লেদার এমন একটি ফ্যাশন অনুষঙ্গ, যা কখনোই পুরোনো হবে না। ফ্যাশনেবল লুক মানেই লেদার আউটফিট। বিশেষত শীতকালে। তাপমাত্রার পারদ নামতে শুরু করলেই গরম জামাকাপড় হয়ে ওঠে নিত্যসঙ্গী। লেদার এই গরম জামার প্রয়োজনীয়তাও মেটাতে পারে।
আবার সোয়েটারের একঘেয়েমি কাটিয়ে আপনাকে দিতে পারে কুল লুক। লেদার জ্যাকেট হোক কিংবা লেদার প্যান্ট, ওয়ার্ডরোবে লেদার কালেকশন থাকলে আপনি হয়ে উঠতে পারেন ফ্যাশনিস্তা। কীভাবে নিজেকে লেদার আউটফিটে করে তুলবেন আকর্ষণীয়, রইল তার আইডিয়া।
কোন লেদার আউটফিটে আপনাকে মানাচ্ছে সবচেয়ে বেশি, তা নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা চলতেই পারে। লেদার শার্ট অথবা পেপলাম টপ ব্যবহার করে দেখুন আপনাকে মানায় কি না। হালকা শীতের ফ্যাশনে এ রকম টপ হতে পারে আপনার প্রথম পছন্দ।
ফ্যাশনে লেদার জ্যাকেটের আবির্ভাব প্রায় ৯২ বছর আগে। তবু এর ট্রেন্ড আজও অমলিন। ‘গডফাদার’খ্যাত অভিনেতা মারলন ব্র্যান্ডো ১৯৫৩ সালে ‘দ্য ওয়াইল্ড ওয়ান’ মুভির মাধ্যমে বিখ্যাত করেন এটি। এরপর গত পঞ্চাশ বছরে ফ্যাশনে কত ট্রেন্ড এল–গেল। কিন্তু লেদার জ্যাকেট থেকেই গেল। ক্ল্যাসিক ব্ল্যাক ছাড়াও এখন বাদামি, লাল, বেগুনি, মেরুন জ্যাকেটের বেশ কদর। শীতে স্টাইলিশ লুক আনতে চাইলে ক্রপড বাইকার জ্যাকেট ব্যবহার করে দেখুন। এ রকম জ্যাকেট সবচেয়ে ভালো লাগে হাই ওয়েস্ট ডেনিম প্যান্ট এবং হালকা টি-শার্টের সঙ্গে। সাধারণ লেদার জ্যাকেট ছাড়াও আপনি সেজে উঠতে পারেন কলারে ফার লাগানো জ্যাকেটে।
শীতে লেদার প্যান্ট আপনাকে করে তুলবে দারুণ আকর্ষণীয়। স্ট্রেইট কাট থেকে স্কিনি ফিট, পছন্দ করুন নিজের সুবিধামতো। এসবে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ না করলে আছে ওয়াইড লেগ এবং হারলেম স্টাইল লেদার প্যান্ট। আর যদি লেদার শার্ট অথবা জ্যাকেট থাকে, তাহলে তো আপাদমস্তক লেদারে আপনি হয়ে উঠতে পারেন দারুণ ফ্যাশনেবল।
টমবয় লুক থেকে একটু নারীসুলভ সাজপোশাক যদি আপনার বেশি পছন্দ হয়, তবে লেদার স্কার্ট খুবই ভালো অপশন। ছোট লেংথের চাপা স্কার্ট অথবা ঘেরওয়ালা স্কার্ট, যেকোনোটিই হতে পারে আপনার স্টাইলের পরিচয়বাহী। এর সঙ্গে পরুন যেকোনো রঙের স্টাইলিশ টপস বা একেবারে সাদামাটা টি–শার্টের সঙ্গে চেক শার্ট।
শুধু জামাকাপড় হলেই তো চলবে না। সাজ সম্পূর্ণ করতে নজর দিতে হবে জুতার দিকেও। নিজেকে আরও স্মার্ট লুক দিতে কিনতে পারেন বিভিন্ন ডিজাইনের লেদার বুট। কাফ লেংথ বুট, অ্যাঙ্কেল বুট, বিলো অ্যাঙ্কেল বুট, কমব্যাট বুট—সব রকমের লেদার বুট যেকোনো ওয়েস্টার্ন স্টাইলের সঙ্গে ভালো যায়।
তবে মনে রাখবেন, লেদারের আউটফিট মানেই শুধু কালো অথবা ব্রাউন হতে হবে, এ ধারণা এখন চলে না। শীতে চারপাশ এমনিতেই একটু ডাল হয়, তাই আপনি বেছে নিতে পারেন একটু উজ্জ্বল রঙের লেদার আউটফিট। সে জন্য বেছে নিন লাল, মেরুন, কমলা, হলুদ, বেগুনি, সবুজ কিংবা গোলাপি রঙের আপনার পছন্দের লেদার স্টেটমেন্ট পিস।
শুধু স্টাইল করলেই চলবে না। নিজের পছন্দের লেদার পিসের বিশেষ যত্নও নিতে হবে। না হলে খুব তাড়াতাড়ি নষ্ট হয়ে যেতে পারে এগুলো। তবে সঠিক পরিচর্যা করলে টিকে থাকবে কয়েক দশক।
লেদারে পানি লাগানো যাবে না। যদি পানি লেগেই যায়, তাহলে ফ্যানের নিচে শুকাতে দিন।
সূর্যের আলোতে লেদারের আউটফিট পরে থাকবেন না বেশিক্ষণ।
লেদার পিস পরার পর শুকনা কাপড় দিয়ে মুছে প্যাডেড হ্যাঙ্গারে ঝুলিয়ে রাখুন শুকনা ঠান্ডা জায়গায়।
শীতের আগে বছরের ৯ মাস আলমারিতে সুতি কাপড় দিয়ে মুড়িয়ে ঝুলিয়ে রাখুন আপনার লেদার পিস। মাঝেমধ্যে বের করে ফ্যানের নিচে রেখে দিন। বিশেষ করে গ্রীষ্মের সবচেয়ে উষ্ণতম দিনগুলোতে।
যেকোনো লেদার আউটফিট কোনোভাবে সরাসরি পরা যাবে না। সব সময় কোনো কিছুর ওপরে পরতে হবে। যেমন টি–শার্টের ওপরে লেদার শার্ট, লেগিংসের ওপরে লেদার প্যান্ট পরুন। কারণ, আমাদের শরীর থেকে যে প্রাকৃতিক তেল নিঃসৃত হয়, তা লেদারে লাগলে এটি ধীরে ধীরে নষ্ট হয়ে যাওয়ার সমূহ সম্ভাবনা থাকে।
লেদার আউটফিট পরে পারফিউম বা হেয়ার স্প্রে লাগানো থেকে বিরত থাকুন।