বর্ণবাদের শিকার হয়ে কী বললেন তাঁরা?

‘কালারিজম’ কোথায় নেই? গায়ের রং নিয়ে আমাদের সমাজে আলোচনা হওয়াটা যেন সংস্কৃতির অংশ। আর শুধু আমাদের সমাজই-বা বলি কেন, ব্রিটেনের রাজপরিবারেও রয়েছে বর্ণবাদের চর্চা! কালারিজম বা গায়ের বর্ণ নিয়ে বৈষম্যমূলক আচরণের শিকার হয়েছেন বলিউডের একাধিক তারকা। সেই তালিকায় প্রিয়াঙ্কা চোপড়ার মতো আন্তর্জাতিক তারকাও রয়েছেন। তাঁরা বিষয়টি নিয়ে কী মন্তব্য করেছেন, সেগুলো তুলে ধরেছে আই ডিভা অফিশিয়ালের ইনস্টাগ্রাম পেজ।

১. প্রিয়াঙ্কা চোপড়া

প্রিয়াঙ্কা চোপড়া বলেন, ‘আমার সব চাচাতো, মামাতো, খালাতো, ফুফাতো ভাই-বোনের গায়ের রং আমার তুলনায় ফরসা। আমার পরিবারে আমি একা “কালো”। কেননা, আমার বাবার গায়ের রংও তা-ই। আমাকে ছোটবেলা থেকে শুনে আসতে হয়েছে, “কালী, কালী, কালী”। একসময় বাধ্য হয়ে আমিও গায়ের রং ফরসাকারক ক্রিম ব্যবহার করতে চেয়েছি। অথচ গায়ের রঙের সঙ্গে সৌন্দর্যের কোনো সম্পর্ক নেই।’

প্রিয়াঙ্কা চোপড়া

২. শিল্পা শেঠি

ছোটবেলা থেকেই শিল্পা শেঠির আক্ষেপ, ছোট বোন শমিতা শেঠির মতো ‘ফরসা’ নন তিনি! শিল্পা শেঠি যখন ‘বিগ ব্রাদার’ হাউসে প্রতিযোগী হিসেবে অংশ নেন, তখনো তিনি আরেক প্রতিযোগী জেড গুডির মাধ্যমে বর্ণবাদী আচরণের শিকার হন। এ ঘটনা সেই সময় সারা ভারতে ব্যাপক বিতর্কের সৃষ্টি করে। শিল্পাই জয়ী হন। সৌন্দর্য আর ফিটনেসের ক্ষেত্রে শিল্পা শেঠিকে একজন আইডল মানা হয়। শিল্পা বলেন, ‘আমি মা কে প্রশ্ন করেছিলাম, তুমি কেন শমিতাকে “ফর্সা” বানালে আর আমাকে বাদামী? ছোটবেলায় আমি আমার গায়ের রং নিয়ে হীনম্মন্যতায় ভুগতাম। আর এখন আমি আতঙ্কিত হয়ে ভাবি, আমার–ই যদি এই অবস্থা হয়, তাহলে ভারতের অন্যান্য নারীদের কী অবস্থা?’

শিল্পা শেঠি

৩. মালাইকা অরোরা

ভারতের আরেক মডেল বলিউড ডিভা মালাইকা অরোরাকেও বর্ণবাদী আচরণের শিকার হতে হয়েছে। সেসব পেরিয়ে ৪৮-এ দাঁড়িয়েও সৌন্দর্যে সবাইকে চমকে দেন মালাইকা। পার্টিতে মালাইকার আগমনে সব ক্যামেরা তাঁর দিকে ঘুরে যেতে বাধ্য। মালাইকা বলেন, ‘সাদা ভালো, এ ধারণা যেন আমাদের রক্তে মিশে আছে। এই সমাজের নারীদের যেন এর থেকে মুক্তি নেই। আমাদের জন্ম, বেড়ে ওঠা, সামাজিক জীবন, সবকিছুর সঙ্গে বর্ণবাদ জড়িত। এর চেয়ে মারাত্মক দুঃখজনক ব্যাপার আর কীই-বা হতে পারে?’

মালাইকা অরোরা

৪. বিপাশা বসু

বলিউডে সবচেয়ে বেশি বর্ণবাদী আচরণের শিকার হওয়া তারকা আর কেউ নন, বিপাশা বসু। ১৫ বছর বয়সে তিনি যখন একটি সুপারমডেল প্রতিযোগিতার বিজয়ী হন, তখন বেশীরভাগ পত্রিকার শিরোনাম ছিল, ‘কলকাতার কালো মেয়ের মাথায় উঠল বিজয়ীর মুকুট’। ক্ষুব্ধ বিপাশা বসু বলেছিলেন, ‘আমার বিশেষণ “কালো”! আর কত পথ পাড়ি দিলে বর্ণবৈষম্য শেষ হবে? গায়ের রং নিয়ে কথা বলা ফুরাবে? আমাদের যোগ্যতায় আর কত প্রমাণ দিতে হবে?’

বিপাশা বসু