মেরিল–প্রথম আলো পুরস্কার ২০২২ অনুষ্ঠানের জন্য অভিনেত্রী মুমতাহিনা টয়া বানিয়েছিলেন নতুন শাড়ি। প্রায় ৪ মাস ধরে করা এই আয়োজনের কিছু অংশ দেখুন এই ভিডিওতে।
মেরিল-প্রথম আলো পুরস্কার অনুষ্ঠানের জন্য প্রতিবারই নতুন পোশাক তৈরি করেন মুমতাহিনা চৌধুরী টয়া। সাজে নতুন কিছু যোগ করার চেষ্টা থাকে। গত বছর ওয়াইন রঙের শাড়ি পরেছিলেন। চুল ভেজা রেখে জমকালোভাবেই সেজে এসেছিলেন। এবারও শাড়িই পরেছিলেন। চার মাস আগে থেকেই শুরু করেন পরিকল্পনা। মেহের বাই সামিনা সারার ডিজাইনার এবং স্বত্বাধিকারী সামিনা সারার সঙ্গে কয়েক দফা বৈঠকে বসে ঠিক করা হয়েছে নকশা। কাজটা একটু কঠিন হলেও নতুনভাবে কিছু তুলে ধরার উত্তেজনা কারখানাজুড়ে চলছিল।
টয়ার শাড়িতে জমকালোভাবে উঠে এসেছিল নিজের দেশ, সংস্কৃতি, গ্রামীণ জীবনের দৈনন্দিন কাজের ধারা, প্রকৃতির একঝলক। মসলিন শাড়ির ওপর এই কাজ তোলার প্রস্তুতি চলেছে বেশ কয়েক মাস। সামিনা সারা জানালেন, টয়া এমন কিছু চাচ্ছিলেন, যেটা আগে কেউ দেখেননি। ভিন্ন কিছু করার জন্য দেশীয় উপকরণ এবং ধারাই আদর্শ। পুরো শাড়িতে হ্যান্ড পেইন্ট এবং পুঁতির কাজটি খুব নিখুঁতভাবে করা হয়েছে। জেলে, তাঁতিদের কাজ ছাড়াও বাচ্চারা শাপলা ফুল তুলছে, নারীরা কাজ করছে আপনমনে ইত্যাদি ছবি দিয়ে শাড়িটি সাজানো হয়েছে। ব্লাউজের কাজটি তুলনামূলক হালকা রাখা হয়েছে। হাতায় গাছের ওপর দোয়েল পাখিটি নজর কাড়বে
টয়ার অনুষঙ্গগুলোতেও আছে আমাদের দেশের ফুল আর ফল। আংটিতে শাপলা ফুল আর হাতের ব্যাগটি পুরো কাঁঠাল আকৃতির। এক পাশে কাঁঠালের কোয়া আরেক পাশে কাঁঠালের বাইরের সবুজ অংশ। ২ জন ডিজাইনার এবং ১ জন পেইন্টার শাড়ির স্কেচ এবং পরবর্তী সময়ে শাড়ির ওপর রং করতে সময় নিয়েছেন ১ মাস। ৪ জন কারিগর ১৫ দিন ধরে শাড়ির ওপর পুঁতির কাজ করেছেন। কাঁঠালের ব্যাগটি করতে সময় লেগেছে ১০ দিন। শাড়িটির পেছনে ব্যয় হয়েছে ১ লাখ ২০ হাজার টাকা, ব্যাগটি করতে খরচ হয়েছে ১৮ হাজার টাকা।
অনুষ্ঠানের ১ দিন আগেই টয়া নিজের নখের কাজটি শেষ করে রেখেছিলেন তিশা’স বিউটি হাবের ফারহানা তিশার কাছে। চুল একদম নিপাটভাবে আঁচড়ে খোঁপা করে রেখেছিলেন। সাজেও ছিল না তেমন বাহুল্য। কিন্তু টয়া ছিলেন আপন আলোয় উদ্ভাসিত। কয়েক ঘণ্টার অনুষ্ঠানের জন্য ১২০ দিন যে পরিকল্পনা এবং খাটুনি গেছে শাড়িসহ বাকি অনুষঙ্গগুলো তৈরি করতে, পুরোটাই যেন সার্থক।