আম্বানি বাড়ির নারীরা কেন সোনার গয়না পরেন না

ভারতীয় ধনকুবের, রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক মুকেশ আম্বানির স্ত্রী নীতা আম্বানি; কন্যা ইশা আম্বানি; বড় ছেলে আকাশ আম্বানি ও ছোট ছেলে অনন্ত আম্বানি। মুকেশের বড় পুত্রবধূ শ্লোকা মেহতা আর ছোট পুত্রবধূ রাধিকা মার্চেন্ট।

রাধিকা মার্চেন্ট
ছবি: ইনস্টাগ্রাম থেকে

মজার ব্যাপার হলো, আম্বানি–পুত্রদের তুলনায় কিন্তু তাঁদের স্ত্রীরাই ভারতে বেশি জনপ্রিয়। নীতা আম্বানিও জনপ্রিয়তায় সমানে সমানে পাল্লা দেবেন মুকেশ আম্বানির সঙ্গে।

নীতা আম্বানি

আম্বানি বাড়ির এই চার নারীর কেউই প্রথম সারির কোনো বলিউড তারকা থেকে কম যান না। কেননা, তাঁরা যা–ই করেন, যা–ই পরেন, যেখানেই যান, যা–ই বলেন, তাই–ই হয় সংবাদের শিরোনাম। এই নারীরা সবাই গয়না পরতে ভালোবাসেন।

ইশা আম্বানি

আম্বানি বাড়ির নারীরা পারিবারিক ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যেই ভারী গয়না, অলংকার পরতে ভালোবাসেন। অথচ তাঁরা কেউ–ই সোনার গয়না পরেন না। এই চার নারীকে খুব কমই সোনার গয়নায় দেখা গেছে।

শ্লোকা মেহতা

প্রশ্ন আসতে পারে, কেন আম্বানি বাড়ির নারীরা সোনার গয়না পরেন না?

১ লাখ ৬১ হাজার কোটি টাকার মালিক, এশিয়ার সেরা ধনী ও বিশ্বের নবম ধনী মুকেশ আম্বানি। আম্বানি পরিবারের একমাত্র কন্যা ইশা আম্বানির বিয়ের লেহেঙ্গাটিকে বলা হচ্ছে ভারতের সবচেয়ে দামি লেহাঙ্গা। এটির দাম ২০১৮ সালেই ছিল ৯০ কোটি রুপি বা বাংলাদেশি টাকায় ১২০ কোটি টাকা।

ইশার পরনে ১২০ কোটি টাকার লেহেঙ্গা

মাড়োয়ারি ব্যবসায়ী পিরামল পরিবারের একমাত্র ছেলে আনন্দ পিরামলের সঙ্গে ইশা আম্বানির বিয়ে বিশ্বের সবচেয়ে ব্যয়বহুল পাঁচ বিয়ের একটি। সেই বিয়েতে খরচ হয়েছিল প্রায় ১ হাজার কোটি টাকা। ভারতের নামকরা ডিজাইনার আবু জানি এবং সন্দীপ খোসলার নকশা করা ঘিয়ে রঙের এই লেহেঙ্গা সম্পর্কে খুব বেশি তথ্য জানা যায় না। তবে লেহেঙ্গাটি বানানো হয়েছিল ইশার মা নীতা অম্বানিকে শ্রদ্ধা জানাতে।

মা ও বাবার সঙ্গে ইশা

জারদৌসি পাড়ের কারুকাজের লেহেঙ্গায় ছিল দুটি ওড়না। একটি গাঢ় লাল রঙের, অন্যটি ঘিয়ে রঙের। গাঢ় লাল ওড়নাটি নীতা আম্বানির বিয়ের শাড়ি থেকে তৈরি। সেখানে উঠে এসেছে নীতা আম্বানি ও মুকেশ আম্বানির প্রেমকাহিনি। এই লেহেঙ্গাতে হীরা, প্লাটিনামসহ নানা মূল্যবান রত্নপাথর ব্যবহার করা হলেও সোনা কিন্তু ব্যবহার করা হয়নি।

রাধিকা মার্চেন্ট

২০১০ সালে বিশ্বের অন্যতম ব্যয়বহুল বাড়ি ‘অ্যান্টিলিয়া’র নির্মাণ করেন মুকেশ। ২৭ তলার সেই বাড়িতে ২০১৩ থেকে বাস করছেন মুকেশ ও তাঁর পরিবার। অ্যান্টিলিয়া গড়ে উঠেছে ৪ লাখ বর্গফুট জমির ওপর।

অ্যান্টিলিয়া নামের এই বাড়িটি আম্বানিদের

এই বাড়িতে আছে ৩টি হেলিপ্যাড, ১৬৮টি গ্যারেজ, একটি বলরুম, দ্রুতগতিসম্পন্ন ৯টি লিফট, ৫০ আসনের থিয়েটার, সুইমিংপুল, স্পা, স্বাস্থ্যকেন্দ্র, মন্দির, স্নো রুম ইত্যাদি। এই বাড়ির বাথরুমে বাথটাব, বেসিনের কলগুলো অবশ্য সোনায় মোড়ানো। নীতা আম্বানির লাক্সারি বাথরুমটি স্বয়ংক্রিয় বা অটোমেটিক বাথরুম। এই বাথরুমের টাইলসে আছে থ্রিডি ইফেক্টের সুবিধা! অর্থাৎ চাইলে এসব টাইলসে যেকোনো দৃশ্য ফুটিয়ে তোলা যায়। এটি বিশ্বের অন্যতম বিলাসবহুল বাথরুম।

এই বাড়ির ভেতরে হয়েছে ভোগ ইন্ডিয়ার ফটোশুট

তাই বুঝতেই পারছেন, সোনার গয়না আম্বানি বাড়ির নারীদের জন্য কিঞ্চিৎ ‘অবমাননাকর’। কেননা তাঁরা যে ব্যাগ, জুতা ব্যবহার করেন, সেসব সোনা দিয়ে তৈরি। গয়না হিসেবে তাঁরা ব্যবহার করেন প্লাটিনাম, হীরা, পান্না, নীলকান্তমণি, চুনি, টোপাজ, ক্যাটস আইয়ের মতো পাথর।

আম্বানি পরিবার এক ফ্রেমে

সূত্র: ভোগ ইন্ডিয়া ও ইন্ডিয়া টুডে