চলচ্চিত্রের প্রয়োজনে বদলে ফেলেছেন চুলের বেশ। নতুন এই রূপে তাঁকে দেখে রীতিমতো চমকে গিয়েছিলেন দর্শক। জেফার রহমান মনে করেন, চুলের এই পরিবর্তন তাঁর ব্যক্তিত্বে যোগ করেছে নতুন মাত্রা। ‘নকশা’র প্রচ্ছদের জন্য ভিন্ন ভিন্ন আরও কিছু সাজে উপস্থিত হলেন এই সংগীতশিল্পী।
চুলের বেশ বদলের সঙ্গে সঙ্গে বাকি সাজেও এনেছেন পরিবর্তন। জেফারের আগের রূপটি ভিন্নধর্মী হওয়ার কারণে এমনিতেই নজর কাড়ত। সাজে পরিবর্তন আনার পরও নজর তো সরেইনি; বরং পরিসর মনে হয় আরও বেড়েছে। ধীরে হলেও মেকআপ, পোশাকের ধারায় বদল আনছেন একটু একটু করে। গথিক ধারা থেকে বের হয়ে নিজেকে আরেকটু অন্যভাবে সাজিয়ে তোলার দিকে আগ্রহ পাচ্ছেন এখন সদ্য অভিনয়ের খাতায় নাম তোলা জেফার রহমান।
আগে নিজের সাজ নিয়ে তাঁর অবস্থানটা ছিল বেশ কঠোর। ‘একদমই চুল ধরতে দিত না, মেকআপেও আনা যেত না কোনো পরিবর্তন,’ পারসোনার পরিচালক নুজহাত খানের এই কথায় হেসে ফেললেন জেফার। সঙ্গে সঙ্গেই জানালেন, ‘এখন চেষ্টা করছি। আগে সাজের কোথাও নারীসুলভ ভাব রাখতে চাইতাম না। বয়স কম ছিল, কালো রং আর গথিক ভাবটাকেই ভালো লাগত। চোখে মোটা করে দেওয়া কাজল আর এলোমেলো চূড়া করা চুল ছাড়া অন্য কোনো সাজে আমাকে ভালো লাগবে, এটা বিশ্বাসই করতাম না। লিপস্টিক, মেকআপ করা, পোশাক বা সাজে রঙিন কিছু নিয়ে আসাটা চিন্তা করতে পারতাম না। এখন পুরো সাজেই চলে এসেছে নারীসুলভ বা ফেমিনিন ধারা। তবে এই পরিবর্তন এক দিনে হয়নি। বেশ সময় নিয়েই অদলবদল হয়েছে।’
কালো রঙেই নিজেকে সাজাতেন এত দিন। রংটিকে এত বেশি আপন করে নিয়েছিলেন যে এটাই হয়ে উঠেছিল তাঁর ব্যক্তিত্বের অন্যতম ট্রেডমার্ক। কালো রঙের পোশাকের দিক থেকে এখন অনেকটাই মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন জেফার। গানের অনুষ্ঠানের বাইরে খুব একটা পরতে চান না। মাঝে পরতেন হালকা রঙের পোশাক। এখন আবার চড়া আর উজ্জ্বল রংগুলো মন কেড়ে নিচ্ছে। ম্যাজেন্টা আর কমলা রঙের ফেস্টিভাইবের কামিজটি এ কারণেই নিজে গিয়ে পছন্দ করে নিয়ে এসেছেন তিনি। কখনো বেণি করা হয়নি। কামিজও আগে কখনো পরেননি। খুব সম্প্রতি পরা শুরু করেছেন।
ফটোশুটের আগে থেকেই নুজহাত খান, জেফার আর আমাদের মধ্যে বেশ কয়েক দিন ধরে জল্পনাকল্পনা হচ্ছিল, কীভাবে নতুন রূপে জেফারকে ‘নকশা’র পাঠকদের সামনে তুলে ধরা যায়। মনোগামী চলচ্চিত্রের কারণে চুলের স্টাইল বদলে ফেলায় এমনিতেই চেহারায় নমনীয়তা চলে এসেছে। এ ক্ষেত্রে যে কাজগুলো জেফার কম করেন, যেমন চুলটাকে হালকা কোঁকড়ানো, মেকআপে বেজ হালকা রেখে নরম রংগুলো ব্যবহার, মাথার মাঝে সিঁথি—সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, সেগুলোই করা হবে। আগে গয়না পরতেন না জেফার।
এখন গয়না পরলেও রুপার গয়না পরা হয় কম। এ কারণে দুটো সাজে রুপার গয়নার বেশ ভালো ব্যবহার করা হয়েছে। সাধারণত সোনালি রঙের গয়নাই পরা হয়। শুটেও এসেছিলেন তিন-চারটি চিকন সোনালি রঙের চুড়ি পরে।সাজের গল্পের মধ্যেই নুজহাত খানের কাছে জানতে চাইলাম, আর কোনভাবে নিজের মধ্যে পরিবর্তন আনতে পারেন জেফার। জানালেন, তাঁর চেহারাটা এমনিতেই বেশ জমকালো। চোখ বড়, নাক চোখা, ঠোঁট ভরাট হওয়ায় চেহারায় খুব বেশি মেকআপের প্রয়োজন নেই। বরং এই তিনটি জায়গাকে সুন্দর করে তুলে ধরলেই হবে। তবে ঠোঁট আর চোখের সাজে সামঞ্জস্য যেন থাকে। দুটো জায়গাতেই যেন চড়া রঙের ব্যবহার না করা হয়।
জেফার নিজেও তাঁর সাজ নিয়ে বেশ সচেতন। অনুষ্ঠান বা গানের শোর বাইরেও নিজের সাজ নিয়ে ভাবেন। ফটোশুটের সময় প্রতিটি সাজের পরই বেশ স্বতঃস্ফূর্তভাবে দাঁড়াচ্ছিলেন ক্যামেরার সামনে। পরের সাজে আরও কী হতে পারে, সেই চিন্তায় ছিলেন উদ্বেল। ভবিষ্যতে কোন ধরনের সাজের দিকে ঝুঁকবেন, সেটা নিয়ে এখনই ভাবিত নন। এখন যেমন সাজছেন, সেটাই বরং বেশ উপভোগ করছেন জেফার।