দুবাইয়ের রাজকন্যার রাজকীয় বিয়ে, নাটকীয় বিচ্ছেদ, এবার সুগন্ধির নাম ‘ডিভোর্স’

দুবাইয়ের রাজকন্যা শেখ মাহরা আল মাকতুম সম্প্রতি তাঁর বিউটি ব্র্যান্ড ‘মাহরা এম১’ থেকে একটি সুগন্ধি বাজারে এনে হইচই ফেলে দিয়েছেন। সুগন্ধিটির নাম ‘ডিভোর্স’। মাহরার আলোচিত বিচ্ছেদের কয়েক দিনের ভেতরেই বাজারে এল এই সুগন্ধি।  

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের এক পোস্টে সুগন্ধিটির দেখা মেলে। কালো রঙের বোতলে বাজারজাত করা হয়েছে সেটি। এর ওপর ব্ল্যাক প্যানথারের থিমে একটি লোগো। সাদা রঙে ইংরেজি অক্ষরে লেখা ‘ভিভোর্স’, মানে বিচ্ছেদ
ছবি: ইনস্টাগ্রাম থেকে
কিছুদিন আগেই এক ইনস্টাগ্রাম পোস্টের মাধ্যমে মাহরা তাঁর সাবেক জীবনসঙ্গীকে বিচ্ছেদের নোটিশ দিয়েছেন। ২০২৩ সালে হাই প্রোফাইল এই বিয়ে যেমন আলোচনায় ছিল, বিচ্ছেদ আরও বেশি করে আলোচনায় রয়েছে
ছবি: ইনস্টাগ্রাম থেকে
৩০ বছর বয়সী এই রাজকন্যা ওই পোস্টে তাঁর সাবেক স্বামীর বিরুদ্ধে পরকীয়া ও প্রতারণার অভিযোগ আনেন। এক পোস্টে তিনি শ্লেষাত্মক ভঙ্গিতে লেখেন ‘প্রিয় স্বামী, ওহ্, দুঃখিত, প্রাক্তন স্বামী।’
ছবি: ইনস্টাগ্রাম থেকে
এরপর মাহরা লেখেন, ‘যেহেতু তুমি অন্য নারীদের সঙ্গ উপভোগ করছো, আমি তোমাকে মুক্ত করে দিলাম। আমি বিচ্ছেদের ঘোষণা দিলাম। বিচ্ছেদের ঘোষণা দিলাম। বিচ্ছেদের ঘোষণা দিলাম। ভালো থেকো। ইতি, তোমার প্রাক্তন স্ত্রী।’
ছবি: ইনস্টাগ্রাম থেকে
২০২৩ সালের জুন মাসে মাহরা বিয়ে করেন শেখ মানা আল মাকতুমকে। রাজকীয় এই বিয়ে হইচই ফেলে দেয় বিশ্বের ফ্যাশন অঙ্গনে। ভোগ, এলে, কসমোপলিটান, হারপার’স বাজারসহ বিশ্বখ্যাত সব ম্যাগাজিনে উঠে আসে জাঁকজমকপূর্ণ এই বিয়ের খবর
২০২৪ সালের মে মাসে মা হন মাহরা। এর মাস দুয়েক পরেই আসে বিচ্ছেদের খবর
মাহরা সংযুক্ত আরব আমিরাতের উপ-রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী এবং দুবাই আমিরাতের শাসক শেখ মোহাম্মদ বিন রশিদ আল মাকতুমের কন্যা
মোহাম্মদ বিন রশিদের ২২ সন্তানের ভেতর (সন্তানের সংখ্যা নিয়ে বিতর্ক আছে) অন্যতম মাহরা। মাহরার মা জো গ্রিগোরাকোস গ্রিসের নাগরিক। হারপার’স বাজারের প্রচ্ছদে
মাহরার মা–বাবা বিয়ে করেননি। তাঁরা প্রেমের সম্পর্কে ছিলেন। মোহাম্মদ বিন রশিদ তাঁর এই কন্যাসন্তানের প্রতি খুবই দুর্বল। রাজপরিবারের নারীদের জন্য প্রযোজ্য বেশ কিছু আইন, নিয়ম মাহরার ক্ষেত্রে কার্যকর নয়
মাহরা দুবাই সরকারের নারীর ক্ষমতায়নবিষয়ক উপদেষ্টা হিসেবে কাজ করছেন। এ ছাড়া তিনি স্থানীয় মেধাবী নারী ফ্যাশন ডিজাইনারদের বিশ্ব ফ্যাশনের মূল স্রোতে নিয়ে আসতেও কাজ করেন। তিনি যুক্তরাজ্যের একটি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ে ডিগ্রি নেন। এ ছাড়া ‘মোহাম্মদ বিন রশীদ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন’ থেকেও ডিগ্রি নেন
মাহরার বিচ্ছেদের পোস্টের নিচে একজন মন্তব্য করেছে, ‘যখন একজন নারী মন থেকে পুরোপুরি তাঁর জীবনসঙ্গী থেকে সরে আসে, কেবল তখনই সে প্রকাশ্যে সেই ঘোষণা দেয়। আপনার আর কোনো সুযোগ নেই।’  আরেকজন লিখেছেন, ‘বিচ্ছেদের ঘোষণাটা বেশ সৃজনশীল ছিল। আপনার প্রাক্তন নিশ্চয়ই এখন জ্বলে-পুড়ে শেষ হয়ে যাচ্ছে আর আফসোস করছে।’
মাহরার ‘ডিভোর্স’ সুগন্ধির পোস্টের নিচে অনেককে এটা নিয়ে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করতে দেখা গেছে। একজন লিখেছেন, ‘ভাঙা হৃদয়ের হারাকারকে তিনি ব্যবসায় রূপান্তরিত করেছেন। এই না হলে রাজকুমারী! পরকীয়ার শোধ নিচ্ছেন ব্যবসার প্রসার করে।’
আরেকজন লিখেছেন, ‘আপনি মাহরাকে দেখুন। শিখুন। সুগন্ধিটা কেবল নিছক সুগন্ধি নয়, বরং নারী স্বাধীনতা, ক্ষমতা আর নীরব প্রতিশোধের প্রতীক।’
মাহরা তাঁর ইনস্টাগ্রাম থেকে স্বামীর সঙ্গে দেওয়া সব পোস্ট মুছে ফেলেছেন। ১১ সেপ্টেম্বর দুপুর পর্যন্ত সর্বশেষ যে পাঁচটি পোস্ট রয়েছে, তার সবই সুগন্ধি ‘ডিভোর্স’–এর প্রচারণামূলক

সূত্র: নিউ ইয়র্ক পোস্ট