প্যারিস ফ্যাশন উইকে টার্টলনেক কেন এত গুরুত্ব পেল?

ইউরোপে হুহু করে বাড়ছে গ্যাসের দাম। তীব্র শীতে এখন ঘরে হিটার চালানোই দায়। এই শীতে নিজেদের উষ্ণ রাখতে ইউরোপীয়দের চেষ্টার অন্ত নেই। রাজনীতিবিদ থেকে শুরু করে ফ্যাশনিস্তা—সবাই নিত্যনতুন বুদ্ধি বাতলে দিচ্ছেন উষ্ণ থাকার জন্য। তবে এর মধ্যে সবচেয়ে কেজো বুদ্ধি বাতলে দিয়েছে প্যারিস ফ্যাশন উইক—এই শীতে উষ্ণ থাকতে চাও তো টার্টলনেক পরো।

১.

প্যারিস ফ্যাশন উইকের উদ্বোধনী রাত ছিল টার্টলনেকময়। প্রতিটি ব্র্যান্ডই নিজেদের কালেকশনে কোনো না কোনো টার্টলনেক রেখেছিল।

২.

কিছু কিছু টার্টলনেকের গলা এতটাই লম্বা ছিল যে মনে হচ্ছিল তা মডেলের মুখ ঢেকে ফেলছে।

৩.

ইউরোপে টার্টলনেকের জনপ্রিয়তা শুরু হয় ষাটের দশকে। আইরিশ নাট্যকার ও লেখক স্যামুয়েল বেকেট ও ফরাসি দার্শনিক মিশেল ফুকোর মতো বুদ্ধিজীবীদের হাত ধরে সুশীল সমাজে আর ইতালীয় অভিনেতা মার্সেলো মাস্ত্রেয়ান্নির হাত ধরে জনসাধারণের কাছে পৌঁছে যায় টার্টলনেকের ফ্যাশন।

৪.

ইউরোপে টার্টলনেকের প্রচলন অবশ্য অনেক আগে থেকেই। মধ্যযুগে সৈন্যরা নিজেদের বর্মের নিচে নিয়মিতই গলাবন্ধ জামা পরতেন।

৫.

ফরাসি ফ্যাশন ব্র্যান্ড ‘জিভনশি’র প্রদর্শনীর পুরোটাই ছিল টার্টলনেকময়।

৬.

আরেক ফরাসি ফ্যাশন ব্র্যান্ড সঁ লোঁরোর প্রদর্শনীতে ছিল ফানেল-নেক জাম্পার। কিছু কিছু জাম্পার দেখে মনে হচ্ছিল, চাইলে একে গাউন হিসেবেও চালিয়ে দেওয়া যাবে।

৭.

তবে বেশ কিছুদিন ধরে টার্টলনেক ফরাসি রাজনীতিতে বেশ আলোচিত একটা বিষয়। বিশেষ করে শীতের শুরুতে ফ্রান্সের বাণিজ্যমন্ত্রী যখন ঘটা করে ঘোষণা করেন, সবার উচিত শার্ট-টাই ছেড়ে টার্টলনেকের দিকে ঝুঁকে পড়া। ঘরের তাপমাত্রা বাড়ানোর চেয়ে শীতের পোশাক কেনাই তাঁর কাছে সাশ্রয়ী মনে হয়েছে।

৮.

ফরাসি প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাখোঁ কাশ্মীরি টার্টলনেক পরে সভায় যোগ দিয়ে আলোচনা আরও বাড়িয়ে দিয়েছেন। ইউরোপজুড়ে চলা জ্বালানি ঘাটতির মধ্যে এই টার্টলনেক সারা ফেলেছে সব মহলে।

৯.

রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক অবস্থান কিংবা উষ্ণতার খোঁজ, কারণ যা–ই হোক না কেন, এবারের শীতে ইউরোপের ফ্যাশনে যে আলাদা জায়গা করে নিচ্ছে টার্টলনেক, তা বলাইবাহুল্য।