>শীতে অনেক ধরনের পোশাক পরা যায়। ফ্যাশনের জন্য শীত বেশ উপযুক্ত। এসব পোশাকে থাকে নানা রং। শীতের ধূসর প্রকৃতির বিপরীতে পোশাকের উজ্জ্বল রং যেন নিয়ে আসে উৎসবের আমেজ। রঙিন পোশাকে এই শীতে আপনিও হয়ে উঠুন বর্ণিল।
বদলে গেছে মৌসুম। বদল প্রতিদিনের পোশাকেও। শীতের এই সময়ে পোশাকের ধরন ও রঙেও পাওয়া যায় উষ্ণতা। প্রকৃতির রং এখন কিছুটা রুক্ষ হলেও পোশাকের রঙে কিন্তু থাকে উৎসবমুখরতা। শীতকে এ কারণে রঙিন পোশাক পরার মৌসুমও বলা যায়।
শীতকালে রাতের দিকে ঠান্ডার আমেজটা একটু বেশি থাকে। আবার দুপুরের দিকে তা একটু কমই। এ জন্য দুপুরের দাওয়াত বা বিকেলের আড্ডাতে পোশাকের রং কিছুটা ভিন্ন হওয়া চাই—এমনটাই বলছিলেন আইরিসেস ডিজাইনার স্টুডিওর নির্বাহী অংশীদার ও ডিজাইনার নাতাশা হায়াত। ‘দুপুরের ছোট কোনো দাওয়াতে লাল, ম্যাজেন্টা, গোলাপি বা যেকোনো নিয়ন রঙের ডলার, এমব্রয়ডারি বা খারি করা কুর্তা ভালো লাগবে। সে ক্ষেত্রে একটু মোটা বা ভারী সুতি ও হাফ সিল্কের কাপড়ের পোশাক বেশ দৃষ্টিনন্দন দেখাবে। জিনস বা সাদা রঙের খাদির সালোয়ারের সঙ্গে এমন কুর্তা ফ্যাশন ও উষ্ণতা দুই–ই দেবে।’ এমনটাই মনে করেন নাতাশা হায়াত।
শীতের দুপুর বা বিকেলে বেছে নিতে পারেন তিন বা চারটি উজ্জ্বল ও গাঢ় রঙের শেডের নকশার করা পোশাক। কালো, গাঢ় নীল, ঘন সবুজ, একরঙা পোশাকের সঙ্গে স্কার্ফ বা শালের পাশাপাশি ফুলের ছাপা নকশাও ফুটে থাকবে পোশাকে। ডিজাইনাররা জানালেন, প্রকৃতির ধূসরতা কাটাতেই যেন পোশাকের রংঢঙে এত কারসাজি।
ফ্যাশনের দিক বিবেচনার পাশাপাশি শীতের কাপড় হওয়া উচিত এমন, যা প্রতিদিনের ব্যবহার ও যেকোনো অনুষ্ঠানে খুব সহজেই মানিয়ে যায়। বাজার ঘুরে দেখা গেল, শীতে জুট কটন ও সিল্কের ওপর ছাপা নকশার বিভিন্ন ধাঁচের কাটিংয়ের কুর্তা বেশ চলবে। আধুনিকতা ও উষ্ণতা—দুটোই এই পোশাক থেকে পাওয়া সম্ভব। নিয়ন সবুজ, নিয়ন কমলা ও নিয়ন গোলাপি রঙের টপ, কুর্তা, শাড়ি ও আনারকলি যেকোনো অনুষ্ঠান বা প্রতিদিনের ব্যবহারে মানানসই—এমনটাই মনে করেন ডিজাইনার নাতাশা হায়াত।
এদিকে বছরের অন্য সময়ে যে গাঢ় রং একেবারেই পরা হয় না, সে রঙের পোশাকই শীতে দেবে উষ্ণতা—বললেন কে ক্র্যাফটের উদ্যোক্তা ও পরিচালক খালিদ মাহমুদ খান। শীতের কাপড়ে সব থেকে বেশি ব্যবহার করা হয় কালো, গাঢ় নীলের মতো জমকালো রং। তবে রাতের বিয়ে বা যেকোনো উৎসবে কালোর সঙ্গে উজ্জ্বল রং যেমন লাল, মেরুন, গোলাপি, ম্যাজেন্টা, নেভি ব্লু, গাঢ় সবুজ ইত্যাদি রঙের প্রিন্ট বা ভারী কাজ করা পোশাকও এনে দেবে দাওয়াতের অনুভব।
এ ছাড়া এই সময়ে পোশাকে বিপরীত রঙের প্রাধান্যও বেশ দেখা যায়। কালো বা চকলেট রঙের জ্যাকেট, শ্রাগ বা শালের সঙ্গে গাঢ় সবুজ, নীল বা মেরুন রঙের পোশাক ভিন্নতা নিয়ে আসবে। বন্ধুদের আড্ডা, বেড়াতে যাওয়া, ক্লাস অথবা অফিসে এই রঙের পোশাক মানিয়ে যাবে সহজে।
ফ্যাশন হাউস বিবিআনার স্বত্বাধিকারী ও ডিজাইনার লিপি খন্দকার বলেন, শীতে হালকা রঙের পোশাক একেবারেই মানানসই নয়। আবার এক রঙা গাঢ় কাপড়ের পোশাক অনেক সময়ে ফ্যাশনেবল দেখায় না। তাই চেক বা স্ট্রাইপ না হলে ব্লকের কাজ করা রঙিন ও উজ্জ্বল রঙের পোশাক ফ্যাশনের পাশাপাশি উষ্ণ ভাব দেবে। কালো কাপড়ের ওপর গাঢ় নীল, সবুজ, বেগুনি রঙের চেক বা স্ট্রাইপ বেশ ভালো দেখায়। এ ছাড়া হলুদ, কমলা, ম্যাজেন্টা রঙের ব্লকের পোশাকে উষ্ণতার সঙ্গে চলে আসবে সজীবতা। শীতে গাঢ় রঙের খাদি বা হাতের বুননে তৈরি মোটা সুতার কাপড়ও বেশ আরামদায়ক। এই কাপড়ের কটি, শাল, হালকা শীতের লম্বা ও ছোট জ্যাকেট, রঙিন স্কার্ফ শীতের ফ্যাশনে দেখাবে মুনশিয়ানা। এমনকি খাদি বা হাতে বোনা কাপড় দিয়ে চাইলে কামিজ, কুর্তা, শাড়ি বা ব্লাউজ বানিয়ে ফেলতে পারবেন।