ভ্যাপসা গরম থাকুক কিংবা বাদলা দিন, শিশুদের ঈদের আনন্দ কোনো কিছুতেই ভাটা পড়ে না। যাদের কাছে ঈদ মানেই ‘নতুন জামা’, তাদের পোশাকও হওয়া চাই মনের মতো। এবারের আবহাওয়ার কথা মাথায় রেখে ফ্যাশন হাউসগুলো ছোটদের জন্য বাজারে এনেছে আরামদায়ক অনেক পোশাক। তবে আরামের পাশাপাশি পোশাকে যদি স্টাইল আর ঈদের আমেজ চলে আসে, তাহলে তো এক ঢিলে দুই পাখি মারা হবে।
বাজার ঘুরে দেখা গেল, বরাবরের মতো এবারও পোশাকের নকশায় দেশীয় সংস্কৃতিকে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে। মেয়েশিশুর জন্য একই প্যার্টানের সালোয়ার–কামিজ থেকে নায়রাকাট জামা, কাফতান, স্কার্ট-টপস, প্যান্ট টপ, ফ্রকসহ বিভিন্ন পোশাক রয়েছে। পোশাকের মোটিফে কিছুটা পরিবর্তন আনা হয়েছে। অনেকেই ঘন কাজ বাদ দিয়েছে। ফ্রিলের ব্যবহার চোখে পড়েছে। লেস, ঝুল, টার্সেল, স্ক্রিনপ্রিন্ট, সুতার কাজের নকশা, ফুলের মোটিফের দেখা মিলছে। মেয়েশিশুদের জন্য সুতির ঘাগড়া-চোলি এবং তৈরি করা শাড়িও আছে। নবজাতকদের জামার মধ্যে হালকা কাজের সুতার ফ্রক, হাতাকাটা ফতুয়া আর হাফপ্যান্ট দেখা গেছে বেশি। মেয়ে শিশুর নানা রকম পালাজ্জো, বেলুন প্যান্ট, সারারা প্যান্ট, ঢিলেঢালা প্রিন্টের প্যান্টও এনেছে অনেক ফ্যাশন হাউস।
ছেলেদের ঈদ পাঞ্জাবি ছাড়া অসম্পূর্ণ। পাঞ্জাবিতে সুতি কাপড় ছাড়াও ভিসকস, খাদি, সিল্কের কাপড় ব্যবহার করা হয়েছে। ফুটিয়ে তোলা হয়েছে ফুল, কলকা, জ্যামিতিক বিভিন্ন কাজ। তবে সব ক্ষেত্রেই শিশুরা যাতে স্বস্তি বোধ করে, সেই চিন্তা আগে করা হয়েছে। ঈদে ছেলেদের ক্ষেত্রে পাঞ্জাবি, কাবলি বেশি চলে, এ ছাড়া আছে টি-শার্ট, পোলো শার্ট, প্যান্ট পায়জামার সম্ভার। এসব পোশাক তৈরি করা হয়েছে নানা প্রকার মিহি সুতি কাপড়, নিট কটন দিয়ে।
সুতি কাপড়ে হালকা রং
ফ্যাশন হাউস ‘শৈশব’-এর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সাকিব চৌধুরী জানান, এবার যেহেতু গরমের মধ্যেই ঈদ আসবে, অধিকাংশ পোশাকেই সুতি কাপড়ের ব্যবহার দেখা যাবে। তিনি বলেন, পোশাকের রং এবং উপকরণের ওপর শিশুদের আরাম নির্ভর করে। শিশুরা গরম সহ্য করতে পারে না। হালকা রং যেমন সাদা, হালকা বেগুনি, হালকা নীল, আকাশি, ল্যাভেন্ডারসহ প্রশান্তিদায়ক রংগুলো এবার বেশি রাখা হয়েছে। তবে সব পোশাকেই শিশুরা পছন্দ করবে, এমন কিছু নকশা রাখার চেষ্টা করা হয়েছে, জানালেন সাকিব চৌধুরী।
বাহারি কাপড়ের পোশাক
দেশীয় আরেক ফ্যাশন হাউস লিটল অ্যাঞ্জেলসের অপারেশন ম্যানেজার ফারজানা ববি জানান, ফ্যাশনধারায় গরমের জন্য আরামদায়ক পোশাকের সঙ্গে ফ্যাশনের দিকটিও মাথায় রাখা হয়েছে। ফিউশন ধাঁচের পোশাক থাকছে ঈদে। সুতির মধ্যে ঢিলেঢালা গড়নের পোশাক, ফুলের নকশা, নানা রকম কার্টুন, কমিক চরিত্র, হালকা কাজ বেশি দেখা যাবে। দাওয়াতের পোশাকের জন্য ব্যবহার করা হয়েছে নরম নেট, পাতলা সিল্ক, ক্রেপ সিল্ক, নরম জর্জেট, লিনেন ইত্যাদি। তবে যাতে গরমে শিশুদের অস্বস্তিতে পড়তে না হয়, তাই ভেতরে দেওয়া হয়েছে সুতি কাপড়ের বাড়তি আবরণ। খাটো টপ ও টি-শার্টের হাতা ও গলায় করা হয়েছে নানা ধরনের নকশা। বয়সভেদে শিশুর পোশাকের এই নকশায় ভিন্নতা লক্ষ করা গেছে।