ভারী মেকআপ, ভারী গয়না আর অতিরিক্ত জমকালো শাড়ি—এই তিনটি জিনিস নিমন্ত্রণবাড়ির সাজের তালিকায় এই বছর থাকছে না।
সামনে সাজপোশাকের জাঁকজমকের চেয়ে নিমন্ত্রণ উপভোগ করাটাই হয়ে দাঁড়াবে মূল। সাজের আড়ালে নিজের স্বাভাবিকতাটাই যদি হারিয়ে যায়, তাহলে তো সেটা নিজেকে হারিয়ে ফেলারই শামিল। তাই ভারী মেকআপ, ভারী গয়না আর অতিরিক্ত জমকালো শাড়ি—এই তিনটি জিনিস নিমন্ত্রণবাড়ির সাজের তালিকায় এই বছর থাকছে না। আর শাড়ির কাজ যদি ভারীও হয়, অন্তত রংটা হবে হালকা। তবে একেবারে সাজহীনভাবেও নিজেকে তুলে ধরতে বলা হচ্ছে না।
রেড বিউটি স্যালনের রূপবিশেষজ্ঞ আফরোজা পারভীন বলেন, কখনো একই অনুষ্ঠানের নানা আয়োজনে নিমন্ত্রণ রক্ষা করতে হয়। কোনো আয়োজন দিনে হয়, কোনোটি রাতে। এসব আয়োজনে আলাদা ‘রূপ’ আনা সম্ভব। এখানে তেমনই কিছু রূপ নিয়ে থাকল আলোচনা।
অনেকে চুল খোলা রাখতে পছন্দ করেন। চুল একটু কোঁকড়া করে ছেড়ে রাখলে সুন্দর দেখাবে। হালকা বেজ থাকুক। ভ্রু এঁকে নিন পরিপাটি করে। গাঢ় রঙের শাড়ির সঙ্গে চোখের সাজের জন্য গাঢ় রং বেছে নিতে পারেন কিংবা হালকা রঙে চোখ সাজালেও আইলাইনার হিসেবে বেছে নিন শাড়ির গাঢ় রংটাকেই। চোখের সাজে হালকা বা গাঢ় যে রংই থাকুক, নিচের অংশের জন্য রাখুন হালকা রঙের মেকআপ। পরিপাটি দেখাবে। ঠোঁট রাঙিয়ে নিন মানানসই রঙে।
কোনো অনুষ্ঠানে হয়তো একটু বেশিই সাজতে চান আপনি। কিংবা চান অন্যান্য দিনের চাইতে একেবারেই আলাদা দেখাক আপনাকে। এমনভাবে সাজতে চাইলে চোখজোড়াকে করে তুলতে পারেন ‘স্মোকি’। কালো শাড়ির সঙ্গে কালো রং দিয়ে করা ‘স্মোকি’ চোখ—দারুণ দেখাবে। চাইলে অবশ্য অন্য রঙের শাড়ির সঙ্গেও স্মোকিভাবে চোখ সাজাতে পারেন। এ সময় শাড়ির রংটাও আইশ্যাডোর রং হিসেবে ব্যবহার করতে পারবেন। এমন সাজে আইলাইনার টানুন চওড়া করে, আইলাইনারের টানেই চোখের পাতা ঢেকে দিন। ভ্রু এঁকে নিন যত্ন করে। হাতাকাটা ব্লাউজ পরতে পারেন। শাড়ির আঁচল ভাঁজ করে ‘সেট’ করে নিন পিন দিয়ে। চুলে জেল দিয়ে ভেজা ভাব আনতে পারেন। চুলের এই সাজ এ বছর জনপ্রিয়তা পাচ্ছে। ঠোঁটের জন্য বেছে নিন লাল, মেরুন বা ম্যাজেন্টার মতো উজ্জ্বল রং।
চুল কোঁকড়া করে এক পাশে সিঁথি করে ছেড়ে হালকা রঙের শাড়িতে আরেকটি ভিন্ন ‘সাজ’ তৈরি করতে পারেন। আইশ্যাডো, লিপস্টিক—সবই রাখুন হালকা রং। হালকা সাজের কোমল রূপে অসাধারণ দেখাবে আপনাকে। ব্লাউজটা হতে পারে হাতাকাটা।
রেশমি শাড়ির সঙ্গে রেশমি কাপড়ের মানানসই ব্লাউজ পরতে পারেন। গলায় পোশাকের সঙ্গে মিলিয়ে থাকতে পারে গয়না। কানে ছোট টপ। চুলে জেল দিয়ে টেনে পরিপাটি করে আঁচড়ে নিন। গালে ফুটে উঠুক হালকা ব্লাশঅন। চোখ আর ভ্রু জোড়া এঁকে নিন খুব সুন্দর করে। ঠোঁটের জন্য বেছে নিন ন্যুডের গাঢ় কোনো শেড। পরিচ্ছন্ন ও রুচিসম্মত সাজে মার্জিত দেখাবে।
বসন্ত আসন্ন। তবে হিম হাওয়া এখনো আছে খানিকটা। তাই রাতের দাওয়াতে শাল নিতে হতে পারে। একই হোক শাল এবং শাড়ির রং। সূক্ষ্মভাবে হালকা রঙের আইলাইনার টেনে নিন। ঠোঁটের জন্য বেছে নিন গাঢ় রং। শাল নিয়ে চুল খোলা রাখলে কিছুটা এলোমেলো দেখায়। তাই চুল আঁটসাঁট করে বেঁধে নিন ‘খোঁপা’। শীতের শেষবেলাতে ছিমছাম এই ‘সাজটাও’ কিন্তু দারুণ।