ফ্যাশন ও সৌন্দর্যের দিক থেকে দুজনের চিন্তা ছিল একেবারেই আলাদা। বলছি রবীন্দ্রনাথের শেষের কবিতা উপন্যাসের দুই চরিত্র কেতকী আর লাবণ্যর কথা। কেতকীর সাজপোশাকে প্রাধান্য পেত পাশ্চাত্য ধাঁচ।
লাবণ্যর সাজে থাকত বাঙালিয়ানা। ২০১৫ সালের ৫ মে ‘রবীন্দ্রনাথের লাবণ্য কেতকী’ শিরোনামে ‘নকশা’য় তুলে ধরা হয়েছিল কেতকী ও লাবণ্যর দুই ধরনের সাজপোশাক।
কেতকীর চুলের স্টাইলে রাখা হয়েছিল বব কাট, এক পাশে সিঁথি। উঁচু করে বাঁধা চুলের মাঝখানে সিঁথি। চোখে আইলাইনার। ঠোঁটে হালকা লিপস্টিক। হাতে, গলায়, কানে ছিল মুক্তার গয়না। ফিরোজা রঙের জর্জেটের সঙ্গে হাতাকাটা ব্লাউজ।
উল্টিয়ে আঁচড়ানো হয়েছিল লাবণ্যর চুল, আঁটসাঁট করে বাঁধা হয়েছিল খোঁপা। রবীন্দ্রনাথের উপন্যাস থেকে ধারণা নিয়ে লম্বা বেণিও করা হয়েছিল। মাঝখানে সিঁথি। কপালে টিপ। চোখে হালকা কাজল আর লিপস্টিক। কানে ছোট দুল। হাতে সোনার দুগাছি সরু চুরি। পরনে ঘিয়ে জামদানি শাড়ি, তাতে লাল-নীল সুতার কাজ। লাবণ্যর ব্যক্তিত্বে সাদামাটা ভাবের সঙ্গে আভিজাত্যের সমন্বয় ফুটিয়ে তোলার জন্য বেছে নেওয়া হয়েছিল সুতির ছাপা শাড়িও। সাদা হাফ সিল্কের মধ্যে ছিল নীল সুতার কাজ। হাফ হাতা ব্লাউজ।
রূপবিশেষজ্ঞ কানিজ আলমাস খান লিখেছিলেন, ‘এই দুই নারীর জীবনধারা, তখনকার সৌন্দর্যবোধ, উভয়ের সামাজিক ও স্থানিক পরিচয় ইত্যাদি মনে রেখে তাঁদের সাজানোর চেষ্টা করেছি।’
কানিজ আলমাস খান আরও বলেন ‘তবে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর শেষের কবিতায় কী রূপে কেতকী আর লাবণ্যকে দেখেছেন, তাতে জোর দিতে চেয়েছি বেশি। কারণ, এই দুই বাঙালি নারী তো তাঁরই সৃষ্টি। আমরা তাঁদের আবিষ্কারের চেষ্টাই কেবল করতে পারি!’