ভাবুন তো, আপনি এমন একটা প্যান্ট পরেছেন, যার নকশা দেখে মনে হচ্ছে, আপনি বুঝি প্যান্টটা ভিজিয়ে ফেলেছেন! বুঝিয়ে বলছি ব্যাপারটা। ডেনিমের প্যান্ট, যেটিতে কুঁচকি বরাবর বেশ খানিকটা জায়গায় রাখা হয়েছে গাঢ় শেড। এই শেডটা এমনই ছড়ানো যে দেখে মনে হচ্ছে কুঁচকির কাছটা ভেজা!
এমন অদ্ভুত নকশার প্যান্ট হয়তো আপনি পরতে চাইবেন না। তবে অবিশ্বাস্য হলেও সত্য, ব্রিটিশ-ইতালীয় ব্র্যান্ড জর্ডানলুকার এই প্যান্টের খোঁজ আপনি অনলাইনে নিতে গেলেই দেখবেন, ‘সোল্ড আউট’! ২০২৩ সালে মিলান ফ্যাশন উইকের শরৎ–শীত কালেকশনের অংশ হিসেবে রানওয়েতে প্রদর্শন করা হয়েছিল এই প্যান্ট। এদিকে এর দাম দেখেও কিন্তু চক্ষু চড়কগাছ হওয়ার জোগাড়!
অনলাইনে সমালোচনার ঝড় উঠেছে এই প্যান্টের নকশা নিয়ে। এ প্রসঙ্গে অনলাইনে দেওয়া এক ব্যক্তির মন্তব্য প্রকাশ করেছে ব্রিটিশ ট্যাবলয়েড ‘দ্য সান’, বক্তব্যটি ছিল এমন, ‘এখন আর বাথরুমে যাওয়ার জন্য অপেক্ষা করার প্রয়োজন নেই। মূত্রত্যাগ করে প্যান্ট ভিজিয়ে ফেলে অনায়াসেই সেটাকে ডিজাইন বলে চালিয়ে দেওয়া যায়!’
একজন আবার প্রশ্ন করেছেন, ‘কেউ এমন প্যান্ট কেন পরবে?’, ‘স্টুপিড’ বা ‘মূঢ়’ হিসেবেও আখ্যা দিয়েছেন একজন। আরেকজন যোগ করেছেন, ‘প্যান্ট ভেজানোর আগপর্যন্ত আপনি “কুল” হতে পারবেন না।’
এমন সব নেতিবাচক মন্তব্যের জেরে এই প্যান্টের নামই হয়ে গেছে ‘পি স্টেইনড ডেনিম’! সে যতই নেতিবাচক মন্তব্যের ঝড় উঠুক না কেন, বুঝতেই পারছেন, প্যান্টের এমন নকশা দারুণ ব্যবসাসফল। জর্ডানলুকা ওই একই নকশায় একটু হালকা শেডও এনেছে। এই প্যান্টের দাম ৮১১ মার্কিন ডলার; তবে এখন বিক্রি হচ্ছে ছাড়ে, পাওয়া যাচ্ছে ৬০৮ মার্কিন ডলারে।
ভিন্নধারার ডিজাইন বাজারে এনে এর আগেও সাফল্য পেয়েছে ব্র্যান্ডটি, এই যেমন আড়াআড়ি জিপারের প্যান্ট। এমন অভিনব ডিজাইনে কারও কারও ভুরু কুঁচকে গেলেও ২০১৮ সালে প্রতিষ্ঠিত এই ব্র্যান্ড কিন্তু হালের ফ্যাশনধারায় দারুণ সাড়া ফেলেছে।
‘ভোগ বিজনেস’-এর প্রতিবেদন বলছে, ২০২৩ সালে জর্ডানলুকা তাদের পণ্য বিক্রি করে আয় করেছে পাঁচ লাখ মার্কিন ডলারের বেশি, আর এই অঙ্কটা ২০২২ সালের চেয়ে ১৫ শতাংশ বেশি। ফারফেচ, মেশিন-এ, মোডসেন্সের মতো আন্তর্জাতিক বিক্রয়প্রতিষ্ঠানের ওয়েবসাইটে দারুণ জনপ্রিয় এই ব্র্যান্ড। ভিন্নধারার কাজ করার এই মানসিকতা নিয়েই ফ্যাশন দুনিয়ায় ব্র্যান্ডটিকে আরও সামনে এগিয়ে নিতে চান এর ডিজাইনাররা।
সূত্র: নিউইয়র্ক পোস্ট