিয়ে ছবি তুলেছেন, সেই ছবি ইনস্টাগ্রামে শেয়ার করে বেলা হাদিদ লিখেছেন, ‘ইটস ফ্রি প্যালেস্টাইন, টিল প্যালেস্টাইন ইজ ফ্রি’। এর আগে এক ইনস্টাগ্রাম পোস্টে বেলা লিখেছিলেন, ‘ইসরায়েল একমাত্র দেশ, যারা শিশুদের যুদ্ধবন্দী রাখে।’ পরে প্রবল তোপের মুখে পোস্টটি মুছে ফেলেন তিনি। এর আগেও গাজায় ইসরায়েলের হামলার সমালোচনা করে বিপাকে পড়েছিলেন বেলা। বেশ কিছু শো আর চুক্তিও বাতিল হয়েছিল। তবে তাতে ক্ষান্ত দেননি। পরিস্থিতি একটু স্বাভাবিক হয়ে এলেই নতুন করে একেক অভিনব উপায়ে ফিলিস্তিনের পক্ষে নিজের অবস্থান জানান দেন তিনি।
কেফিয়াহ পোশাকে কয়েকটা ছবি পোস্ট করে ২৭ বছর বয়সী বেলা ইনস্টাগ্রামে তাঁর ৬ কোটি ১২ লাখ অনুসারীর উদ্দেশে লিখেছেন, ‘ফিলিস্তিন আমার হৃদয়ে, রক্তে, হৃৎপিণ্ডে। সব সময়ই থাকবে। এই ভয়াবহ সময়েও ফিলিস্তিনের ঐতিহ্যবাহী পোশাক আমাকে গর্বিত করে। এটা একটা কেফিয়াহ পোশাক। ২০০১ সালে পোশাকটি তৈরি করেন ফিলিস্তিনি ফ্যাশন ডিজাইনার হাসিদার মোর্তেজা। ইতিহাস, ভালোবাসা, ফিলিস্তিনের ঐতিহাসিক এমব্রয়ডারি আর প্রতিবাদ-প্রতিরোধ মিলে তৈরি হয়েছে এই পোশাক।’
অন্যদিকে জিজি তাঁর অবস্থান জানান দিয়েছিলেন আগেই। ফিলিস্তিনে যখন ইসরায়েলি হামলা শুরু হয়, সে সময়ই তিনি ইনস্টাগ্রামে লিখেছেন, ‘এটা একেবারেই অযৌক্তিক। এর চেয়ে জঘন্য অন্যায় আর নির্মম ট্র্যাজেডি আর হতে পারে না। চিন্তা করলেই অসুস্থ লাগে। এই সংঘাতে অসংখ্য নিরপরাধ মানুষ মারা পড়ছে, যাদের বেশির ভাগই নিষ্পাপ শিশু। ফিলিস্তিনের মানুষের প্রতি আমার হৃদয়ের গভীর থেকে সহমর্মিতা।’
সুপারমডেল জিজি আর তাঁর ছোট বোন বেলা দুজনেই প্রকাশ্যে ফিলিস্তিনের প্রতি নিজেদের সমর্থন আর সহমর্মিতার কথা জানিয়েছেন।
বিবিসির প্রতিবেদন অনুসারে, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে ২০২৪ সালের ৩১ মে পর্যন্ত ইসরায়েলি হামলায় অন্তত ৩২ হাজার ৪০০ ফিলিস্তিনি মারা গেছেন। যাঁদের বেশির ভাগই নারী ও শিশু।