ওরা বলেছিল, আমার চেহারা বা শরীর কোনোটাই যথেষ্ট নারীসুলভ নয়: রাধিকা আপ্তে

অভিনয়ের বাইরেও একেক স্বতন্ত্র কারণে জনপ্রিয় হয়ে উঠছেন বলিউডের একেক নারী তারকা। এমনিতেই বলিউডে এখন নারীবাদের ঢেউ। শাহরুখ, রণবীর, অক্ষয়, এমনকি আমির খানদের ছবি যখন একের পর এক মুখ থুবড়ে পড়ছে, তখন নারীকেন্দ্রিক সিনেমাগুলো বক্স অফিসে আয় করছে শত কোটি টাকা। প্রিয়াঙ্কা চোপড়া তো একাই বলিউডের নারী অভিনেত্রীদের বাউন্ডারি ঠেলে বড় করেছেন অনেকটা। আলিয়া ভাটকে বলা হচ্ছে বক্স অফিসের নয়া ‘অমিতাভ বচ্চন’। ওদিকে সিনেমা ছাড়া মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে আলোচনায় দীপিকা পাড়ুকোন; পরিবেশ, প্রাণী অধিকার ও ভেগানিজম নিয়ে ভূমি পেড়নেকর এবং দিয়া মীর্জা; বডি পজিটিভিটি নিয়ে সোনাক্ষী সিনহা ও হুমা কুরেশী আর এদিকে প্লাস্টিক সার্জারি নিয়ে রাধিকা আপ্তে। সম্প্রতি ‘কসমোপলিটন’ ম্যাগাজিনের সঙ্গে কথোপকথনে আরও একবার সরব হলেন আপ্তে।

আবারো কসমোপলিটানের প্রচ্ছদে রাধিকা
ছবি: ইনস্টাগ্রাম থেকে

‘বোল্ড অ্যান্ড বিউটিফুল’ রাধিকা আপ্তে বরাবরই ‘মুখরা রমণী’ হিসেবে পরিচিত। প্রথম সাক্ষাৎকার থেকেই ভক্তরা জানেন, তিনি রাখঢাক রেখে কথা বলতে অভ্যস্ত নন। কসমোপলিটনকে এই গুণী অভিনেত্রী জানান, শুরু থেকেই বলিউডের প্রযোজক, কাস্টিং ডিরেক্টর আর পরিচালকদের পক্ষ থেকে তাঁর জন্য প্লাস্টিক সার্জারির উপদেশ ছিল। ৩৫ বছর বয়সী এই অভিনেত্রী বলেন, ‘আমাকে দেখে প্রথম দিন প্রথম মিটিংয়েই এক কাস্টিং ডিরেক্টর বলেছিলেন, আমার চেহারা বা শরীর কোনোটাই নাকি যথেষ্ট নারীসুলভ নয়। প্রথমে তিনি আমাকে নাকে প্লাস্টিক সার্জারি করতে বলেন। তারপর বুকে। সুতরাং, সিনেমাটা আমি পাইনি।’

রাধিকা শরীর ও চেহারা নিয়ে বলিউডে বডিশেমিংয়ের শিকার হন

এরপরই বাংলা সিনেমা ‘অন্তহীন’ (২০০৯) দিয়ে ক্যারিয়ারের খাতা খোলেন রাধিকা। আর বলিউড থেকে মুখ ফিরিয়ে দক্ষিণি সিনেমায় অডিশন দিতে থাকেন। বলিউডে দ্বিতীয়বার অডিশন দিতে এসে নাক আর বুকের পাশাপাশি শুনলেন চিবুকেও প্লাস্টিক সার্জারি করে ‘সংশোধন’ করতে হবে। এরপর একে একে শুনলেন, উরুতে এমনকি বোটক্স করাতে হবে। রাধিকা কসমোপলিটনকে বলেন, ‘অথচ প্রথমবার চুলে রং করাতেই আমার ৩০ বছর কেটে গেছে। হ্যাঁ, আমি ৩০ বছরে এসে চুলে রং করিয়েছি। আমার শরীরের নানা জায়গায় প্লাস্টিক সার্জারি করাতে হবে শুনে আমি মন খারাপ করেছি। মন খারাপ করেছি বলিউডে আমার ক্যারিয়ার নিয়ে। কেননা, বলিউডের মাধ্যমেই আমি সবচেয়ে বেশিসংখ্যক দর্শকের কাছে পৌঁছাতে পারি। কিন্তু আমি ভেঙে পড়িনি বা আমার শরীর নিয়ে হীনম্মন্যতায়ও ভুগিনি। বরং বিকল্পধারার ছবিতে কাজ করতে শুরু করলাম। আমার অভিনয় প্রশংসা কুড়ানো শুরু করল। তখনো আমার শরীরকে ভালোবাসতাম। এখনো বাসি।’

রাধিকা আপ্তে

একবারও কি তাহলে আপনি প্লাস্টিক সার্জারি করাননি? উত্তরে রাধিকা বলেন, ‘মাথা খারাপ! আপনি আমার ১৫ বছরের পুরোনো ছবি দেখেন। আমার নাক, চিবুক, শরীর সব ও রকমই আছে। আমি একটা ইনজেকশন নিতেই যে ভয় পাই। আমি তো স্ক্রিনে গ্লিসারিন নিয়েও কাঁদি না। আমার শরীর যেমন, আমি তেমনই স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করি।’

'বোল্ড অ্যান্ড বিউটিফুল' রাধিকা আপ্তে