বিকিনির বদলে বুরকিনি, প্রথা ভেঙে আলোচনায় মিস পাকিস্তান

শেষ পর্যন্ত মিস ইউনিভার্স ২০২৩–এর শিরোপা জিতেছেন নিকারাগুয়ার শেইনিস প্যালাসিওস। তবে সেই আলোচনা ছাপিয়ে প্রতিযোগিতায় হইচই ফেলে দিয়েছেন প্রথম ‘মিস পাকিস্তান’ এরিকা রবিন। সাঁতারের পোশাকের রাউন্ড নিয়ে এতকাল নানা ধরনের সমালোচনা–বিতর্ক ছিল। অনেক প্রতিযোগী নারীই এতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেননি। সেসবকে পেছনে ফেলে বুরকিনি নামের বিশেষ ধরনের সাঁতারের পোশাক পরে মঞ্চে হেঁটে ইতিহাস রচনা করলেন মিস পাকিস্তান এরিকা রবিন।
এল সালভাদরের সান সালভাদর শহরের জিমনেসিয়ামে গত শনিবার রাতে অনুষ্ঠিত ৭২তম মিস ইউনিভার্স প্রতিযোগিতায় সুইম স্যুট রাউন্ডে তাঁর পোশাক নিয়ে এখন জোর চর্চা চলছে
ছবি: ইনস্টাগ্রাম থেকে
সেরা ২০–এ অংশ নিয়ে মিস ইউনিভার্সের মঞ্চে সাঁতারের পোশাকের প্রতিযোগিতায় মিস পাকিস্তানের পরনে ছিল বেবি পিঙ্করঙা একটি বুরকিনি। বিকিনি পরার প্রচলিত ধারণার বাইরে গিয়ে এরিকার পোশাকটিকে স্বাগত জানানো হয় সংশ্লিষ্ট সব মহল থেকে
নিয়ম ভেঙে তিনি যখন মিস ইউনিভার্সের মঞ্চে বিকিনি রাউন্ডে বুরকিনি পরে হাজির হন, সবাই করতালির মাধ্যমে তাঁকে স্বাগত জানান। এরিকার বুরকিনিটি নকশা করেছেন ফ্যাশন ডিজাইনার রুবিন সিংগার
এটি নারীদের জন্য তৈরি বিশেষ ধরনের সাঁতারের পোশাক। নারীরা যাতে কেবল মুখ, হাত এবং পা ছাড়া সারা শরীর আবৃত রেখে সাঁতার কাটতে পারেন, এই ধারণা থেকেই পোশাকটি নকশা করা। সাঁতার কাটার সুবিধার জন্য পোশাকগুলোর ওজন হয় কম
মিস ইউনিভার্সে অংশ নেওয়ায় শুরু থেকেই পাকিস্তানের প্রভাবশালী কিছু ধর্মীয় ও রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বের সমালোচনার শিকার হন এরিকা রবিন। যে ছবিটি দেখছেন, মিস ইউনিভার্সের মিস কস্টিউম রাউন্ডে এরিকা এই পোশাকটি পরেছিলেন
যদিও এসব গায়ে মাখেননি ৫ ফুট ৮ ইঞ্চি উচ্চতার ২৪ বছর বয়সী এরিকা। মালদ্বীপে অনুষ্ঠিত পাকিস্তানের সুন্দরী প্রতিযোগিতায় সেরা পাঁচজনের মধ্য থেকে তিনি মিস ইউনিভার্স পাকিস্তান নির্বাচিত হন
মিস ইউনিভার্সের মঞ্চে খ্রিস্টান ধর্মের অনুসারী এরিকা সম্প্রতি বলেছেন, ‘আমি আধুনিক পাকিস্তানের সাহসী নারী। এ রকম গুরুত্বপূর্ণ একটি আন্তর্জাতিক মঞ্চে আমার দেশকে প্রতিনিধিত্ব করতে পেরে আমি গর্বিত। ভিন্নতার সহাবস্থান আর বৈচিত্র্যের সৌন্দর্য–ই আমার দেশের অন্যতম শক্তি।’
ইনস্টাগ্রামে এরিকার বুরকিনি পরা ছবির নিচে এক পাকিস্তানি মন্তব্য করেছেন, ‘সাহস করে যাঁরা নিয়মের বেড়াজাল ভাঙেন, অন্যদের জন্য পথ তৈরি করে দেন, চলার পথ সহজ করেন, সে–ই সবচেয়ে সুন্দর। আমার চোখে তাই আপনিই মিস ইউনিভার্স।’
আরেকজন লিখেছেন, ‘আসলে ওই মানুষগুলোই পাকিস্তানকে লজ্জিত করেছে। আপনি পাকিস্তানের গর্ব। আমরা আপনাকে নিয়ে গর্বিত।’