ফ্যাশন শোর মাধ্যমে কাতারে বাংলাদেশের সংস্কৃতি ধরলেন বাংলাদেশের ফ্যাশন ডিজাইনার তাসমিত আফিয়াত। কাতারের বাংলাদেশ দূতাবাস ও কাতার ফাউন্ডেশনের সহযোগিতায় ২১ জুলাই এডুকেশন সিটি কাতার ফাউন্ডেশনের অ্যাট্রিয়াম হলে অনুষ্ঠিত হয় এ ফ্যাশন শো। জামদানি, নকশিকাঁথা, রাজশাহী সিল্ক, গামছা দিয়ে বানানো পোশাকগুলো কাতারবাসীদের জন্য বিশেষভাবে বানিয়েছেন তাসমিত। পোশাকের ওপর ছিল রিকশাচিত্র, ভাষাশহীদদের মুখাবয়ব ও পতাকার রং।
সাদা শার্টের সঙ্গে ভারী কাজ করা স্কার্ট। পুরো স্কার্টেই রিকশাচিত্রের নকশা। নকশাগুলো তুলে ধরতে রিকশার পেছনে যেমন প্লাস্টিকের ব্যবহার করা হয়, স্কার্টের ওপরেও সেই একই রকমভাবে নকশাগুলো লাগিয়েছেন তাসমিত আফিয়াত। নিচে ব্যবহার করেছেন গোলাপি ট্যুল কাপড়।
পোশাকের ক্যানভাসে রঙিন রিকশাচিত্র। রোদচশমায়ও একই কাজ।
সিল্কের লাল স্কার্ট, কালো টপের সঙ্গে গামছার খাটো জ্যাকেটটি আধুনিক লুকের পাশাপাশি বাংলাদেশের সংস্কৃতিকে তুলে ধরেছে।
গামছা প্রিন্টের প্যান্ট, বেল্টসহ টপ। কো-অর্ড সেট হিসেবেও এটি পরা যাবে।
ধুতির সঙ্গে আছে লম্বা কাটের জ্যাকেট। দুটিই সিল্কের কাপড় দিয়ে বানানো। ওপরের টপে চুমকির ভারী কাজ নজর কাড়ে। তবে এ পোশাকের মূল আকর্ষণের জায়গা হচ্ছে পতাকার রং। সবুজ জ্যাকেটের ওপর লাল কাপড়টি লেস হিসেবেই কাজ করেছে, সঙ্গে প্রকাশ করছে দেশীয় চেতনা।
সাদা গাউনের সঙ্গে জামদানির কেপ। কেপ এ বছর আবার জনপ্রিয় হয়েছে। গাউনটির নিচের অংশে র্যাফলের কাজ।
ফ্যাশন শোয়ের শিরোনাম ছিল ‘বি দেশি’। শব্দবন্ধটির দুটি অর্থ আছে, জানালেন তাসমিত আফিয়াত। সাধারণ অর্থে ফরেনার। আর বাংলা ইংরেজি মিলিয়ে যদি ধরি বি দেশি, অর্থাৎ দেশি হও। দুটো অর্থই আমার সংগ্রহের মূল ভাবনাকে তুলে ধরেছে। কারণ, বাংলাদেশের সংস্কৃতিকে এখনো এখানে সেভাবে কেউ আনতে পারেনি। কাতারে আমার ফ্যাশন হাউস স্ট্রাইড ফ্যাশন ওয়্যারেও দেশীয় কাপড়ের তৈরি পোশাকই বানিয়ে থাকি। ফ্যাশন শোর আয়োজক হিসেবে আমাকেই সব দিক সামলাতে হয়েছে। মডেলদের প্রশিক্ষণ দেওয়া থেকে শুরু করে অতিথি নিমন্ত্রণ, পুরো পরিকল্পনা, ব্যাকড্রপ ডিজাইন, ফটো বুথ ডিজাইন, গান বাছাই ইত্যাদি কাজগুলো একলা হাতেই করেছি।
সাদা জ্যাকেটের কলারের ওপর শহীদদের মুখাবয়ব।
রোদচশমার ওপরে রিকশাচিত্র।
জ্যাকেটের ওপর ছাপা নকশায় ভাষাশহীদদের ছবি।
জাম্পস্যুটটির হাতা জামদানি কাপড়ে তৈরি, বাকি অংশে নকশিকাঁথার কাজ।
পুরো পোশাকের মধ্যমণি নকশিকাঁথার কাজ করা বেল্ট আর স্কার্ফ।
লাল গাউনটির ওপরের অংশটি জামদানির। নিচের অংশটি ট্যুল কাপড়ের বানানো। জ্যাকেটের ওপরের অংশে সবুজ রঙের ব্যবহার বাংলাদেশের জাতীয় পতাকার কথাই মনে করিয়ে দিচ্ছে। রোদচশমায় রিকশাচিত্র।
সাদা পোশাকের ওপরে সাদা জামদানির কেপ পুরো সাজে এনেছে ভিন্নতা।
কাতারে আবহাওয়া সব সময়ই গরম। এ কারণে আমাদের দেশীয় কাপড়গুলো সেখানকার মানুষের জন্য বেশ আরামদায়ক বলে জানান এই ফ্যাশন ডিজাইনার। তবে পোশাকগুলো তাঁদের পছন্দ অনুযায়ী কাটে তুলে ধরতে হয়। মোট ৩৬টি নকশার পোশাক পরে ফ্যাশন শোতে হাঁটেন মডেলরা। মূলত ক্যাজুয়াল ও জমকালো ঘরানার পোশাকই ছিল। এ ফ্যাশন শো আয়োজনে আরও সহযোগিতা করেছেন গলফ বাংলাদেশ বিজনেস অ্যাসোসিয়েশন, আব্দুল মতিন পাটোয়ারী সোশ্যাল ওয়েলফেয়ার ফাউন্ডেশন, গ্রিন রেড স্টুডিওজ ইভেন্ট ও রসের হাঁড়ি।
স্ট্রাইড ফ্যাশন ওয়্যারের একটি শাখা বাংলাদেশেও আছে।