৩ লাখ ৩২ হাজার টাকায় বিক্রি হওয়া ব্যাগটির আসল দাম কত জানলে অবাক হয়ে যাবেন

লাক্সারি ব্যাগ কেনা, সংগ্রহে রাখা একটা মোহ
ছবি: ইনস্টাগ্রাম থেকে

পরেরবার লাক্সারি ব্যাগ কেনার আগে এই প্রতিবেদনটি পড়ুন।

আপনি ভাবছেন এবার টাকা জমিয়ে গুচি, ডিওর, আরমানি বা লুই ভুতোঁর একটি লাক্সারি ব্যাগ কিনবেন? বলা হয়, উচ্চাকাঙ্ক্ষী আর হাই-ফ্যাশনের অনুসারী নারীদের ‘বস্তুগত বেস্ট ফ্রেন্ড’-এর তালিকার প্রথম নামটি ডায়মন্ড। আর দ্বিতীয় অবস্থান রয়েছে লাক্সারি ব্যাগ! তবে এই প্রতিবেদন পড়ার পর আপনি লাক্সারি ব্যাগের দিকে হাত বাড়ানোর আগে দ্বিতীয়বার ভাববেন।

একটি ব্যাগ বিক্রি করেই লাভ রাখা হয় কয়েক লাখ টাকা

৬ হাজারের ব্যাগ বিক্রি হয়েছে ৩ লাখ টাকায়

ইতালির মিলানের গোয়েন্দা পুলিশের একটি দলের তদন্তে উঠে এসেছে যে লাক্সারি ফ্যাশন ব্র্যান্ড ডিওরের একটা ব্যাগ তৈরিতে খরচ হয়েছে মাত্র ৫৭ ডলার বা ৬ হাজার ৮০০ টাকায়। যেখানে ব্যাগটি বিক্রি হয়েছে ২ হাজার ৭৮০ ডলার বা ৩ লাখ ৩২ হাজার টাকায়।

কেবল তাই-ই নয়, ব্যাগটি যে কর্মপরিবেশে তৈরি করা হয়েছে, সেটিও আইএলওর (ইন্টারন্যাশনাল লেবার অর্গানাইজেশন) নীতিমালা ভঙ্গ করে। এমনকি ইন্টারন্যাশনাল এনভায়রনমেন্ট প্রোটেকশন অ্যাক্ট ১৯৮৩-এর নীতিমালার সঙ্গেও সাংঘর্ষিক।  

আরমানির ব্যাগেরও একই বাস্তবতা

১২ হাজারে কেনা ব্যাগ বিক্রি হয়েছে ২ লাখ টাকায়  

আরেক লাক্সারি ফ্যাশন ব্র্যান্ড আরমানির বিরুদ্ধেও উঠেছে একই ধরনের চাঞ্চল্যকর অভিযোগ। তৃতীয় পক্ষের কাছ থেকে ৯৯ ডলারে একটি ব্যাগ কিনেছে আরমানি, আর লোগো বসানোর পর শোরুমে সেটি বিক্রি হয়েছে ১ হাজার ৯০০ ডলারে। মানে তারা ব্যাগটি কিনেছে মাত্র ১২ হাজার টাকায়। আর বিক্রি করেছে ২ লাখ ২৭ হাজার টাকায়!

বেদনাদায়ক কর্মপরিবেশ

তদন্তে উঠে এসেছে, ডিওরের লাক্সারি ব্যাগ উৎপাদন কারখানায় কর্মীরা অমানবিক পরিবেশে দিনে ১৮ ঘণ্টা পর্যন্ত টানা কাজ করেন। কর্মীরা কারখানার ভেতরে স্লিপিং ব্যাগে ঘুমান।

রয়টার্সের প্রতিবেদন অনুসারে, কর্মীদের একটা বড় অংশ চীন থেকে আসা অবৈধ অভিবাসী। তাঁদের অনেকেরই বৈধ কাগজপত্র নেই। দ্রুত সময়ের ভেতর পণ্য উৎপাদনের জন্য পর্যাপ্ত নিরাপত্তাব্যবস্থা পর্যন্ত নেই। হ্যাঁ, এ রকম পরিবেশে তৈরি ব্যাগের দামই কমপক্ষে ১ হাজার ডলার বা ১ লাখ ২০ হাজার টাকা!

কী আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে?

এ তদন্ত অত্যন্ত গোপনীয়তার মধ্যে সম্পন্ন হয়েছে। আর এর বেশির ভাগ ফলাফলই প্রকাশ্যে আসেনি। ডিওর আর আরমানি প্রতিষ্ঠান দুটিকে নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ জরিমানা করা হয়েছে। আর তাদের কর্মপরিবেশসহ বিভিন্ন বিষয়ে আইনি নোটিশ দেওয়া হয়েছে। ১ বছরের ভেতরে এই দুই প্রতিষ্ঠানের সব বেআইনি কার্যক্রমকে আইনের ভেতর নিয়ে আসার জন্য সময় বেঁধে দেওয়া হয়েছে।  


সূত্র: হিন্দুস্তান টাইমস, বিজনেস ইনসাইডার