বোতামের বাহার

বোতাম একটু ভিন্ন হলে পোশাকে আসবে বৈচিত্র্য। ছবি: নকশা
বোতাম একটু ভিন্ন হলে পোশাকে আসবে বৈচিত্র্য। ছবি: নকশা

বোতাম তো পোশাকের অনুষঙ্গ। একরকম অপরিহার্যই বটে। ছেলেদের শার্টে তো বোতাম থাকেই। মেয়েদের পোশাকে বোতামের ব্যবহারও নানাবিধ। ডিজাইনাররা নিত্যনতুন পোশাক সাজানোর উপায় খুঁজে নেন। পোশাককে সাজাতে বোতামের ব্যবহার নতুন নয়। তবে বোতামের ব্যবহারে বৈচিত্র্য থাকলে তা হয়ে উঠতে পারে নতুনত্ব।

ফ্যাশন ডিজাইনার লিপি খন্দকার বলেন, প্রয়োজনে যেমন একটি পোশাকে বোতাম ব্যবহার করা হয়, আবার পোশাককে নকশায় সমৃদ্ধ করার একটি উপাদানও হতে পারে বোতাম। তবে বোতাম ব্যবহারের কোনো ধরাবাঁধা নিয়ম নেই।

পোশাকের নকশা করার সময়ই মানানসই বোতাম বেছে নেওয়া হয়। তবে অনেক ক্ষেত্রে হয়তো জাঁকজমকপূর্ণ কাপড়ের (যেমন ভারী নকশার এমব্রয়ডারি) তৈরি পোশাকে বোতামের কারুকার্য খুব একটা মানাবে না। আবার হয়তো খুব সাধারণ একটি পোশাকে অসাধারণ কোনো ডিজাইন তৈরি হয় বোতামের বুদ্ধিদীপ্ত ব্যবহারে।

যে কাপড়ে যে বোতাম
কাপড়ের ধরন বুঝে বোতাম বেছে নেওয়া যেতে পারে বলে জানালেন লিপি খন্দকার। আজকাল প্রাকৃতিক উপাদানে তৈরি, যেমন নারকেলের খোলের বোতাম কিংবা সামুদ্রিক খোলসের ( সি-শেল) বোতাম পাওয়া যায়। প্রাকৃতিক উপাদানে কাপড় তৈরি হয়ে থাকলে, সেটি দিয়ে পোশাক তৈরির সময় এ ধরনের প্রাকৃতিক উপাদানের বোতাম ব্যবহার করতে পারেন।

কাপড়ের বোতাম
আবার কাপড়ের সঙ্গে মিলিয়ে কোনো কাপড় দিয়েই বোতাম তৈরি করা যেতে পারে। সাধারণ একটি কাপড়ে শো-বোতাম (দেখা যাবে এমন বোতাম) ব্যবহার করতে চাইলে একটু যত্ন নিয়ে বোতাম তৈরি করা ভালো। এমব্রয়ডারি, ছোট ছোট প্রিন্ট কিংবা বিভিন্ন রকম ভাঁজ ব্যবহার করে তৈরি হতে পারে বোতাম। বোতামের ভেতরে কিছু দিয়ে পেঁচিয়ে গোল করে নেওয়া যায়। অনেক রকম ‘নট’ বা গিঁট দিয়ে বোতাম করা যায়। আবার সাধারণ বোতামের ওপর কাপড় পেঁচিয়ে নিয়েও কাজে লাগাতে পারেন। শুধু নকশাদার বোতাম দিয়েই একটি সাধারণ পোশাককে সুন্দর করে তোলা যায়। জাঁকজমক বোতাম ব্যবহার করতে চাইলে সাধারণ কাপড় (যেমন সুতি) বেছে নিন।

বৈচিত্র্য চাই
নানানভাবে বোতামের ব্যবহারের কথা জানালেন লিপি খন্দকার। হয়তো তিনটি বোতাম বেশ ঘন ঘন বসানো হলো, একটা একটু দূরে। হয়তো একটা বর্গাকার বোতাম, আরেকটা ত্রিভুজাকৃতির বোতাম ব্যবহার করা হলো। মোটকথা, ডিজাইনার মনের খেয়ালে খেলতে পারেন বোতাম নিয়ে ভাবার সময়।

পোশাকের যেকোনো অংশেই বোতাম ব্যবহার করা যেতে পারে। কলার, হাতা বা পকেটে তো বটেই, পোশাকের জমিনেও ডিজাইন হিসেবে বোতাম বসানো যেতে পারে।

বাজারে পাবেন নানান ধরনের বোতাম। কাঠের বোতাম রয়েছে। আরও আছে ধাতব বোতাম। কোনোটির রুপালি রং, কোনোটির তামাটে; কোনোটি হয়তো আনে ‘অ্যান্টিক’ লুক। পাথরের কারুকার্যময় বোতামও মিলবে বাজারে। কোনো বোতামে একটিই বড় পাথর; কোনোটিতে আবার বেশ কতগুলো পাথর দিয়ে নকশা করা। লাল, নীল, হলুদ, টিয়া রঙের ঝকমকে পাথর আছে বোতামে। কোনোটিতে আবার ভেলভেট প্যাঁচানো। কোনোটিতে ব্যবহার হয়েছে ছোট ছোট পুঁতি। কোনোটি গোল, কোনোটি চৌকো, কোনোটি ত্রিভুজ আকৃতির; পাতার মতো আকারও আছে। কোনোটি ছোট, কোনোটি বেশ বড়।

কিনতে চাইলে
রাজধানীর প্রিয়াঙ্গন শপিং সেন্টারে পাওয়া গেল বাহারি বোতামের খোঁজ। কিছু বোতাম শুধুই দেখনদারি বোতাম (শো-বোতাম), কিছু বোতাম আবার সত্যিই কাজের। ঝোলানো বোতামসহ নানান ধরনের বোতাম পাবেন অপরূপ ম্যাচিং সেন্টারে। এ ছাড়া কলি লেইস ম্যাচিং সেন্টার, ভাই-ভাই লেইস হাউস, শুভেচ্ছা লেইস ম্যাচিং সেন্টার, জেসমিন ম্যাচিং সেন্টার, ফাহমিদা লেইস হাউসসহ অন্যান্য দোকানে পাবেন বাহারি বোতাম। ডিজাইনভেদে প্রতিটি বোতামের দাম পড়বে ৩ টাকা থেকে ১২০ টাকা।