এক এলাকার বাসিন্দা হওয়ার সুবাদে ইমরানের সঙ্গে আশিকের সম্পর্ক সাধারণ জুনিয়র-সিনিয়রে সীমাবদ্ধ নেই। দুজন একসঙ্গে বাড়ি যান। ক্যাম্পাসে জমিয়ে আড্ডা দেন। অধিকাংশ সময় আড্ডাস্থলটি হয় ভাজাপোড়া শিঙাড়ার দোকান। একদিন শিঙাড়ার দোকান থেকেই ইমরান-আশিক ঠিক করেন, স্ট্রিট ফুডের দোকান দেবেন। আশিকুল ইসলাম জানান, ‘অনেকগুলো স্ট্রিট ফুডের কথা মাথায় এলেও শেষমেশ শিঙাড়াকেই বেছে নিই।’ শিঙাড়া পছন্দ হওয়ার কারণ, এর দাম হবে মাত্র ৩ টাকা, যা শিক্ষার্থীদের জন্য সহজলভ্য।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থী আল ইমরান ও আশিকুল ইসলামের হাত ধরে শুরু হলেও পরে তাঁদের বন্ধু-জুনিয়ররাও উদ্যোগটিতে শরিক হন। তাঁদের মধ্যে রয়েছে একই বিভাগের শফিউল ইসলাম, রিয়ান আহমেদ, নাসিব নেওয়াজ, সজীব আহমেদ, মাহামুদুল হাসান, ব্যাংকিং ও বিমা বিভাগের শিপন ইসলাম ও সাগরচন্দ্র দাস। বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা অনুষদের ইসমাইল হোসেন সিরাজী ভবনের সামনে চপ-শিঙাড়ার স্টলটি দিয়েছেন তাঁরা। ইমরান ও আশিকুল, দুজনে জমিয়েছিলেন ৪০ হাজার টাকা। এই মূলধন দিয়েই শুরু করেন ‘পয়েন্ট থ্রি সিঙ্গারা’।
‘পয়েন্ট থ্রি সিঙ্গারা’ আশিকুলদের শিঙাড়া, চপের দোকানের নাম। আশিকুলের সঙ্গে কথা বলে এহেন নামের ব্যাখ্যা জানা গেল। সাধারণ শিঙাড়া থেকে এই শিঙাড়ার আকৃতি অনেক ছোট, যাকে ‘পয়েন্ট’ বা ভগ্নাংশ বলা যায়। আর ‘থ্রি’ দামকে নির্দেশ করে। এভাবে ভাজাপোড়ার দোকানটি হয়ে গেল ‘পয়েন্ট থ্রি সিঙ্গারা’। নামে শুধু শিঙাড়া থাকলেও পাশাপাশি চপও বিক্রি হয়।
বর্তমানে তিন টাকা মূল্যে শিঙাড়া ও পাঁচ টাকায় চপ বিক্রি করছেন তাঁরা। বিক্রিও হচ্ছে দেদার। মাসে আড়াই থেকে তিন লাখ টাকা আয় করছেন। জনপ্রিয় এই শিঙাড়া, চপের বিশেষত্ব আসলে কোথায়? আশিকুল জানালেন, তুলনামূলক কম দাম এবং বোম্বাই মরিচের ব্যবহার সাফল্যের চাবিকাঠি। তিনি উল্লেখ করেন, বোম্বাইয়ের ঝাল ও ঘ্রাণ আমাদের শিঙাড়ার বিশেষত্ব। রাজশাহীতে এ রকম শিঙাড়া কোথাও পাওয়া যায় না।
চপ, শিঙাড়ার মতো আরও কিছু খাবার নিয়ে কাজ করার ইচ্ছা তাঁদের রয়েছে, যার স্বাদ হবে ব্যতিক্রমী।