ফ্যাশনের অলিম্পিক বলে কথা!
প্রতিবছর আলোচনার ঝড় তুলে নিজেকেই যেন নতুন করে ছাপিয়ে যায় মেট গালা।
প্রতিবারের মতো আজ ভোর চারটায় যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কের মেট্রোপলিটন মিউজিয়াম অব আর্টে উঠল মেট গালা ২০২৪-এর পর্দা। সুপারমডেল জিজি হাদিদ যে এবারও চোখ ধাঁধিয়ে দেবেন, তা তো অনুমেয়ই ছিল। এ বছর থিম ছিল ‘স্লিপিং বিউটি: রিঅ্যাওয়েকেনিং ফ্যাশন’। সেটি আবার ১৯৬২ সালে প্রকাশিত ব্রিটিশ ঔপন্যাসিক ও ছোটগল্পকার জে জি ব্যালার্ডের ছোটগল্প ‘দ্য গার্ডেন অব টাইম’ থেকে অনুপ্রাণিত।
সময়ের বাগান থেকে জিজি হাদিদ তুলে নিয়েছেন সাদা জমিনে হলুদ গোলাপ। কাঁধখোলা করসেট ড্রেসে স্তরে স্তরে থ্রিডি মোটিফে হলুদ গোলাপগুলো বসানো হয়েছে। স্কার্টের মতো করে চারপাশে ছড়িয়ে পড়েছে নিচের অংশ। পোশাকটি বানিয়েছে মার্কিন ফ্যাশন হাউস টম ব্রাউন। ৭০ জনের একটা দল মিলে তৈরি করেছে এই পোশাক। পোশাকটি বানাতে সময় লেগেছে ১৩ হাজার ৫০০ ঘণ্টা। মেট গালা শেষে পোশাকটি টম ব্রাউনের স্থায়ী আর্কাইভে সংরক্ষণ করা হবে।
সাবেক মার্কিন ফার্স্ট লেডি মিশেল ওবামার পোশাক তৈরি করে জনপ্রিয়তা পান মার্কিন ফ্যাশন ডিজাইনার টম ব্রাউন। এর আগে পুরুষের লাক্সারি স্যুট তৈরি করে বিশ্বব্যাপী আলোচনায় এসেছিল তাঁর প্রতিষ্ঠান।
ব্রাউন বলেন, ‘মেট গালায় জিজির পোশাক তৈরির দায়িত্ব পাওয়ার মতো ঘটনা সৌভাগ্যবান ফ্যাশন ডিজাইনারদের পেশাজীবনে সাধারণত একবারই আসে। আমি নিজেদের সেরাটা উজাড় করে সেই সুযোগ কাজে লাগাতে চেয়েছি। পোশাকটির পেছনে ২০ জন শিল্পীর একটা দল ৫ হাজার ঘণ্টা সময় দিয়েছে (এর ভেতর নকশা আঁকা, মিটিং, সিদ্ধান্ত গ্রহণের মতো পোশাক তৈরির পূর্বপ্রস্তুতির সময়ও অন্তর্ভুক্ত)। পোশাকটিতে খুবই ছোট ছোট ২৮ লাখ চুমকি, পুঁতি বসানো হয়েছে।’
সাদা পোশাকটিতে কালো পাইপিং করা। গোলাপের ডাল আর পাতাগুলো সবুজ। মেট গালা থেকে ভোগকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে জিজি বলেন, ‘আমার পোশাকে কেবল একটা গোলাপই একটা শিল্প। এই পোশাকটির পেছনে কারিগরেরা যে শ্রম দিয়েছেন, সেটা অবিশ্বাস্য। তাঁদের কাজ নিয়ে আমি গর্বিত।’ জিজি আরও বলেন, ‘মেট গালা আমার বছরের প্রিয় রাত। এটা কেবল রাত না, আমাদের মতো মডেলদের জন্য একটা নিশিকাব্য। আমরা নিজেদের সবচেয়ে ফ্যাশনেবলভাবে তুলে ধরি। নিজের কাজটা সেরাভাবে করি। আর হাসি, আনন্দ, আড্ডায় মেতে উঠি। বিশ্বের সেরা সৃজনশীল ফ্যাশন ডিজাইনারদের মতোই আমার কাছে রাতটি গুরুত্বপূর্ণ।’
জিজি হাদিদের স্টাইলিস্ট মিমি কাটরেল। তিনি ভিক্টোরিয়ান যুগের (১৮৩৭–১৯০১ সময়কাল) ইতালির গোলাপ বাগান থেকে পোশাকটির প্রেরণা পান। মিমির কাছে পোশাকটি মিলিমালিস্ট অথচ সুপার গর্জিয়াস।
জিজির গলায়, কানে ছিল হালকা নকশার হীরার গয়না। হাতের আঙুলে হীরার আংটি, আলগা নখ, লাল ঠোঁট আর চোখে আইশ্যাডোতে সম্পূর্ণ হয়েছে জিজির লুক।