বইমেলায় কাজ করতে গিয়েই ‘আইডিয়া’টা মাথায় এসেছিল

করোনার ঘরবন্দী সময়ে  ‘একটা কিছু করা’র তাগিদ থেকে ব্যবসা শুরু করেছিলেন অনেকে। কেউবা নিতে চেয়েছেন নতুন এক চ্যালেঞ্জ। করোনাকাল যাঁদের উদ্যোক্তা বানিয়েছে, তাঁদের মধ্য থেকেই কয়েকজন শিক্ষার্থীর সঙ্গে কথা বলেছিলাম আমরা। এখনো শক্ত হাতে ব্যবসার হাল ধরে আছেন তাঁরা। পড়ুন জগন্নাথের শিক্ষার্থী আবদুল্লাহ আল মাহবুবের কথা।

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা বিভাগের শিক্ষার্থী আবদুল্লাহ আল মাহবুব

সালটা ২০১৯। খণ্ডকালীন চাকরির জন্য অমর একুশে বইমেলায় যুক্ত হন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা বিভাগের শিক্ষার্থী আবদুল্লাহ আল মাহবুব। এত বইপ্রেমী একসঙ্গে দেখে একরকম অবাকই হয়েছিলেন তিনি। যাঁরা বইমেলায় যাওয়ার সুযোগ পায় না, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তাঁদের আক্ষেপও মাহবুব লক্ষ্য করেছিলেন সে বছর। এসব দেখে তাঁর মাথায় একটি উদ্যোগের ভাবনা খেলে যায়। বইমেলা শেষ হওয়ার আগেই শুরু করেন ‘বই বাজার শপ’ নামে একটি অনলাইন বইয়ের দোকান। উদ্দেশ্য—ঢাকার বাইরের পাঠকদের কাছে বইমেলার দামেই বই পাঠানো। শুরুতে মোটামুটি সাড়া পেলেও একাডেমিক ব্যস্ততার কারণে উদ্যোগটা পরে আর ধরে রাখতে পারেননি মাহবুব।

কিন্তু করোনার কারণে যখন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো দীর্ঘ সময়ের জন্য বন্ধ হয়ে গেল, উদ্যোগটা নিয়ে নতুন করে ভাবতে শুরু করেন তিনি। বাসায় হাত গুটিয়ে বসে না থেকে পুরোদমে শুরু করেন ‘বই বাজার শপ’–এর কার্যক্রম। সবকিছু অনলাইননির্ভর হওয়ায় দ্রুতই জনপ্রিয়তা পায় বই বাজার শপ। এখন ঢাকায় একটা ছোট্ট অফিস নিয়ে ব্যবসার কার্যক্রম পরিচালনা করছেন মাহবুব। নিজের প্রতিষ্ঠানে পাঁচজনের কর্মসংস্থানও করেছেন তিনি।

অনলাইনে তো আরও অনেক বই বিক্রির প্রতিষ্ঠান আছে, সেগুলোর মধ্যে মাহবুব কীভাবে তাঁর উদ্যোগটিকে আলাদাভাবে ক্রেতাদের সামনে তুলে ধরলেন? তিনি বলেন, ‘আমি পাঠকের চাহিদা বুঝে সব সময় দাম ঠিক করতে চেষ্টা করেছি। দেখা গেছে একই ক্রেতা বারবার আমার কাছে ফিরে এসেছে। সেবা দিয়ে খুশি করতে পেরেছি বলেই তো আমার কাছে এসেছেন।’

শুধু ব্যবসা নয়, সামাজিক দায়বদ্ধতার জায়গা থেকে নিজ এলাকায় গণপাঠাগার স্থাপনের স্বপ্ন দেখেন মাহবুব। ভবিষ্যৎ ভাবনা প্রসঙ্গে বলেন, ‘বই বাজার শপকে দেশের অন্যতম স্বনামধন্য বইয়ের দোকান হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে চাই। সারা দেশের সাধারণ মানুষের কাছে সুলভ মূল্যে বই পৌঁছে দিতে চাই। পাশাপাশি নিজ জেলা ঝিনাইদহে একটি গণপাঠাগার স্থাপন করতে চাই।’