যখন থেকে কাজ শুরু করেছেন, তখন থেকেই প্রায় প্রতিটি ঈদের আগে ব্যস্ততার কারণে আলাদা করে ঈদের জন্য আর প্রস্তুতি নেওয়ার সময় হয়ে ওঠে না অভিনেত্রী তাসনিয়া ফারিণের। নতুন প্রজন্মের জনপ্রিয় এই অভিনেত্রীর কাছ থেকে তাঁর ঈদপোশাক আর সাজের কথা শুনলেন বিপাশা রায়
যখন থেকে কাজ শুরু করেছেন, তখন থেকেই প্রায় প্রতিটি ঈদের আগে ব্যস্ততা তাঁর নিত্যরুটিন। আলাদা করে তাই ঈদের জন্য আর প্রস্তুতি নেওয়ার সময় হয়ে ওঠে না, বলছিলেন এই সময়ের জনপ্রিয় অভিনেত্রী তাসনিয়া ফারিণ।
ব্যস্ততা এবারও আছে। তবে এবারের ঈদটা আলাদা। কারণ, বিয়ের পর এটাই তাঁর প্রথম ঈদুল ফিতর। এই ঈদ নিয়ে ফারিণের মাঝে তাই বিশেষ উত্তেজনা। এবারের ঈদ হবে এপ্রিলের প্রায় মাঝামাঝি সময়। আর এই এপ্রিলেই স্বামী শেখ রেজওয়ানের সঙ্গে তাঁর প্রথম দেখা হয়েছিল। সবকিছু নিয়ে বেশ অন্য রকম ঈদের আনন্দ।
ঈদে যদিও নিজের জন্য খুব একটা কেনাকাটা করেন না, তবে এবার শ্বশুরবাড়ির সবার জন্য কেনাকাটা করছেন। ‘আসলে কাজের জন্য সারা বছর এত কস্টিউম কেনা হয় যে ঈদের জন্য আলাদা করে আর নতুন পোশাক কেনার দরকার হয় না। তবে এবার নতুন পরিবারের সদস্যদের জন্য কিছু না কিছু কিনছি। এই আনন্দ একটু অন্য রকম,’ বলছিলেন ফারিণ।
এবারের ঈদ ঘিরে আরও কিছু পরিকল্পনা আছে। এখন যুক্তরাজ্যে আছেন শেখ রেজওয়ান। তুরস্কে দুজনের ঈদ কাটানোর পরিকল্পনা চলছে। ঈদের এক বা দুই দিন আগে বাংলাদেশ থেকে সোজা তুরস্কে চলে যাবেন ফারিণ আর যুক্তরাজ্য থেকে যোগ দেবেন রেজওয়ান। আরও কিছু পরিকল্পনা আছে। তবে পাঠকদের সঙ্গে সেটা ভাগ করতে নারাজ ফারিণ, ‘আসলে ব্যক্তিগত জীবনটা আমার ব্যক্তিগত রাখতেই বেশি ভালো লাগে। যে কারণে বিয়ের দিন মোবাইল বন্ধ রেখেছিলাম। সব ধরনের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম থেকেও নিজেকে সরিয়ে নিয়েছিলাম। নিজের ব্যক্তিগত জীবন আর কাজের জায়গাটাকে কখনো এক করতে চাইনি।’
ঘুরতে ভালোবাসেন ফারিণ। ঈদের পরিকল্পনা যখন এই ঘোরাঘুরিকেই কেন্দ্র করে, তখন তাঁর পছন্দের তালিকার প্রথমে যে পাশ্চাত্য ঘরানার আরামদায়ক পোশাক থাকবে, সে তো বলাই বাহুল্য। জানালেন, কাজের প্রয়োজনে জমকালো পোশাক হয়তো প্রায়ই পরেন, তবে এ ধরনের পোশাক তাকে খুব একটা টানে না। শাড়ি বা পোশাক যেকোনো কিছুতেই কালো রং তাঁকে বেশ টানে। সাদার প্রতিও দুর্বলতা আছে। ভালোবাসেন হালকা নকশার পোশাক। কেনাকাটার জন্য সাধারণত অনলাইনের ওপর নির্ভর এই অভিনেত্রী। বিশেষ কোনো ব্র্যান্ড নয়, অনলাইনে যখন যা ভালো লাগে, তাই কিনে থাকেন তিনি।
ছবি তোলার ফাঁকে ফাঁকেই চলছিল কথা। একফাঁকে ইনডোর শুট থেকে আমরা চলে গেলাম আউটডোরে। সেখানে চলছিল শুটের প্রস্তুতি। এরই মাঝে তাসনিয়া ফারিণের উপস্থিতি টের পেয়ে ভিড় জমালেন ভক্তকুল। প্রিয় অভিনেত্রীকে সামনে পেয়ে অনেকেই জানতে চাইলেন কীভাবে নিজেকে মেইনটেইন করেন। উত্তরে ফারিণ বললেন, তেমন কিছুই করেন না তিনি। সত্যিই কি তাই? ফারিণ জানালেন ত্বক ও চুলের যত্নে একেবারেই আলাদা করে কোনো সময় দেন না তিনি। তবে মাঝেমধ্যে চুলে ট্রিমিং করান। ব্যস এইটুকু। সঙ্গে ফারিণ আরও জানালেন, নিজেকে ফিট রাখতে কখনো জিমেও যান না তিনি।
ঈদেও সাজগোজ নিয়ে তেমন একটা পরিকল্পনা থাকে না। খুব সাধারণভাবেই নিজেকে উপস্থাপন করতে ভালোবাসেন। পোশাকের সঙ্গে মিলিয়ে শুধু চুল সাজানোর চেষ্টা করেন। তবে সেটাও হয় খুব সাধারণ, কোনো বাহুল্য থাকে না।
একই কথা বলেছিলেন মেকআপ আর্টিস্ট জাহিদ খান। ফারিণকে বিয়ের সাজে সাজিয়েছেন তিনি। গত বছর যখন এই অভিনেত্রীর বিয়ের লুক ভাইরাল হয়ে যায়, তখন প্রথম আলোকে জাহিদ খান বলেছিলেন, ‘খুব বেশি জমকালো সাজে তাসনিয়া ফারিণকে মানায় না। অনেকবারই শুটে তাঁকে জমকালো মেকআপে সাজাতে গিয়ে এই অভিজ্ঞতা আমার হয়েছে। তার চেয়ে বরং মিনিমাল মেকআপেই ফারিণ হয়ে ওঠেন আরও স্নিগ্ধ আরও সুন্দর।’
শুটের সময় প্রসঙ্গটা তুলতেই ফারিণ বললেন, ‘এ জন্য হালকা ছিমছাম সাজ আমার এত পছন্দ।’